দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন ও আইনের শাসন by গাজীউল হাসান খান

বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে ঘুষ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাস্তানি, ধর্ষণ ও রাজনৈতিক সন্ত্রাসসহ দুর্বৃত্তায়ন পর্যায়ক্রমে এখন এক অসহনীয় অবস্থায় এসে ঠেকেছে। যানজট, রাস্তাঘাটসহ যোগাযোগব্যবস্থার অবনতি কিংবা দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ছাড়াও ওপরে উল্লিখিত কারণেই মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কিংবা জনজীবন থেকে শান্তি, স্বস্তি ও নিরাপত্তাবোধ বলতে গেলে একরকম উধাও হয়ে গেছে। এ অবস্থা এক দিনে সৃষ্টি হয়নি।
যদি প্রশ্ন করা হয়, কবে থেকে এ সামাজিক অধঃপতন ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন শুরু হয়েছে, তাহলে ষাটের দশকের একজন কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা (পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন) হিসেবে বলব, অবশ্যই স্বাধীনতার পর থেকে। পাকিস্তান আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হলগুলোতে মাঝেমধ্যে যে মারামারি ও মাস্তানি চলত, তা সীমিত থাকত আইয়ুব-মোনায়েম সমর্থিত ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ফ্রন্ট (এনএসএফ) ও বিশেষ করে ছাত্র ইউনিয়নের মধ্যে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সার্বিক অবকাঠামোসহ শিল্প-কারখানা এবং অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছিল। তাতে যুবগোষ্ঠীসহ শ্রমজীবী মানুষ বেকার হয়ে পড়ে। কর্মসংস্থানের অভাব কিংবা বেকারত্ব ও দারিদ্র্যের কারণে, বিশেষ করে ছাত্র ও যুবসমাজ বাধ্য হয়ে ক্রমেই রাজনীতিকদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। দিনে দিনে সে অবস্থা আরো জটিল আকার ধারণ করতে থাকে। স্বাধীনতার পর কতিপয় ছাত্র ও যুবক নেতা-কর্মী রাতারাতি 'ব্রিফকেস ব্যবসায়ী' বনে গেলেও ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের দুর্গতি কাটেনি। তখন থেকেই ক্রমশ অভ্যুদয় ঘটে বিভিন্ন 'গডফাদারের', যারা নিজ নেতৃত্ব ও রাজনৈতিকভাবে দলের ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য বেকার যুবক ও ছাত্রদের বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা শুরু করে। বঙ্গবন্ধু হত্যা ও ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সামান্য বিরতি দেখা গেলেও নতুন মেরুকরণ প্রক্রিয়ায় পরে তা আরো ব্যাপক হয়ে ওঠে। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসীন হয়ে স্থানীয় চাঁদাবাজ ও মাস্তানদের অনেককে বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে পাঠিয়ে দিলেও তাদের ব্যাপক অংশ দেশেই থেকে যায়। দেশের আয়তন ও সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা তখনো ছিল অধিক এবং অপরিকল্পিত। তাই কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা পরিবর্তন সাধিত হলেও বেকারত্ব ও দারিদ্র্যের অবসান ঘটেনি। জিয়া-পরবর্তী রাজনীতিতে দেখা দেয় 'ইমদুদের আবির্ভাব'। তখন থেকে ক্ষমতায় যাওয়ার অন্যতম বাহন হিসেবে প্রায় সব দলই দেশব্যাপী ছাত্র ও যুব সম্প্রদায়কে অধিকভাবে ব্যবহার করতে থাকে। তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় অবৈধ অস্ত্র ও কালো টাকা। স্থানীয়ভাবে ছাত্র ও যুবগোষ্ঠী শুরু করে মাস্তানি, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাস ও অসামাজিক কার্যকলাপ। সেখান থেকে পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সিটি করপোরেশন পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে আবির্ভাব ঘটে 'থ্রি স্টার' ও 'ফাইভ স্টার' টেন্ডারবাজদের। পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত অফিস ও সংস্থায় শুরু হয় ব্যাপক ঘুষ ও দুর্নীতি। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে শুরু করে রাজউক, সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা, পুলিশ বিভাগ, এমনকি নিম্ন-আদালতে পর্যন্ত ঘুষ-দুর্নীতি অনেকটা মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়ে। চাঁদাবাজি, ঘুষ ও দুর্নীতি বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। ফলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি, উভয় সরকারের আমলেই পর পর পাঁচবার বাংলাদেশ দুর্নীতিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়নশিপের গৌরব অর্জন করে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্য পর্যায়ে দুর্নীতির লাগাম নাকি অনেকখানি টেনে ধরা হয়েছে, যা প্রমাণ করা সাধারণ কোনো কাজ নয়। ডলার-পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি কাঁচাবাজারের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিকেও হার মানিয়েছে। এত বৈদেশিক মুদ্রা কারা কেনে এবং সেগুলো কোথায় যাচ্ছে_কেউ জানে না। অর্থমন্ত্রী এ ব্যাপারে একবার একটু আভাস দিয়েও আবার 'খামোশ' হয়ে গেছেন। কিন্তু অবিলম্বে ডলারসহ বৈদেশিক মুদ্রার মূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে না পারলে তৈরি পোশাকসহ বাংলাদেশ অনেক কিছুরই বাজার হারাবে।
