খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর হুকুমে এই মামলা : ফখরুল

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আগামী নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই মামলার কোনো ভিত্তি নেই। প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক ও দুদকের আইনজীবীরা বলেছেন, কোনো অবস্থাতেই এ মামলা হয় না। কেবল আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়া যাতে অংশ নিতে না পারেন সে জন্য


প্রধানমন্ত্রীর হুকুমেই এ মামলা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে তেজগাঁও স্টেশন রোডে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে মির্জা ফখরুল এ অভিযোগ করেন। ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) ভাগ ও দলের ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকার ওপর হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত পাঁচ দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে গতকাল বেগম জিয়া কোর্টে গিয়েছিলেন জামিন নিতে। বাংলাদেশের তিন তিন বারের প্রধানমন্ত্রীর কোর্টে গিয়ে জামিন আনার ঘটনা এটিই প্রথম।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট কোনো রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নয়। আমরা যাঁরা বিএনপিকে ভালোবাসি তাঁদের টাকা দিয়ে এ চ্যারিটেবল ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। ট্রাস্টের নামে জমি কেনা হয়েছে। জমি বেশি দামে কিনেছে কি না তা বুঝবে যিনি ক্রেতা তিনি। এতে সরকারের কী আসে-যায়? তারপরও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই মামলা দেওয়া হয়েছে। আট বছর আগের মামলায় তারেক রহমানকে জড়ানো হয়েছে একই কারণে। কিন্তু মানুষ এত বোকা নয়।'
মির্জা ফখরুল বলেন, 'এই সরকার দুটি কাজ খুব ভালো পারে। একটি হলো যত পারো তাড়াতাড়ি লুট করো। আর দ্বিতীয়টি হলো বিরোধীদলকে দমন করা।' তিনি বলেন, এত সব করেও তারা (সরকার) আস্থা পাচ্ছে না। নির্বাচনে জেতার জন্য সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তুলে দিয়েছে, কারণ তারা জানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তাদের সব জামানত বাতিল হয়ে যাবে। সরকার জনগণ ও রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, কেউ যদি আইন ভঙ্গ করে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করবে, এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু পুলিশ বেষ্টনীতে ঢুকে সাদেক হোসেন খোকার মতো একজন জনপ্রতিনিধিকে ছুরিকাঘাত করায় এটিই প্রমাণ হয়েছে সরকার জনগণ ও রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
ফখরুল আরো বলেন, সরকার জনগণের কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। নির্বাচনের আগে ঘরে ঘরে চাকরি, বিনা পয়সায় সার, ১০ টাকা কেজি চাল দেওয়ার কথা বলেছিল। এখন চাল ৫০ টাকা, ঘরে ঘরে চাকরির বদলে চাকরিচ্যুতি, বিনা পয়সায় সারের জায়গায় এখন তিনগুণ মূল্যে সার কিনছে কৃষক।
মির্জা ফখরুল বলেন, কাজ না পেয়ে তরুণরা মা-বোন ও স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছিল। কিন্তু এ সরকারের দুর্নীতিবাজ লোকেরা ৩৫ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর এক লাখ কোটি টাকা লুট করে নিয়েছে। পঙ্গু বানিয়ে দিয়েছে দেশের অর্থনীতিকে।
সাধারণ মানুষ এই মুহূর্তে সরকারের পতন চায় দাবি করে ফখরুল বলেন, এদের একটি দিন ক্ষমতায় থাকা মানে দেশের ক্ষতি। যতদ্রুত সম্ভব এই সরকারকে সরাতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা বিএনপির সভাপতি সাহবুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবদুস সালাম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নীরব, কমিশনার কাইউম, কমিশনার মজিদ, কমিশনার মুজিব, আরিফ প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.