দুই ব্যাংকের ৪৬৫ কোটি টাকা মেরে দিয়ে বিসমিল্লাহ টাওয়েলস হাওয়া by শেখ শাফায়াত হোসেন

বেসরকারি খাতের প্রাইম ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংক থেকে ৪৬৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে সটকে পড়েছেন বিসমিল্লাহ টাওয়েলস নামে একটি গ্রুপের মালিকরা। কুমিল্লা ও ঢাকার আশুলিয়ায় এ প্রতিষ্ঠানের কারখানাগুলো এখন প্রায় পরিত্যক্ত। বেতন না পেয়ে শ্রমিকরা কারখানায় আসা বন্ধ করে দিয়েছেন।
রাজধানীতে প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের কেউ বসছেন না। তবে কুমিল্লায় গ্রুপের মদের দোকানটি চালু আছে।
প্রিমিয়ার ব্যাংক ৫৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিসমিল্লাহ টাওয়েলস গ্রুপের চেয়ারম্যান নওরীন হাসিব ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ঋণ-সংক্রান্ত অনিয়মের কারণে ব্যাংকটির মতিঝিল শাখার ছয় কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে এতে। গ্রুপটি প্রাইম ব্যাংকের মতিঝিল শাখা থেকেও নিয়েছে ৪০৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। ঋণ প্রদানে অনিয়মের প্রমাণ পেয়ে ব্যাংকের মতিঝিল শাখা ও প্রধান অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনদল। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রাইম ব্যাংক।
৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মতিঝিল থানায় গত ২০ জানুয়ারি প্রিমিয়ার ব্যাংকের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বি এম ফরমান আলী মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'প্রধান দুই আসামি নওরীন হাসিব ও খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরী দেশে নেই বলে আমরা জানতে পেরেছি। তবে এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁরা দেশেই লুকিয়ে আছেন কি না, সে বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এমন হলে, তাঁরা যাতে কোনোভাবেই দেশ থেকে বের হতে না পারেন, সে জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে জানানো হচ্ছে।' এ মামলায় ব্যাংকটির ছয় কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে। মামলার ৪ নম্বর আসামি মতিঝিল শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক শাহীনুর রহমান ছয় দিনের রিমান্ড শেষে এখন জেলহাজতে রয়েছেন। অন্য আসামিদের কেউ কেউ জামিনে আছেন।
ফরমান আলী জানান, জিজ্ঞাসাবাদে শাহীনুর দাবি করেছেন, তিনি নিয়ম মেনেই বিসমিল্লাহ টাওয়েলস গ্রুপকে ঋণ দিয়েছেন। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, অনিয়ম করেই ওই ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দেওয়া হয়।
২০ জানুয়ারি মামলা দায়েরের আগে শাহীনুর রহমানসহ ব্যাংকটির তিন কর্মকর্তাকে প্রধান কার্যালয়ে (বনানীর ইকবাল
সেন্টার) কয়েক দিন ধরে আটকে রাখা হয়। সে সময় তাঁদের নির্যাতন করা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে।
ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংকের মতিঝিল শাখা থেকেও বিসমিল্লাহ টাওয়েলস গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান আলপা কম্পোজিট টাওয়েলস লিমিটেড, বিসমিল্লাহ টাওয়েলস লিমিটেড ও হিন্দোল ওলী টেক্সটাইলস লিমিটেড ৪০০ কোটিরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে বেরিয়ে এসেছে। তবে এ বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের কোনো বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। কয়েক দিন ধরে প্রাইম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে এবং মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এহসান খসরুর সাক্ষাৎ বা তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বুধবার ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে গেলে অভ্যর্থনায় থাকা এক কর্মী জানান, এমডি দপ্তরে নেই। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার মতো কোনো কর্মকর্তাও অফিসে নেই।
