বুড়িগঙ্গার দূষণ ঠেকাতে ॥ ট্যানারি পল্লীর কেন্দ্রীয় ইটিপি স্থাপনের টেন্ডার আহ্বান- আদালতের রায় মেনে ট্যানারি স্থানান্তরের উদ্যোগ

ঢাকার পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখতে বুড়িগঙ্গাসহ চার নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণের কাজ অব্যাহত রাখবে সরকার। একই সঙ্গে আদালতের রায় বাসত্মবায়নে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি শিল্প দ্রম্নত স্থানানত্মরে পদৰেপ নিয়েছে।
এ জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে ইটিপি স্থাপনের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। ইটিপি স্থাপনের কাজ শুরম্ন হলেই কারখানা স্থানানত্মর প্রক্রিয়া শুরম্ন করা হবে। জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট ঝুঁকি মোকাবেলায় জাতীয়ভাবে এ্যাকশন পস্নান তৈরি করা জরম্নরী। পাশাপাশি বৈশ্বিক এ্যাকশন পস্নান করাও প্রয়োজন। বৈশ্বিক পস্নান তৈরিতে বিশ্বব্যাংক ভূমিকা রাখতে পারে। মঙ্গলবার জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবেলায় পরিবেশবান্ধব বৈশ্বিক কৌশলপত্র তৈরির লৰ্যে আয়োজিত সেমিনারে বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ কথা জানান।
হোটেল সোনারগাঁওয়ে ওয়ার্ল্ডব্যাংক গ্রম্নপ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে গেস্নাবাল এনভায়রনমেন্ট স্ট্র্যাটেজি তৈরিতে এ সেমিনারের আয়োজন করে। বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এলেন এ গোল্ডস্টেইন, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. জাফর আহম্মেদ খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ট্যানারি স্থানানত্মর একটি সময়সাপেৰ ব্যাপার। ইচ্ছা করলেই ট্যানারি অন্যত্র স্থানানত্মর করা যায় না। আওয়ামী লীগ সরকারই প্রথম হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি শিল্প সাভারে স্থানানত্মরের উদ্যোগ গ্রহণ করে। জনগণের দাবির মুখে ট্যানারি শিল্প স্থানানত্মরের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ব্যর্থতার কারণে স্থানানত্মর প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে। বিএনপি সরকার ৰমতায় এসে ট্যানারি শিল্প স্থানানত্মরের কোন ব্যবস্থা না নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে ইটিপি স্থাপনের কথা বলে বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ইটিপি স্থাপনের কথা বলা হলেও এ ব্যাপারে তারা কোন পরিকল্পনা তখন গ্রহণ করেনি। এ সরকার আবার ৰমতায় এসে ট্যানারি শিল্প স্থানানত্মরের উদ্যোগ নিয়েছে। আগের সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ইটিপি স্থাপনে ইতোমধ্যে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। ইটিপি স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরম্ন হলেই ট্যানারি স্থানানত্মর শুরম্ন হবে। যেহেতু ট্যানারি স্থানানত্মর একটু সময়সাপেৰ ব্যাপার, তাই আদালতের রায় বাসত্মবায়নের প্রয়োজনে সময় চাওয়া হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে সরকার বৈঠক করেছে। শিল্পমালিকরা যদি ইটিপি স্থাপনের পর কারখানা স্থানানত্মরের উদ্যোগ নেয় তাহলে এ প্রক্রিয়া আরও বিলম্বিত হতে পারে। আর যদি ইটিপি স্থাপনের পাশাপাশি স্থানানত্মর প্রক্রিয়া শুরম্ন করে তাহলে তা দ্রম্নত করা সম্ভব হবে।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে টেকসই পরিবেশের গুরম্নত্ব অপরিসীম। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর উন্নয়নের ধারাবাহিকতা হুমকির মুখে পড়ছে। পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নগরায়নে বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক শহরাঞ্চলে বাস করছে। তিনি বলেন, ঝুঁকি মোকাবেলা, খাপ খাওয়ানো এবং নগরায়নের বিষয়টি অনত্মভর্ুক্ত করে বিশ্বব্যাংক গেস্নাবাল স্ট্র্যাটেজি আপডেট করার সিদ্ধানত্ম নিয়েছে। সহযোগী দেশগুলোর সহায়তা এ বছরের ডিসেম্বর নাগাদ নতুন গেস্নাবাল এনভায়রনমেন্ট স্ট্র্যাটেজি পস্নান তৈরি করতে যাচ্ছে বিশ্বব্যাংক। টেকসই পরিবেশ বজায় রেখে উন্নয়ন সৰমতা এবং প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করতে বিশ্বব্যাংক কিভাবে সাহায্য, সহযোগিতা ও সমর্থন দিতে পারে সে ব্যাপারে বেশি গুরম্নত্ব দেয়া হচ্ছে এতে।

No comments

Powered by Blogger.