পীরগঞ্জ মাদ্রাসার দু'প্রভাষকের গা-ঢাকাঃ শিবির নেতাকে দিয়ে প্রক্সি ক্লাস!

রংপুরের পীরগঞ্জ সিনিয়র মাদ্রাসার দু'আরবি প্রভাষক ও উপজেলা জামায়াতের প্রভাবশালী নেতা গ্রেফতার এড়াতে গা-ঢাকা দেয়ায় ছাত্রশিবিরের এক নেতাকে দিয়ে প্রক্সি ক্লাস নেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ওই মাদ্রসার সভাপতি হয়েও বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, দেশব্যাপী জামায়াত-শিবিরের চিহ্নিত নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অভিযান শুরু হলে গ্রেফতার এড়াতে উপজেলা সদরে অবস্থিত পীরগঞ্জ সিনিয়র মাদ্রাসায় কর্মরত আরবি বিষয়ের দু'প্রভাষক এবং উপজেলা জামায়াতের আমির গোলাম মোস্তফা ও সাবেক সেক্রেটারি মাও. নূরুল আমীন গা-ঢাকা দেন। ওই দু'শিক্ষক গত নভেম্বর থেকে অদ্যাবধি মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকলেও মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদ ওই শিক্ষকদ্বয়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
অভিযোগ উঠেছে, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রুহুল আমীন রহস্যজনক কারণে ওই দু'শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে শিক্ষক হাজিরা খাতায় উপস্থিতি স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এদিকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি উপজেলা আওয়ামীল লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক একরামুর হক ওই শিক্ষকদ্বয়ের গত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের বেতন-ভাতা ছাড় করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের নেতারা। তাদের অনুপস্থিতর কারণে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের আরবি ক্লাস যাতে বন্ধ না হয় সেজন্য ছাত্র শিবির নেতা আবদুর রাজ্জাককে দিয়ে প্রক্সি ক্লাস নেয়া হচ্ছে। রহস্যজনক কারণে অধ্যক্ষ রুহুল আমিন তা মেনেও নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা জাসদের সভাপতি মীর মোহাম্মদ আলী মানিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে যখন স্বাধীনতা সপক্ষের সব শক্তি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি বন্ধের জন্য লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। ঠিক সে সময় আ'লীগ নেতা এমন করবে এটা ন্যক্কারজনক ও দুঃখের বিষয়। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। উপজেলা নাগরিক কমিটির সাধারণ-সম্পাদক এনামুল হক বলেছেন, এটা ন্যক্কারজনক ঘটনা। অদক্ষ হলে যা হয়। একরামুল কোন দিন আওয়ামী লীগ করেছে? আমরা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সভাপতি ও অধ্যক্ষের কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার এবং এর নেপথ্যে যারা জড়িত তাদেরও শাস্তি দাবি করছি।
জেলা সিপিপিবির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু সুফিয়ান হিরু বলেছেন, এটা দুর্র্নীতি। এর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া এবং শাস্তি হওয়া উচিত। আমরা সিপিপিবির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আওয়ামী লীগের নেতা যদি এই কাজ করে তাহলে অন্যরা আর কী করবে?
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বেগম রওশন আরা ওয়াহেদ জানান, এটা কোনভাবেই সে (সভাপতি) ঠিক করেনি। বর্তমানে এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের কমিটি নেই। আমি জেলা কমিটির নেতাদের বিষয়টি অবহিত করব।

No comments

Powered by Blogger.