মামলা হওয়ার পর থেকে নওরীন হাসিব ও সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরী আর গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে (লেভেল-৯, ডিকে টাওয়ার, ৯৪ বীর-উত্তম সি আর দত্ত সড়ক) আসেননি। এখন অফিস চালাচ্ছেন পরিচালকরা।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের পলাশবাড়ী এলাকায় বিসমিল্লাহ গ্রুপের মালিকানাধীন আলপা কম্পোজিট টাওয়েলস লিমিটেডের দুটি ইউনিট এখন আছে নিরাপত্তাকর্মীদের পাহারায়। তাঁরা জানান, এখন কাজের চাপ কম থাকায় শ্রমিকদের উপস্থিতি কম। কর্মকর্তারাও আসেন না।
কুমিল্লার বিসিক শিল্পনগরীতে বিসমিল্লাহ টাওয়েলসের সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলা হয়েছে। হিন্দোল ওলী টেক্সটাইলে উৎপাদন বন্ধ বলে জানান নিরাপত্তাকর্মীরা। এ প্রতিষ্ঠানের আরো দুটি কারখানাও বন্ধ। তবে শহরের কাপড়িয়াপট্টিতে তাঁদের মদের দোকান 'নাদের ট্রেডিং অ্যান্ড কোং' খোলা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, প্রাইম ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় গত ২০ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ পরিদর্শন চালায়। এতে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখার আইবিপি-সংক্রান্ত কিছু বিল মেয়াদোত্তীর্ণ বলে ধরা পড়ে। পাশাপাশি বিসমিল্লাহ টাওয়েলস লিমিটেড ও আলপা কম্পোজিট টাওয়েলসের কিছু অনিয়মও দেখতে পায় দলটি। এ বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে ওই দিনই চিঠিও দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রাইম ব্যাংকের মতিঝিল শাখা কর্তৃক বিসমিল্লাহ টাওয়েলস গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠান বিসমিল্লাহ টাওয়েলস ও মেসার্স আলপা কম্পোজিটের এফডিবিপি (ফরেন ডিমান্ড বিল পারচেজ) খাতে দেওয়া হয়েছে ৫৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা (যথাক্রমে ২৮ কোটি ৭১ লাখ ও ২৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা)। ক্ষতিজনক মানে শ্রেণীকরণ করা হয়েছে ৩১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। গ্রাহকদ্বয়ের ফোর্সড লোন রয়েছে ১৪৭ কোটি ও ১৭৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক 'গুণগত মানের ভিত্তিতে ক্ষতিজনক মানে শ্রেণীকরণ' এবং প্রতিষ্ঠান দুটির রপ্তানি-সংক্রান্ত অনিয়মের জন্য শাখা ব্যবস্থাপক, বৈদেশিক বিনিময় ইনচার্জ এবং তদারকির সঙ্গে জড়িত প্রধান কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়। এ ছাড়া বিসমিল্লাহ গ্রুপের আরেকটি প্রতিষ্ঠান হিন্দোল ওলী টেক্সটাইলস লিমিটেডের অনুকূলেও প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েক কোটি টাকা ঋণ অনিয়মের খোঁজ পায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনদল। সব মিলিয়ে এ গ্রুপ প্রাইম ব্যাংক থেকে ৪০৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
প্রাইম ব্যাংকের ঋণ অনিয়ম সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'পরিদর্শনে ওই শাখায় কিছু অনিয়ম ধরা পড়েছে বলে শুনেছি। এ বিষয়ে ওই ব্যাংককে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।'
বিসমিল্লাহ টাওয়েলস গ্রুপের ঋণ অনিয়মের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ব্যাংকের ঋণ ঝুঁকি বিশ্লেষণ ক্ষমতা (ক্রেডিট রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট) দুর্বল হয়ে পড়লে এ ধরনের অনিয়ম ঘটতে পারে। তা ছাড়া ব্যাংকের দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তারাও এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। তাই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের উচিত হবে ওই সব দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। আর ব্যাংক যদি সেটা না করে, তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।'
ইব্রাহিম খালেদ আরো বলেন, 'আমাদের সামনে হলমার্কের উদাহরণ আছে। এর পরও ব্যাংকগুলোতে এ ধরনের অনিয়ম হওয়াটা মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়। এর ফলে আমানতকারীর স্বার্থ ঝুঁকির মধ্যে পড়বে এবং সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাত নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হবে।'
