আজ থেকে পরিদর্শনে যাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনিটরিং টিম- ব্যাংকে অতিরিক্ত চার্জ আদায়ের অভিযোগ by খায়রম্নল হোসেন

ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা আনতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ লৰ্যে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ও অযৌক্তিক চার্জ আদায় বন্ধে আজ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা পরিদর্শনে যাবেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনিটরিং বিভাগের কর্মকর্তারা। একইসঙ্গে ব্যাংকিং কার্যক্রমে অনিয়ম প্রতিরোধেও পদৰেপ নেবেন তাঁরা।


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে ইতোমধ্যেই বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। বিনিয়োগকারী, আমানতকারী এবং গ্রাহকদের স্বার্থ রৰায় এ অভিযান চালানো হচ্ছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের উর্ধতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের এক উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, ইতোপূর্বে ব্যাংগুলো গ্রাহকদের থেকে অতিমাত্রায় চার্জ হাতিয়ে নিত। এতে ব্যাংকগুলো বেশি লাভ করলেও গ্রাহকদের জন্য সমস্যা হতো। অনেক সময় গ্রাহক, বিনিয়োগকারী এবং আমানতকারীরা ব্যাংকিং সেক্টরের ওপর নেতিবাচক ধারণা পোষণ করতেন। সংশিস্নষ্ট সার্বিক দিক বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পৰ থেকে অতিরিক্ত চার্জ ও অযৌক্তিক চার্জ কমানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এটি সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং খাতের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে ব্যাংকগুলোর ৰেত্রে কিছুটা লাভ কম হবে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, এতদিন ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের রক্ত চুষে নিত। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নির্দেশনা পাওয়ার পরে এটি বন্ধ হয়ে যাবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, সকল ব্যাংক যাতে এ নির্দেশনা মেনে চলে, এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনিটরিং টিম আজ থেকে মাঠের সার্বিক বিষয় যথাযথভাবে পর্যবেৰণ করবে।
গত সপ্তাহে জারি করা বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সার্কুলারে বলা হয়েছে, সঞ্চয়ী ও চলতি হিসেবে আরোপিত মিনিমাম ব্যালেন্স ফি, ইনসিডেন্টাল চার্জ, লেজার ফি এবং সার্ভিস চার্জ আদায় করা যাবে না। এখন থেকে শুধু সঞ্চয়ী ও চলতি হিসেবে এ্যাকাউন্ট মেনটেনেন্স ফি প্রযোজ্য হবে। তবে এ ৰেত্রে প্রতি সঞ্চয়ী হিসেবে ৩০০ টাকা এবং চলতি হিসেবে ৫০০ টাকার বেশি আদায় করা যাবে না। সাইট এলসি খোলার কমিশন প্রতি ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ ০.৪০ ডেফার্ড/ইউজান্স এলসি খোলার কমিশন প্রতি ত্রৈমাসিক সর্বোচ্চ ০.৫০ শতাংশ, ১০০ শতাংশ নগদ মার্জিনে এলসি খোলার কমিশন প্রতি ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ ০.২৫ এবং ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলার কমিশন প্রতি ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ ০.৪০ শতাংশ নির্ধারিত করা হবে।
এলসি এডভাইসিং চার্জ, এলসি এ্যামেন্ডমেন্ট চার্জ ও এলসি ট্রান্সফার চার্জ সর্বোচ্চ ৭৫০ টাকা, এলসি এ্যাকসেপটেল চার্জ প্রতি ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ হার ০.৪০ এবং স্থানীয়ভাবে কনফারমেশনের ৰেত্রে সর্বোচ্চ হার ০.২০ শতাংশ নির্ধারিত হবে। রফতানি বিল নেগোসিয়েশন কমিশন ও রফতানি বিল কালেকশন কমিশন সর্বোচ্চ ০.১৫ শতাংশ নির্ধারিত হবে। ব্যাক টু ব্যাক এলসি সার্টিফিকেট ইসু্যর চার্জ, সিএ্যান্ডএফ সার্টিফিকেট ইসু্যর চার্জ, রফতানি মূল্য আদায়ের সার্টিফিকেট ইসু্যর চার্জ ৫০০ টাকার বেশি আদায় করা যাবে না।
বিও এ্যাকাউন্ট খোলার ৰেত্রে ১০০ টাকার ওপরে চার্জ নেয়া যাবে না। গ্রাহক কতর্ৃক গৃহীত ঋণ নির্দিষ্ট মেয়াদের পূর্বে পরিশোধের ৰেত্রে বকেয়া ঋণের ২ শতাংশের অধিক নেয়া যাবে না।
নিয়মিতভাবে অর্থাৎ জুন ও ডিসেম্বরভিত্তিক চার্জ ফি এবং কমিশনের তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে যথাক্রমে ৩০ জুলাই ও ৩০ জানুয়ারির মধ্যে প্রেরণ করতে হবে। চার্জ, ফি এবং কমিশনের কোন পরিবর্তন হলে ব্যাংকগুলো স্ব স্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগকে অবহিত করবে। আর এসব নির্দেশনা তদারক করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি মনিটরিং টিমও সর্বৰণিক কাজ করবে।

No comments

Powered by Blogger.