রংপুরের ছয়ে তিন-তিন by আরিফুল ইসলাম

আগের ম্যাচে ১২২ রান করেও ৩৩ রানে জয়। কাল ঠিক ওই একই রান করে ৫ উইকেটে হার। আগের চার ম্যাচেও এমন অদ্ভুত সামঞ্জস্য। ৩৫ রানের হারে টুর্নামেন্ট শুরু, পরের ম্যাচে ৬ উইকেটের জয়।
৭ রানের জয়ের পিঠে এল ৯ রানের হার। রংপুর রাইডার্স যেন ধারাবাহিকভাবে অধারাবাহিক। অধিনায়ক আবদুর রাজ্জাক এমন ওঠা-নামার প্রশ্নে হয়ে গেলেন দার্শনিক, ‘ক্রিকেট খেলাটাই এমন। আমরা তো প্রতি ম্যাচই জিততে নামি। কিন্তু কখনো হারব, কখনো জিতব। এটাই ক্রিকেট!’
৬ ম্যাচে ৩ জয়, ৩ হার। রাজ্জাকের কাছে ক্রিকেট তাই কখনো জয়, কখনো হার। মুশফিকুর রহিমের কাছে হয়তো ক্রিকেট মানে টানা জয়ের ফাঁকে একটি-দুটি হার! অন্তত এই টুর্নামেন্টে। টানা পাঁচ জয়ের পর প্রথম পরাজয়ের স্বাদ আগের ম্যাচে। কাল আবার জয়ের ধারায় সিলেট রয়্যালস।
২৯ বলে অপরাজিত ৪৫ করে ম্যাচসেরা নাজমুল হোসেন মিলন। তবে সিলেটের জয়ের নায়ক নাজমুল একা নন। প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেওয়ার পর শেষ দুটি উইকেটও নিয়ে ডোয়াইন স্মিথ মুড়ে দিয়েছেন রংপুরের লেজ। ৩ উইকেট নিয়েও কাজ শেষ মনে করেননি, ব্যাট হাতে ওপেন করতে নেমে ২১ বলে ৭ চারে ৩১। ম্যাচসেরা হতে পারতেন সোহাগ গাজীও। রংপুরের অবিশ্বাস্য ধসের শুরু তো তাঁর হাত ধরেই। হুমকি হয়ে ওঠা দ্বিতীয় উইকেটজুটি ভেঙেছেন ক্যামেরন বোরগাসকে ফিরিয়ে। পরের ওভারে টানা দুই বলে তুলে নিলেন বিপজ্জনক কেভিন ও’ব্রায়েন ও টানা ব্যর্থ ইমরুল কায়েসের বদলি সৈকত আলীকে। রংপুর আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি, ১ উইকেটে ১০১ রান থেকে গুটিয়ে গেল ১২২ রানে!
অথচ একসময় মনে হচ্ছিল ১৫০-১৬০ হয়ে যাবে অনায়াসেই। ৩৮ রানের উদ্বোধনী জুটির পর দ্বিতীয় উইকেটে ৬৩ রানের জুটি গড়েন শামসুর-বোরগাস। আসরের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনটি ফিফটি করলেন শামসুর রহমান। ১৫তম ওভারে সোহাগের বলে মমিনুলের দারুণ এক ক্যাচে এই জুটি ভাঙার পরই রংপুরের সর্বনাশের শুরু। ২১ রানে নেই শেষ ৯ উইকেট! প্রথম তিন ব্যাটসম্যান মিলে করেছেন ৯৭, পরের আট ব্যাটসম্যান মিলে ১৫!
ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে থাকা পল স্টার্লিংয়ের বদলে কাল শিবনারায়ণ চন্দরপলকে সুযোগ দিয়েছিল সিলেট। কিন্তু গায়ানিজ ব্যাটসম্যানকে ১১ রানেই ফেরান বারবাডিয়ান ফিদেল এডওয়ার্ডস। তবে আরেক বারবাডিয়ান স্মিথের সৌজন্যে উড়ন্ত সূচনাই পায় সিলেট। চতুর্থ ওভারে শরীফকে টানা পাঁচ চার মারেন স্মিথ। নাসির-এডওয়ার্ডসদের বোলিং ম্যাচটাকে জিইয়ে রেখেছিল। তবে নাজমুলের পাঁচ চার, এক ছয়ের ইনিংসে জয় শেষ পর্যন্ত সহজেই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
রংপুর রাইডার্স: ১৯.৩ ওভারে ১২২ (শামসুর ৫২, হায়াত ১৭, বোরগাস ২৮, নাসির ৫, কেভিন ও’ব্রায়েন ০, সৈকত ০, নিয়াল ও’ব্রায়েন ৩, রাজ্জাক ০, শরীফ ৬, এডওয়ার্ডস ০, তাপস ১*; সোহাগ ৩/২০, স্মিথ ৩/২৩, ন্যানেস ২/১৮, নবী ১/১৪)। সিলেট রয়্যালস: ১৯.৩ ওভারে ১২৬/৫ (স্মিথ ৩১, চন্দরপল ১১, মমিনুল ১, মুশফিক ১৭, নবী ৬, নাজমুল মিলন ৪৫*, চিগুম্বুরা ১০*; নাসির ২/১৯, এডওয়ার্ডস ১/২২, রাজ্জাক ১/২৪, তাপস ১/২৫)।
ফল: সিলেট রয়্যালস ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নাজমুল হোসেন মিলন।

No comments

Powered by Blogger.