সেতু না থাকায় ১০ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

চলনবিলের সিংড়া উপজেলার হরিপুর ঘাটে নাগর নদের ওপর সেতু নির্মিত না হওয়ায় ১০টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বাধ্য হয়ে তারা বাঁশের পুরোনো সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
স্থানীয় তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদৎ হোসেন বলেন, বাঁশের সেতুর দুই প্রান্তে নদীর পাড় ভেঙে যাওয়ায় মোটরসাইকেল, ভ্যানগাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহন সেতুতে ওঠানামা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এখন মালামাল নিয়ে কোনো যানবাহনই এই সেতু দিয়ে চলাচল করতে পারে না।
এলাকাবাসী ২০০৫ সালে নাগর নদের ওপর সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে গণ-আবেদন করে। এ ব্যাপারে সরকার একটি প্রকল্প তৈরি করেছিল, কিন্তু পরে এটি বাতিল করা হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সিংড়ার হরিপুর, পারচক, ছোট হিয়াতপুর, হিয়াতপুর, মাহমুদপুর, তিনভিটা, ভাদুরীপাড়া, তাজপুর, রাখালগাছা ও বজরাহার গ্রামের মানুষের উপজেলা সদরে যাতায়াতের সরাসরি কোনো রাস্তা নেই। এসব গ্রামের ৫০ হাজারের বেশি মানুষ হরিপুর ঘাট দিয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করে। স্থানীয় তাজপুর ইউপি ২০১০ সালে সিংড়া সদর থেকে চার কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে হরিপুর-রাখালগাছা এলাকায় নাগর নদের ওপর বাঁশ দিয়ে একটি সেতু নির্মাণ করে দেয়। সংস্কারের অভাবে এই সেতুর বেশ কিছু অংশ ইতিমধ্যে ভেঙে গেছে। বর্তমানে এটি ওপর দিয়ে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সেতু পার হতে গিয়ে গত এক বছরে অন্তত ১০টি শিশু দুর্ঘটনায় পড়েছে। তাদের মধ্যে হরিপুর গ্রামের রাসেল হোসেন জানায়, এক মাস আগে বাঁশ ভেঙে নিচে পড়ে গিয়ে তার বাঁ পা ভেঙে গেছে। এখন পর্যন্ত সে স্কুলে যেতে পারছে না। মাদ্রাসাছাত্রী আলেয়া খাতুন জানায়, মাঝেমধ্যেই তারা ওই সেতু থেকে পড়ে যায়। এতে তাদের জামাকাপড় নষ্ট হয়। এ কারণে তারা ক্লাসে যেতে পারে না।
হরিপুর গ্রামের ভ্যানচালক তছিরউদ্দিন জানান, মালামাল নিয়ে উপজেলা সদর ও বিভিন্ন বাজারে যাওয়ার একমাত্র পথ এটি। এক মাস ধরে ভ্যান নিয়ে বাঁশের সেতু পার হওয়া যায় না। তাই কাজ না করায় তাঁর আর্থিক অবস্থাও শোচনীয়। শিক্ষক আতাউর রহমান জানান, একটি পাকা সেতু হলে এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ অনেকটা লাঘব হতো।
এ ব্যাপারে তাজপুর ইউপির চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিন বলেন, ‘বাতিল হওয়া প্রকল্পটি সচল করার জন্য স্থানীয় সাংসদ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছেন। আশা করি, দ্রুত একটা সমাধান হবে।’

No comments

Powered by Blogger.