ছাত্রলীগ কর্মীদের আক্রমণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র জুবায়ের আহমেদের মৃত্যুর সাম্প্রতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে দেশব্যাপী জনমনে এক চরম আতঙ্ক, ক্ষোভ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েই চলেছে তারা। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা যে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ শুরু করেছে, তাতে থমকে গেছে এ সংগঠনটির সব সাংগঠনিক কার্যক্রম। সংবাদপত্রের বিভিন্ন রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়েছে, সংগঠনটিতে নতুন নেতৃত্ব এসেও বদলায়নি তাদের সন্ত্রাসী ও অসামাজিক কার্যকলাপ। তাদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের মতো ঘটনা ঘটে চলেছে একের পর এক। বলা হচ্ছে, সরকারের জন্য আবারও বিষফোড়া হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগ। এই যদি দেশের 'সোনার ছেলেদের' কর্মকাণ্ড হয়, তাহলে এ দেশের ভবিষ্যৎ কী? এগুলো ভেবে দেশের সাধারণ মানুষ কেউ সুখে নেই। স্বস্তি নেই কারো। অভিযোগ করা হচ্ছে, "মুষ্টিমেয় কিছু সুবিধাবাদী মানুষ সরকারের আনুকূল্যে ও রাজনৈতিক সুবিধা লাভ করে সুখের তিনটি বছর কাটালেও সরকারি দলের ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা-কর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও তৃণমূল পর্যায়ে বিস্তৃত লাখো লাখো 'মুজিব অন্তঃপ্রাণ' মানুষ কোনো বিবেচনায়ই সুখে নেই।" এসব ঘটনায় প্রবাসী বাংলাদেশি এবং এমনকি বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমজীবী মানুষও দেশ ও সরকার সম্পর্কে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে।
ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতাও সম্প্রতি উক্তি করেছেন যে দেশে গণতন্ত্র মানে আনুগত্যের চর্চা। দলীয় প্রধানকে যে কৌশলেই হোক সন্তুষ্ট রাখতে পারলে বিভিন্ন পদ-পদবি কিংবা নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়াও অসম্ভব নয়। দুর্নীতি করেও স্বপদে বহাল থাকা যায়। মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগসহ বিভিন্ন বিতর্ক থাকা সত্ত্বেও তাঁকে বরখাস্ত করা হয়নি। সরিয়ে দেওয়া হয়েছে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে। অথচ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের অগ্রাধিকারের মধ্যে ছিল দেশ থেকে সন্ত্রাস ও দুর্নীতি উচ্ছেদ এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা। তা ছাড়া বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করা। কিন্তু এখন তার সঙ্গে আরো যুক্ত হয়েছে গুম ও গুপ্তহত্যা। একজন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীর মতে, 'সরকারের কাছে বিরোধী দল মানে প্রতিপক্ষ, প্রতিযোগী নয়, অংশীদার তো নয়ই। তাদের কাছে ক্ষমতা মানেই বিরোধী শিবিরকে দমন-পীড়ন আর নির্যাতনের অধিকার। যা ঘটে বিএনপির আমলে, অনেকটা একই ঘটনা ঘটে আওয়ামী লীগের আমলে।' অথচ ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসন পাওয়া আওয়ামী লীগের কাছে দেশের মানুষ চেয়েছিল এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন। সন্ত্রাস-দুর্নীতি উচ্ছেদের পাশাপাশি বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করা এবং অতিদ্রুত গুম ও গুপ্তহত্যার সূত্রগুলো খুঁজে বের করা। দলমত-নির্বিশেষে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অত্যন্ত কঠোর ও আন্তরিক হওয়া। এসব নিয়ে নিজের ঘরেই আওয়ামী লীগ এখন সমালোচনার তীরে ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার কারণে কৃষিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্যগুলো ম্লান হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় তাদের হাতে আছে আর মাত্র দুই বছর। সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে দেশকে অনেকাংশে মুক্ত করার জন্য আওয়ামী লীগ প্রশংসিত হয়েছে। তার পাশাপাশি তাকে ছাত্রলীগসহ দলের বিভিন্ন অংশের সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ করে কঠোর হাতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আওয়ামী লীগের জন্য এর কোনো বিকল্প নেই। বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়া বলেছেন, এবার ক্ষমতাচ্যুত হলে আবার ক্ষমতায় আসতে আওয়ামী লীগের ৪০ বছর লাগবে। এ বিষয়টি দলীয় স্বার্থেই আওয়ামী লীগকে হয়তো গভীরভাবে চিন্তা করে দেখতে হবে।
