হিজাব পরলেন হাজারো অমুসলিম নারী

বিশ্ব হিজাব দিবস পালন করা হয়েছে গতকাল শুক্রবার। এ উপলক্ষে অমুসলিম নারীদের এই দিনে হিজাব পরার আহ্বান জানানো হয়। এতে ব্যাপক সাড়া মেলে। হাজারো অমুসলিম নারী হিজাব পরে দিবসটি পালন করেন।
‘হিজাব পরার অভ্যাস আমার নেই। এর পরও মাথায় টুকরো হিজাব পরেছি। জিনিসটি সুন্দর। ভালোই লাগছে। টের পাই, আমার সামনে অনেক বিকল্প আছে।’ এ প্রতিক্রিয়া জেস রোদেস নামের এক অমুসলিম ছাত্রীর। তাঁর বয়স ২১ বছর। পড়েন যুক্তরাজ্যের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। মাথায় হিজাব পরার একটা গোপন বাসনা তাঁর মনের কোণে দীর্ঘদিন ধরে লুকিয়ে ছিল। কিন্তু তাঁর পরিবারে এর চল নেই। তাই এত দিন পরা হয়ে ওঠেনি। একদিন এক সহপাঠিনী তাঁকে হিজাব পরার আহ্বান জানালে লুফে নেন। জেস জানান, ‘সহপাঠিনী আশ্বস্ত করে, এটি আসলে শালীনতাবোধের বিষয়। এর সঙ্গে ইসলামের সংযুক্তি আছে, এটা সত্য। কিন্তু চাইলে অমুসলিম নারীরাও হিজাব পরতে পারেন। তাই ভাবলাম, আমিই বা কেন পরে দেখি না?’ তবে পরিবারের সদস্যদের আশঙ্কা ছিল, হিজাব পরে রাস্তায় বেরোলে জেসকে নানা টিপ্পনী সইতে হবে। বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হবে। জেসের মনেও ছিল সংশয়। কিন্তু তার পরও সাহস করে এক মাস হিজাব পরার সিদ্ধান্ত নেন। জেস বলেন, ‘প্রথম দিকে বিব্রত লাগত। অস্বস্তিবোধ হতো। কিন্তু আট দিনের মাথায় সব সামলে উঠি।’ জেসের মতো গতকাল প্রথম বিশ্ব হিজাব দিবসে সারা বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের হাজারো অমুসলিম নারী হিজাব পরেন।
এমন একটা দিন উদ্যাপনের চিন্তাটা প্রথমে আসে নিউইয়র্কের বাসিন্দা নাজমা খান নামের এক নারীর মাথায়। তাঁর উদ্যোগে বিশ্বের ৫০টি দেশ থেকে নারীরা ইতিবাচক সাড়া দেন। পরে তিনিই এর আয়োজন করেন।
হিজাবকে অনেকে দেখেন নারীদের অবদমন ও বিভাজন সৃষ্টির প্রতীক হিসেবে। নানা বিতর্ক মোকাবিলায় এই বিশ্ব হিজাব দিবসের ডাক দেন নাজমা। অমুসলিম ও মুসলিম নারীদের যাঁরা সচরাচর হিজাব পরেন না, তাঁদের অনেকের মনোযোগ আকর্ষণ করেন তিনি। নাজমা খানের জন্ম বাংলাদেশে। মাত্র ১১ বছর বয়েসে নিউইয়র্কে পাড়ি জমান তিনি। নাজমা বলেন, ‘স্কুলে কেবল আমিই হিজাব পরতাম। এ জন্য নানা বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে। তাই ভাবলাম, অমুসলিম নারীরা যদি মাত্র এক দিনের জন্য হলেও হিজাব পরেন, তাহলে মুসলিম নারীদের আর এ ধরনের বৈষম্যের শিকার হতে হবে না।’ বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.