গণজাগরণে বাংলাদেশের রাজনীতি ধাক্কা খেয়েছে

শাহবাগের গণজাগরণে বাংলাদেশের রাজনীতি আকস্মিক ধাক্কা খেয়েছে। প্রচলিত রাজনৈতিক ধারা থেকে মোহমুক্তি ঘটেছে জনমানসে। তারই প্রতিফলন ঘটেছে ঢাকার শাহবাগে।
তবে যে যুদ্ধাপরাধের রায়কে কেন্দ্র করে শাহবাগে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে সেই আদালত থেকে এখনও বেশ কয়েকটি মামলার রায় দেয়া হয় নি। সে মামলাগুলোর রায় হয়তো আগামী সপ্তাহগুলোতে দেয়া হতে পারে। তাকে কেন্দ্র করে এই উত্তেজনা বহাল থাকতে পারে। বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। তারা এখন উল্টো রাজনৈতিক চাপের মুখে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস ১২ই ফেব্রুয়ারি এ প্রতিবেদনে এসব কথা বলেছে। জিম ইয়র্ডলি’র লেখা ওই প্রতিবেদনের শিরোনাম ‘পলিটিক্স ইন বাংলাদেশ জোল্টেড বাই ডেইলি ডেমোনস্ট্রেশনস’। নয়া দিল্লি থেকে লেখা ওই প্রতিবেদনে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে প্রতিদিন বিক্ষোভে মানুষের ঢল নামছে। এ বিক্ষোভ জাতির রাজনীতিকে তোলপাড় করে দিচ্ছে। এদেশের অতীতের রক্তাক্ত অতীত কিভাবে বর্তমানকে আঁকড়ে ধরে আছে তা এর মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। গত মঙ্গলবারও সেখানে লক্ষ মানুষের ঢল নেমেছিল। তাদের বেশির ভাগই কলেজ পড়–য়া ছাত্রছাত্রী ও যুবক যুবতী। সম্প্রতি বাংলাদেশের স্পেশাল যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক আদালত যে রায় দিয়েছেন তাতে জনগণের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তাতেই এই বিক্ষোভ। তারা বলছে, আদালত অপরাধীকে যে শাস্তি দিয়েছেন তা অনেক হালকা। শাহবাগের ওই বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ থাকলেও মঙ্গলবার ঢাকার অন্যান্য অংশে বাংলাদেশের ইসলামপন্থি সবচেয়ে বড় দল জামায়াতে ইসলামীর অনুসারীরা গাড়ি ভাঙচুর করেছে। পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় বন্দুক যুদ্ধ হয়। এর আগে জামায়াতের নেতারা শাহবাগের গণজোয়ারের পাল্টা জবাব দিতে একটি বিক্ষোভের অনুমতি চায় সরকারের কাছে। কিন্তু সরকার সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, পাকিস্তান থেকে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যারা নৃশংসতা চালিয়েছিলেন তাদের বিচার করছে বাংলাদেশ সরকার। দু’বছর ধরে তা চলছে। এই মামলার অন্যতম আসামী জামায়াতের বর্তমান নেতা আবদুল কাদের মোল্লা (৬৫)। ধর্ষণ ও গণহত্যার মতো অপরাধে গত ৫ই ফেব্রুয়ারি ওই বিশেষ আদালত তাকে অভিযুক্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এই রায়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শাহবাগে বিক্ষোভকারীরা সমেবেত হন। এই এলাকাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই। বিক্ষোভকারীদের কণ্ঠ সোচ্চার ও পরিষ্কার। তারা মনে করেন, কাদের মোল্লাকে যে যাবজ্জীবন শাস্তি দেয়া হয়েছে তা নগন্য। তারা সন্দেহ করেন সম্ভবত এ নিয়ে রাজনৈতিক কোন সমঝোতা হয়েছে। তাদের দাবি, কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.