নিষিদ্ধ গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ-পাকিস্তানের চার শীর্ষ সেনা কর্মকর্তার জেল

নিষিদ্ধ ঘোষিত ইসলামপন্থী একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগসাজস থাকার দায়ে পাকিস্তানি শীর্ষস্থানীয় চার সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার আলি খানকে পাঁচ বছরের জেল দিয়েছেন সামরিক আদালত।


মেজর পদমর্যাদার বাকি চারজনকে দেওয়া হয়েছে দেড় থেকে তিন বছর করে কারাদণ্ড। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে।
নিষিদ্ধ কোনো গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগসূত্র থাকার অভিযোগে জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাদের দোষী সাব্যস্ত করা ও সাজা দেওয়ার ঘটনা পাকিস্তানে এই প্রথম। তবে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ গোষ্ঠীটির নাম প্রকাশ করা হয়নি। যদিও এর আগে সেটিকে হিযবুত তাহ্‌রির বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ব্রিটেনভিত্তিক এ গোষ্ঠীটি পাকিস্তানে নিষিদ্ধ।
আইএসপিআর জানিয়েছে, দণ্ডাদেশ পাওয়া কর্মকর্তারা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। ব্রিগেডিয়ার আলি ছাড়া বাকিরা হলেন, মেজর ইনায়াত আজিজ, মেজর ইফতিখার, মেজর সোহেল আকবর ও মেজর জাওয়াদ বশির। এর বাইরে আইএসপিআরের বিবৃতিতে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
পাকিস্তানের পত্রিকা ডন তাদের অনলাইন সংস্করণে জানিয়েছে, চার কর্মকর্তার দণ্ডাদেশের খবরটি সেনাপ্রধান জেনারেল আশফাক পারভেজ কায়ানির সঙ্গে আলোচনার পরই জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়েছে। শুরুতে ব্রিগেডিয়ার আলির বিরুদ্ধে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়ে সেনা বাহিনীর সদরদপ্তরে হামলার পরিকল্পনার অভিযোগ আনা হয়েছিল। নির্বাচিত সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করারও অভিযোগ আনা হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। পরে এসব অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়।
ব্রিগেডিয়ার আলি এসব অভিযোগ অস্বীকার করছেন। গত বছরের ২ মে অ্যাবোটাবাদে আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন হত্যায় মার্কিন গোপন অভিযান প্রতিহত করতে না পারার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন আলি। এ জন্য তাঁকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে বলে আদালতে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি দাবি করেন। বিন লাদেন হত্যা অভিযানের পরপরই আলিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তবে আদালতে সাক্ষ্যদানকালে অধিকাংশ সেনা কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, ব্রিগেডিয়ার আলি 'ইসলামী বিপ্লব' ঘটাতে চেয়েছিলেন। হিযবুত তাহ্‌রিরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি পাকিস্তানে খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করছিলেন।
প্রসঙ্গত, হিযবুত তাহ্‌রির সরাসরি সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ডের পক্ষে প্রচার চালায় না। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী অন্য জঙ্গি গোষ্ঠীর কাজে মদদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.