প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে সাড়া দিন, বিএনপিকে ব্যারিস্টার রফিক

প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক আগামী নির্বাচনে সরকার ব্যবস্থা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্তাবে সাড়া দিতে বিএনপির প্রতি পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আমার মনে হয়েছে সমঝোতা হবেই। এখন বিরোধী দলের ইতিবাচকভাবে এগিয়ে আসা উচিত।


শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘প্রহরী’ নামে একটি ভিডিও গানের মোড়ক উন্মোচন এবং ‘সাংস্কৃতিক দৈন্য এবং রাজনৈতিক ঐক্য’ শিরোনামে একক বক্তৃতায় তিনি এ পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বলেন, লন্ডনে হার্ডটকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আমার মনে হয়েছে, দু’দলের মধ্যে একটি সমঝোতা হবেই। তবে এখন বিরোধী দলেরই ইতিবাচকভাবে এগিয়ে আসা উচিত।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি নিয়ে দুই প্রধান দলের বিপরীত অবস্থানের মধ্যে লন্ডনে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে শেখ হাসিনা নির্বাচনকালে সরকারে বিএনপিকে যোগ দেয়ার প্রস্তাব দেন। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রস্তাবেই সাড়া দিতে বিএনপির প্রতি পরামর্শ দেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক।
তবে প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন করতে হবে; যদিও অনির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা ছাড়তে আওয়ামী লীগ নারাজ।
বিএনপির এই প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে ব্যারিস্টার রফিক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে তারা বলতে পারত, ওই সরকারে কারা থাকবে, কাদের কয়জন থাকবে। আর সবচেয়ে বড় বিতর্ক যেটি, তাদের প্রধান কে হবে? আমার মনে হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার হোক, সর্বদলীয় সরকার হোক আর কোয়ালিশন সরকার হোক, তার প্রধান কে হবে সেটিই মূল বিষয়। তবে ব্যারিস্টার রফিক মনে করেন, নির্দলীয় এক ব্যক্তিকেই নির্বাচনকালে সরকারের প্রধান করা উচিত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধান বিরোধী দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশে ব্যারিস্টার রফিক বলেন, আপনারা দ্বন্দ্বে যাবেন না, সমঝোতা করুন। একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধার সঙ্গে কথা বলুন, টিটকারি করবেন না। গ্রামের লোকজন আওয়ামী লীগ বিএনপি বোঝে না। তারা চায় একজন সৎ মানুষ। যে দেশের জন্য কাজ করবে। এ সময় তিনি নির্বাচনে কোন দলকে নয় ভাল মানুষকে ভোট দিয়ে দেশের ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী ব্যারিস্টার রফিক-উল হককে উদ্দেশ করে বলেন, স্যার আমি আপনার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা নিয়েই বলছি আপনি দুই নেত্রীকে এক করার জন্য যে সময় ব্যয় করছেন তার ২৫ ভাগ সময় যদি দেশের মানুষকে জাগানোর জন্য ব্যয় করতেন, তাহলে তাদের অনেক উপকার হতো। কারণ দুই নেত্রী এক হলেই সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি না।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনের সময় যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে তাতে বিরোধী দল বিএনপির অংশীদারিত্ব থাকতে পারে। সংসদের মেয়াদ শেষ হবার তিন মাস আগেই নির্বাচনের ঘোষণা দিতে হবে। তবে সেই তিন মাস সংসদের কোন অধিবেশন থাকবে না এবং সদস্যদের কোন কার্যকরী ক্ষমতাও থাকবে না। ফলে সংসদ সদস্যরা প্রভাব খাটাতেও পারবে না। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ব্যারিস্টার রফিক শনিবার বিএনপির প্রতি সাড়া দেয়ার আহ্বান জানান।

No comments

Powered by Blogger.