ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের মিলনমেলা- আগামী প্রজন্মের উদ্ভাবনী শক্তি

আজকের শিশুর মধ্যেই উজ্জ্বল আগামীর সম্ভাবনা_ এ কথা সবার জানা থাকলেও কার্যক্ষেত্রে শিশুদের সুপ্ত সম্ভাবনা বিকশিত করার উদ্যোগ কি আছে? কিছু উদ্যোগ থাকলেও দেশের সব শিশুর পর্যাপ্ত বিকাশ নিশ্চিত করার মতো যথেষ্ট উদ্যোগ নেই। রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের সামর্থ্য কম।
কিন্তু সীমিত সামর্থ্য কাজে লাগিয়ে ভালো ফল বয়ে আনার মতো আন্তরিকতাও কি আছে? বলা বাহুল্য, পদে পদে নানা বাধা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ কণ্টকিত করে রেখেছে। শিশুরা কী চায়_ সে খবর রাখার ফুরসতও অনেক সময় মেলে না। আমরা শিশুদেরটা শুনি না, আমাদেরটা তাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চাই। এ পরিস্থিতিতে শিশুদের উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিজ্ঞান, শিল্প ও প্রযুক্তি মেলা। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) এ মেলার আয়োজন করেছে। মেলাটিতে ক্ষুদে উদ্ভাবকরা তাদের নানা প্রকল্প নিয়ে রীতিমতো চমক সৃষ্টি করেছে। তাদের সৃজনশীলতা ও চিন্তার ছাপ মিলছে এ প্রকল্পগুলো থেকে। এটি উৎসাহব্যঞ্জক। শিশুরা নানা প্রয়োজনীয় উদ্ভাবনের দিকে মন দিয়েছে_ এটি ভালো খবর। সবচেয়ে বড় কথা, যে সমস্যা সমাধানে বড়রা গলদঘর্ম হচ্ছেন, সে সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টাও তারা করেছে। রাজধানীর যানজট নিয়ে নানা প্রকল্প তারা এনেছে। কীটনাশক, ব্যাটারি নির্মাণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সৃজনশীল প্রকল্প উপস্থাপিত হয়েছে। শিশুদের এ প্রকল্পগুলোর যথাযথ মূল্যায়ন হওয়া দরকার। কাজে লাগানোর মতো উদ্যোগগুলো নিয়ে সামনে এগোনো যেতে পারে। সবচেয়ে বেশি দরকার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণায় শিশুদের উৎসাহিত করা। আজকের শিশুরাই আগামীর বিজ্ঞানী বা প্রকৌশলী হবে। তাদের সঠিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিতে পারলে আগামী দিনে এদের মধ্য থেকেই বেরিয়ে আসবে বড় বড় বিজ্ঞানী ও উদ্ভাবক। এ বিষয়ে পরিবার ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও মনোযোগী হতে হবে। সরকারের নানা প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় উৎসাহীদের জন্য বিশেষ বৃত্তির ব্যবস্থা করতে পারে। শিশুরা আজ যে সম্ভাবনা ও আশার স্বপ্ন নিয়ে পথ চলছে, তাকে পূর্ণতা দিতে হলে উপযুক্ত উদ্যোগ দরকার। আমরা সেই উদ্যোগের পথ চেয়ে আছি।

No comments

Powered by Blogger.