বিসমিল্লাহ গ্রুপের বর্তমান অবস্থা
কুমিল্লা থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কাশেম হৃদয় গতকাল জানান, জেলার বিসিকে চার দিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে গ্রুপটির বিসমিল্লাহ টাওয়েলস লিমিটেড ও হিন্দোল ওলী টেক্সটাইলস লিমিটেড। নতুন কোনো অর্ডারও নেওয়া হচ্ছে না। খুলে ফেলা হয়েছে বিসমিল্লাহ টাওয়েলস লিমিটেডের সাইনবোর্ডও। কর্মচারীরা আগের মতো অফিসে থাকছেন না। তাঁদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কাজ করছে।
অন্যদিকে কুমিল্লার বজ পুর সার্কুলার রোডের বাড়িতে গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এখন থাকছেন না। তবে কুমিল্লার কাপড়িয়াপট্টিতে চালু আছে তাঁদের সরকার অনুমোদিত দেশি-বিদেশি মদের দোকান নাদের ট্রেডিং অ্যান্ড কোং।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরীর ২০ বি প্লটে রয়েছে বিসমিল্লাহ গ্রুপের বিসমিল্লাহ টাওয়েলস লিমিটেড ও হিন্দোল ওলীর অফিস এবং ফিনিশিং সেকশন। বি ১৪ নম্বর প্লটে রয়েছে হিন্দোল ওলীর উইভিং সেকশন, বি ৪৯ নম্বর প্লটে রয়েছে ডাইং সেকশন এবং অন্য একটি প্লটে আছে আরেকটি উইভিং সেকশন। বিসিকে এ চারটি ইউনিট ছাড়াও কুমিল্লার বুড়িচংয়ের দেবপুরে রয়েছে গ্রুপের আরেকটি কারখানা। বিসমিল্লাহ টাওয়েলস লিমিটেডের গার্ড আসাদ মিয়া বলেন, 'তিন দিন ধরে কাজ বন্ধ আছে। দুই দিন আগেও সাইনবোর্ড ছিল। এখন নেই।'
হিন্দোল ওলীর উইভিং সেকশনের এক কর্মী জানান, উৎপাদন বন্ধ। কর্মচারী আবুল কালাম আজাদ জানান, তাঁদের উৎপাদিত টাওয়েলস অস্ট্রেলিয়া, হল্যান্ড, পর্তুগাল, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। কুমিল্লার চারটি ইউনিটে অন্তত সাড়ে ৯০০ কর্মী কাজ করেন। গত মাসে তাঁদের বেতন হয়নি।
কুমিল্লার বাড়িতে তাঁরা নেই
কুমিল্লার বজ পুর সার্কুলার রোডে 'নাদের মঞ্জিলে' থাকতেন গ্রুপের চেয়ারম্যান সফিকুল আনোয়ার চৌধুরী ও তাঁর ছেলে গ্রুপের এমডি খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরী সুজন। এখন তাঁরা সেখানে নেই। বাড়ির কেয়ারটেকার নাসির আহমেদ জানান, সফিকুল আনোয়ারের তিন মেয়ে ও এক ছেলে। তিন মেয়ে, স্ত্রীসহ তিনি থাকেন আমেরিকায়। ছেলে সুজন এখন রয়েছেন দুবাইতে।
আশুলিয়ায় দুটি ইউনিটেই কাজ কম
সাভার থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক তায়েফুর রহমান জানান, আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের পলাশবাড়ীতে আলপা কম্পোজিট টাওয়েলস লিমিটেডের দুটি ইউনিট রয়েছে। কারখানা দুটিতে শ্রমিক উপস্থিতি ও কাজের চাপ এখন কম বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্রথম কারখানাটিতে ঢুকতেই বিপ্লব মিয়া নামের একজন নিরাপত্তাকর্মী জানান, কোনো কর্মকর্তা নেই। শ্রমিকরা বেতন-ভাতা ঠিকমতো না পেয়ে চলে গেছেন। এখানে তিন শর মতো শ্রমিক কাজ করতেন। এ ইউনিটে পাঁচতলার একটি ভবন ও দুটি টিনশেড স্থাপনা রয়েছে।
মূল কারখানায় গিয়ে কথা বলা সম্ভব হয় উৎপাদন ব্যবস্থাপক (পিএম) শফিকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, আলপা কম্পোজিটে তিনি যোগ দিয়েছেন তিন-চার মাস আগে। তাই বেশি কিছু জানেন না। তিনি জানান, আলপা কম্পোজিট টাওয়েলস কারখানাটি ২০০২ সালে উৎপাদনে যায়। ২০০৪ সালের দিকে কারখানাটি বর্তমান মালিকের মালিকানায় আসে। চারদিকে সীমানাপ্রাচীর দেওয়া কারখানাটি আনুমানিক ১২০ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। দুটি কারখানায় এখন ৭০০ থেকে ৮০০ শ্রমিক কাজ করেন বলে তিনি জানান। কারখানাটি বিটিএমসির সদস্যভুক্ত। কারখানায় বর্তমানে কাজ কম। কাঁচামালেরও অভাব রয়েছে। তাঁরা কারখানা দুটিতে শুধু টাওয়েল তৈরি করেন। এখন শুধু সুইং বিভাগ চালু রয়েছে। গত মাসে তাঁরা প্রায় ১৫০ লাখ কেজি টাওয়েল উৎপাদন করে রপ্তানি করেছেন। এর আগের মাসে প্রায় ২০০ লাখ কেজি টাওয়েল উৎপাদন করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.