জাপার ওপর 'আওয়ামী' সন্ত্রাস মহাজোট ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র! by রাজন ভট্টাচার্য

দেশের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় পার্টির ওপর আওয়ামী লীগ নামধারী সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনাকে মহাজোট ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন আওয়ামী লীগসহ জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা।
তারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। এটি পরিকল্পিত। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির দূরত্ব তৈরি করতেই এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ বলছেন, দেশে নির্বাচিত সরকারের পর পর দু'বার সরকার পরিচালনা করার ইতিহাস নেই। মহাজোট এক থাকলে আগামীতে আবারও নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যে কারণে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোটের শরিকদের ষড়যন্ত্রকারীরা ৰমতায় আসতে চায়। জাতীয় পার্টির নেতারা বলছেন, বিচ্ছিন্ন ঘটনার কারণে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মধ্যে ৰোভের সৃষ্টি হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে দূরত্ব। তাই ষড়যন্ত্র রোধে মহাজোট নেত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি দেয়া জরম্নরী; অন্যথায় স্বার্থান্বেষী মহল সুযোগ নেবে। সেই সঙ্গে হামলাকারীদের চিহ্নিত করাসহ দৃষ্টানত্মমূলক শাসত্মি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এদিকে দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বনানী কার্যালয়ে দলের প্রভাবশালী কয়েক নেতাকে নিয়ে ঘরোয়া বৈঠক করেছেন এরশাদ। জাতীয় পার্টির পৰে এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ শীর্ষ বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। আওয়ামী লীগের পৰ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। জাতীয় পার্টি বলছে, গত এক মাসে দলের ১০ জনের বেশি শীর্ষ নেতার ওপর বিভিন্ন স্থানে হামলা করেছে আওয়ামী লীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা। বিভিন্ন স্থানে হামলার প্রেৰিতে এরশাাদ বলেছেন, ঘটনা সুপরিকল্পিত। মহাজোটের বিরম্নদ্ধে ষড়যন্ত্রের বহির্প্রকাশ।
সোমবার গাইবান্ধায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফজলে রাব্বী চৌধুরীর ওপর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নামধারী সন্ত্রাসীদের হামলা ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনার পর বিষয়টি আবারও আলোচনায় আসে। ঘটনার পর পরই রাব্বী নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। তিনি বলেন, বর্বরোচিত এই হামলার ঘটনার মধ্য দিয়ে মহাজোট ভাঙ্গার যাত্রা শুরম্ন হলো। এর আগে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রম্নহুল আমিন হাওলাদার ও তাঁর স্ত্রী সংসদ সদস্য রত্না আমিন হাওলাদার, সংসদ সদস্য এম এ তালহাসহ আবুল কাশেম এমপির ওপরও একই কায়দায় বরিশাল, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে। আগের ঘটনাগুলোকে বিচ্ছিন্ন হিসেবে দেখলেও ফজলে রাব্বীর ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখতে রাজি নন জাতীয় পার্টির অনেক নেতাই। তাঁরা বলছেন, হামলার ঘটনা কোন উদ্দেশ্যমূলক নয়। এর মূল কারণ আধিপত্য ও আর্থিক লেনদেন সংক্রানত্ম। জাতীয় পার্টির নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা যেসব এলাকায় আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের টেন্ডার, কাবিখা ও আর্থিক কর্মকা-ের বাইরে রাখার চেষ্টা করছে, সেখানেই ঘটছে হামলার ঘটনা। তাদের বিরম্নদ্ধে শাসত্মিমূলক ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। বরং দলীয়সহ মহাজোটের ইমেজ ৰুণ্ন হবে। তৈরি হবে দূরত্ব। সোমবার দলীয় নেতার ওপর হামলার ঘটনায় প্রথমবারের মতো মুখ খোলেন এরশাদ।
বৃহস্পতিবার দলের বনানী কার্যালয়ে দলের কয়েক শীর্ষ নেতার সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠক করেছেন এরশাদ। বৈঠকে হামলার ঘটনা ও করণীয় নিয়ে নেতৃবৃন্দ মতামত দিয়েছেন। তবে ঘটনায় এই মুহূর্তে হার্ডলাইনে যেতে রাজি নন এরশাদ। মহাজোট নেত্রীসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে চায় জাতীয় পার্টি। তবে দলের মহাসচিব রম্নহুল আমিন হাওলাদারের ওপর বরিশালে সন্ত্রাসী হামলার পর কেন্দ্রীয় যৌথসভায় নেতৃবৃন্দ এ ব্যাপারে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ করার পরামর্শ দেন। শেষ পর্যনত্ম এ পথে পা বাড়াননি এরশাদ।

No comments

Powered by Blogger.