পদ্মা সেতুতে মালয়েশীয় প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে আজ বৈঠক

আজ রবিবার পদ্মা সেতু প্রকল্পে মালয়েশিয়ার প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে অর্থ ও যোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন দেশটির দক্ষিণ এশিয়ার অবকাঠামো বিষয়ক বিশেষ দূত এস সামি ভেলু। গত ২৮ জুন মালয়েশিয়ার দেয়া প্রস্তাব নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সামি সাক্ষাত করবেন বলে দুই মন্ত্রীর কার্যতালিকায় দেখা গেছে।


এছাড়া সামির পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনেরও কথা রয়েছে। আগস্টের মাঝামাঝি মালয়েশিয়া এ প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশকে চূড়ান্ত প্রস্তাব দেবে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের বিষয়টি ঝুলে যাওয়ার পর চলতি বছরের শুরুতে মালয়েশিয়া এ ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করে। যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত ১০ এপ্রিলে কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের উপস্থিতিতে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেন। গত ২৮ জুন পদ্মা সেতু নির্মাণে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে একটি খসড়া প্রস্তাব সরকারকে দেয়া হয়।
গত ২৯ জুন দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়ার দাবি তুলে বিশ্ব ব্যাংক ২৯০ কোটি ডলারের এই প্রকল্পে ঋণ বাতিল করে। এই প্রকল্পে তাদের ১২০ কোটি ডলার দেয়ার কথা ছিল।
মালয়েশিয়ার সরকারী সংবাদ সংস্থা বারনামা মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পের খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করতে আগামী সপ্তাহে ঢাকা-কুয়ালালামপুর পুনরায় আলোচনায় বসতে যাচ্ছে।
তবে বর্তমানে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় বেড়ে ৩৫০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে বলে বারনামা জানিয়েছে। মালয়েশিয়া সরকারী-বেসরকারী অংশীদারিত্বে বিওটি পদ্ধতিতে এই সেতু নির্মাণ করতে চায়। এর অর্থ হচ্ছে, সেতু নির্মাণের পর তারাই মালিক হয়ে এটি পরিচালনা করবে। লগ্নি করা অর্থ ওঠার পর তারা বাংলাদেশকে তা হস্তান্তর করবে।
বারনামা জানিয়েছে, প্রকল্পের কারিগরি দিক ও বিনিয়োগের সব বিষয়ে কুয়ালালামপুর প্রায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সামি ভেলুর সফরকালে বাংলাদেশের পূর্ণ প্রতিশ্রুতি পেলে তিনি চুক্তির চূড়ান্ত খসড়া উপস্থাপন করবেন।
মালয়েশিয়ার সংবাদ সংস্থাটির খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশ রাজি হলে সেপ্টেম্বরেই পদ্মা সেতু নিয়ে চূড়ান্ত চুক্তি হবে। সেক্ষেত্রে অক্টোবরে সেতুর ভিত্তিস্থাপন করতে ঢাকায় আসবেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
মালয়েশিয়ার প্রস্তাবের বিষয়ে যোগাযোগমন্ত্রী ইতোপূর্বে বলেছিলেন, প্রস্তাবটি গ্রহণের ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
এদিকে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বাতিলের পর নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর ঘোষণা দিলেও সংস্থাটিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও বাদ দেয়নি সরকার।
বিশ্বব্যাংক ঋণ বাতিলের পরও ঋণদাতা দুই সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) তাদের চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.