ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের দাবি-ইসরায়েলের প্রতি আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন কমছে

ইসরায়েলে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ম্যাথিউ গোল্ড এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এবং সক্রিয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে ইসরায়েলের সমর্থন ধীরে ধীরে কমে আসছে। পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণ এবং গাজার ওপর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার কারণেই তারা সমর্থন হারাবে।


ইসরায়েলের চ্যানেল টেনকে গত শুক্রবার দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেছেন। ইসরায়েলকে বাইবেলে বর্ণিত (ডেভিড অ্যান্ড গোলিয়াত) দৈত্যের সঙ্গেও তুলনা করেছেন তিনি।
গোল্ড বলেন, ফিলিস্তিনের সঙ্গে ইসরায়েলের শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ব্রিটেনে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্যদের মধ্যেও ইসরায়েলের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাচ্ছে এবং তারা অধিকতর সমালোচনার দৃষ্টিতে ইসরায়েলকে দেখতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, '১০ বছর পরে ইসরায়েল হয়তো উপলব্ধি করবে তাদের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গি হঠাৎ করেই পাল্টে গেছে। তাদের সামাজিক অবস্থানের প্রতি অন্যদের সহনশীলতাও কমে গেছে। ইসরায়েলের সমর্থন ইতিমধ্যেই ক্ষয় হতে শুরু করেছে। এটা শুধু প্রান্তিক লোকদের মধ্যেই নয়, বরং যারা ইসরায়েলকে বর্জন করার ব্যাপারে চিৎকার করে আসছে তাদের মধ্যেও।'
গোল্ড বলেন, 'শুধু ব্রিটিশরাই নয়, বিশ্বে ইসরায়েলের অবস্থান নিয়ে চিন্তা করছে এমন যে কেউই জনসমর্থন কমে আসার বিষয়ে ভাববে।' গোল্ডই ইসরায়েলে নিযুক্ত প্রথম ইহুদি ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত।
গোল্ড মনে করেন, সরকারের নীতির কারণেই ইসরায়েলের সমর্থন কমতে শুরু করেছে। সরকার ও তার সমর্থকদের ইসরায়েলপন্থী প্রচার গণমাধ্যমে নেতিবাচক প্রভাব রাখছে। তাঁর ভাষায়, 'ব্রিটিশ জনগণের বেশির ভাগই হয়তো বিশেষজ্ঞ নয়। কিন্তু তারা বোকাও নয়। পশ্চিম তীরে নতুন বসতির ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের ঘোষণা তারা দেখে। সেখানে আসলেই কী ঘটছে, সে ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের খবর পড়ে। তারা গাজার ওপর আরোপিত অবরোধ-সংক্রান্ত খবরও পড়ে। কোথায় ভুল হচ্ছে, সে বিষয়টিই জনমতকে প্রভাবিত করছে। ইসরায়েলকে এখন গোলিয়াত (দৈত্য) এবং ফিলিস্তিনিদের ডেভিড হিসেবে দেখা হচ্ছে।' (বাইবেলে উল্লিখিত ডেভিড অ্যান্ড গোলিয়াত গল্পে গোলিয়াত ছিল ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধে ফিলিস্তিনের পক্ষের দৈত্যের নাম। আর ডেভিড ছিল ইসরায়েলের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী এক বালক, যে কেবল একটি তীর ও একটি পাথরের সাহায্যে গোলিয়াতকে ধরাশায়ী করে।)
তেল আবিবের ব্রিটিশ দূতাবাস থেকে অবশ্য গোল্ডের সাক্ষাৎকারের ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। তবে ব্রিটেনে ইসরায়েলের সমর্থনকারী প্রতিষ্ঠান বিকমের প্রধান ডেরমট কেহো বলেন, 'ব্রিটেন-ইসরায়েল সম্পর্ক অন্য যেকোনো সময়ের চেয়েই বেশি জোরালো। বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা খাতে দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। ইসরায়েলের সমর্থন কমছে বলে আমাদের জরিপে মনে হচ্ছে না।' সূত্র : গার্ডিয়ান।

No comments

Powered by Blogger.