প্রাণী জগৎ- তারা হাঁসজারুর জ্ঞাতি ভাই

লাইগারদের বিশাল আকৃতি দেখে অনেক মানুষই অবাক হয়। অন্যরা গুরুতর একটি ভুল বলে মনে করেন। চিড়িয়াখানায় বিড়াল গোত্রের যেসব বিশালদেহী প্রাণী তোমরা দেখে থাক, ক্রিস আর রেপিডো অনেক দিক থেকেই তাদের মতো।
অন্যদের মতোই পাথর কিংবা মেঝের ওপর শুয়ে-বসে অলস সময় কাটায় বাচ্চা দুটি, খেলাচ্ছলে একটি আরেকটির লেজ কামড়ে দেয়, চিড়িয়াখানার কর্মচারীদের রেখে যাওয়া মাংসের পাহাড় নিয়ে মেতে ওঠে উৎসবে। তবে সবকিছুর পরও দক্ষিণ কোরিয়ার এভারল্যান্ডের চিড়িয়াখানার বাসিন্দা এই দুই ভাই অন্য সব বড় বিড়ালের চেয়ে আলাদা। কারণ, ক্রিস আর রেপিডো হচ্ছে ‘লাইগার’। নিশ্চয় ভাবছ—লাইগার, সেটা আবার কী? এমন প্রাণীর কথা তো কখনো শুনিনি! আসলে সিংহ বাবা আর বাঘিনী মায়ের ঘরে জন্ম নেওয়া সন্তানই হলো লাইগার (লায়ন + টাইগার = লাইগার)। বাংলায় বলতে পারি সিংঘ (সিংহ + বাঘ)।
সুন্দর ডোরাকাটা দাগ আর কখনো কখনো লম্বা, অমসৃণ কেশরধারী লাইগার গর্জন করে সিংহের মতো আর কাশে ঠিক বাঘিনীর মতো। বিচিত্র এই প্রাণীরা কিন্তু বিশালদেহী। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও একটি বাঘ আর সিংহের ওজন যোগ করলে যা দাঁড়াবে, একটি পূর্ণবয়স্ক লাইগারের ওজন তা-ই। একদিনে অবলীলায় ৩০ পাউন্ড কাঁচা মাংস খেয়ে নিতে পারে একেকটা লাইগার; আর এদের মাথা বাচ্চাদের বাইসাইকেলের চাকার চেয়ে আকারে কোনো অংশেই ছোট নয়।
পৃথিবীতে এ মুহূর্তে তিরিশটিরও কম লাইগার আছে। তাই বলে ওরা কিন্তু বিপন্ন প্রাণী নয়। কারণ, জীববিদ ও অন্য বিজ্ঞানীরা লাইগারকে এমনকি আলাদা একটা প্রজাতি ভাবতেও রাজি নন। ‘এরা আসলে দুই প্রজাতির একটি সংকর।’ বলেন যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা চিড়িয়াখানার সংরক্ষণ পরিচালক রনটিলসন। ‘বুনো পরিবেশে সিংহ আর বাঘ একসঙ্গে থাকে না।’
লাইগারদের বিশাল আকৃতি আর বিস্তৃত চেহারা দেখে অনেক মানুষই অবাক হয়। অন্যরা আবার এর অস্তিত্বকে গুরুতর একটি ভুল বলে মনে করেন। লাইগার কি আসলেই বিস্ময়কর এক প্রাণী, নাকি উদ্ভট এক সৃষ্টি? জানতে চাইলে উভয়পক্ষের বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন, তা পড়ো; তারপর নিজেই সিদ্ধান্ত নাও।

No comments

Powered by Blogger.