চট্টগ্রামের মহাসমাবেশে বিএনপিনেত্রী বেগম জিয়া বলেছেন, তাঁরা ক্ষমতায় গেলে এ দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করবেন। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে তাঁর গত সরকারের আমলে যাঁরা দুর্নীতি ও লুটপাটের জন্য ব্যাপকভাবে চিহ্নিত হয়েছিলেন, তাঁরা এখনো দলের প্রথম সারিতে বহাল তবিয়তে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। কাউকে বহিষ্কার করেও আবার ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী হওয়ার আগে বিএনপি নেতাদের মধ্যে যাঁদের বাবার একটি ভালো বসতভিটা ছিল না, তাঁরা এখন ঢাকাসহ যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে দামি দামি বাড়িঘরসহ বিভিন্ন সম্পদের মালিক। দল সেগুলো খতিয়ে না দেখেই নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে নেতৃত্ব গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছে বলে আওয়ামী লীগ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে যেখানে অনেক যোগ্য প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পাননি সেখানে মেধাবীদের নিয়ে শক্তিশালী সরকার ও নিরপেক্ষ প্রশাসন গড়ে তোলার ঘোষণা নেহাত হাস্যকর বলে কয়েকজন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা অভিযোগ করেছেন। তাঁরা বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আনীত দুদকের দুর্নীতির মামলাগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে খালেদা জিয়া অতীতের বিভিন্ন ভুলত্রুটির জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। এবার ক্ষমতায় আসার আগে আওয়ামী লীগের অতীতের বিভিন্ন ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন শেখ হাসিনাও। কিন্তু অতীতের ভুল থেকে তিনি কোনো শিক্ষা নিয়েছেন বলে মনে হয় না। তাহলে ছাত্রলীগসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের অতীত সন্ত্রাস-দুর্নীতি, অপরের সম্পত্তি জবরদখলসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপের কথা তিনি ভুলতেন না এবং এবার তাঁর শাসনামলের প্রথম থেকেই তিনি সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপ থেকে তাদের বিরত রাখার জন্য কঠোর হতেন। তা ছাড়া শেয়ারবাজারসহ অতীতে তাঁর সরকারের শাসনামলে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়গুলোর ব্যাপারে হুঁশিয়ার থাকতেন। তাই এই ব্যাপারে বিএনপিনেত্রীকে এখন থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে অতীতের কোনো ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে।
বিএনপির বিরুদ্ধে দেশের কয়েকটি পত্রিকা এবং বিশেষ করে কয়েকজন বুদ্ধিজীবী অভিযোগ তুলেছেন গত তিন বছর নেতিবাচক রাজনীতির বাইরে যেতে না পারার জন্য। আর এ ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান অভিযোগটি হচ্ছে সংসদ বর্জন করার ব্যাপারে। এটি একটি সংগত অভিযোগ। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্ব না করা ঠিক নয়। ক্ষমতাসীন মহাজোটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের ওপর রাগ করে সংসদকে অকার্যকর করার চেষ্টা অবান্তর। বরং নিজেদের বলেই সংসদকে কার্যকর রাখা গণতান্ত্রিকব্যবস্থায় বিরোধী দলের একটি অন্যতম দায়িত্ব। সংসদ বর্জন করে কোনো সরকারের পতন ঘটানো যায় না। এ কথা ঠিক যে গত তিন বছরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনো গুণগত পরিবর্তন আসেনি। চলেছে শুধু নিছক সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন। এটি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি_উভয় দলের বিগত দিনের রাজনীতিরই যেন প্রতিফলন। এ দুটি দলের মধ্যে অভ্যন্তরীণভাবে গণতন্ত্র চর্চা কতটুকু হয় তা তারাই ভালো বলতে পারবে। তবে যেকোনো দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ নীতিনির্ধারকদের মতামতের ভিত্তিতেই দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। নতুবা স্বৈরতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র ও বর্তমান অরাজক পরিস্থিতি থেকে গণতন্ত্র কখনো মুক্তি পাবে না। কখনো আইনের শাসন কিংবা সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে না। আমাদের রাজনীতিকরা যদি দেশ ও জনগণের স্বার্থে রাজনীতি করেন, তবে এ কথাগুলো তাঁদের বুঝতে হবে। লন্ডন-১৩.০১.২০১২
লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক

No comments

Powered by Blogger.