চরাচর-পরিবেশের ব্যাপারে আমাদের দায়বদ্ধতা by আফতাব চৌধুরী

মানুষের আন্তরিকতার অভাবের জন্যই বর্তমানে ধ্বংসের মুখে পরিবেশ। আবহাওয়া, মাটি, পানিদূষণ_এককথায় মানুষের জীবনে যত পারিপাশ্বর্িক ক্ষেত্র আছে সবখানেই দূষণ বিদ্যমান। যদিও সবক্ষেত্রে পরিবেশ নির্মল রাখার জন্য সরকারি নীতি-নির্দেশিকার অভাব নেই, কিন্তু বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেই বললেই চলে।


কিন্তু যাঁরা এ নীতি-নির্দেশিকার রক্ষক, তাঁদের অনেকেই ভক্ষক বলে পরিবেশদূষণকারীদের প্রতি তাঁরা কোনো উপযুক্ত ব্যবস্থাও নিতে পারেন না। যেসব স্থানে বড় কলকারখানা আছে এবং সেগুলোর নির্গত ধোঁয়া ও বর্জ্য পদার্থ যেখানে-সেখানে বা নদীতে অপরিকল্পিতভাবে ফেলে পানি, স্থল, আবহাওয়াদূষণ ঘটানো হচ্ছে। বনাঞ্চল রক্ষার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিলেও বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতি পরিবেশের ক্ষতি করছে। সঠিকভাবে প্রত্যেকে যদি নিজেদের দায়িত্ব পালন করতেন, তাহলে এমন হতো না। পরিবেশদূষণের ক্ষেত্রে আমজনতার ভূমিকাও কম নয়। ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ঘরবাড়ি নির্মাণে বনজ সম্পদের যথেচ্ছ ব্যবহার এবং জায়গা খালি করা হচ্ছে। অথচ বিনিময়ে নিজ স্বার্থে পরিকল্পনা নিয়ে নতুনভাবে গাছ রোপণ করে রক্ষণাবেক্ষণে আলস্য আচরণে পরিবেশেরই ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। যেখানে-সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করে পানি ও আবহাওয়ার ক্ষতি করা হচ্ছে, বিষাক্ত জীবাণু বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে যারা নদীতীরের বাসিন্দা, তারা সব ধরনের ময়লা-আবর্জনা সরাসরি নদীতে ফেলে পানি দূষিত করছে। কৃষিক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহারে মাটির উর্বরতা কমে মাটিদূষণ এবং কীটনাশক প্রয়োগে পানি ও আবহাওয়া বিষাক্ত হচ্ছে। পরিবেশ ধ্বংসের এই মহোৎসব থামানোর দায় তো কমবেশি সবারই।
পরিবেশ রক্ষায় আন্তরিক মনোভাব পোষণ করতে হবে, এগিয়ে আসতে হবে সমাজসেবী, জনপ্রতিনিধি, আমলা, মন্ত্রী সবাইকে। স্বাস্থ্যকর পরিবেশ গঠনে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তবেই পরিবেশ বিপর্যয়ের ভয়ংকরতা থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
পরিবেশ সাধারণত চারভাবে দূষিত হচ্ছে_বায়ু, পানি, ভূমি ও শব্দ। কারখানা বন্ধ রাখলে চলবে না, অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য অবশ্যই প্রয়োজন শিল্পায়ন। তবে এর সঙ্গে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখার চেষ্টাও চালিয়ে যেতে হবে, এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।
আফতাব চৌধুরী

No comments

Powered by Blogger.