পাঠকের মন্তব্য: অনলাইন থেকে-মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ দিল পুলিশ

প্রথম আলোর অনলাইনে (prothom-alo.com) প্রতিদিন রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, খেলা, প্রযুক্তি, ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে পাঠকের মতামত প্রকাশিত হয়। তাঁদের এই মতামত চিন্তার খোরাক জোগায় অন্যদের। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠকদের কিছু মন্তব্য ঈষৎ সংক্ষেপিত আকারে ছাপা হলো।


পুলিশের পিটুনিতে প্রথম আলোর তিন ফটোসাংবাদিক আহত
গত শনিবার এই সংবাদ প্রকাশের পর পাঠকেরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। হাসান উল্লাহ লিখেছেন: কী আর করবেন, এই রাষ্ট্রে এইটুকু তো সহ্য করাই লাগবে!
মো. আরিফুর রহমান: মারতেই থাকুন, যাকে ইচ্ছা মারুন, মিথ্যা মামলায় জড়ান আর যত খুশি টাকা কামান। আপনারা যে জনগণের সেবক—ভুলে যান। বিনিময়ে শুধু সরকারি দলের কথামতো একটু কাজ করে দিলেই হবে।
নাসিম হাসান: গত শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বরাত দিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি খুব জোরালোভাবে উঠে এসেছে। আর আজই সাংবাদিক নির্যাতনের মধ্য দিয়ে পুলিশ এর প্রায়োগিক রূপ দেখাল।
ইফতেখার: সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক বিষয় নিয়ে যারা ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের অযৌক্তিক আন্দোলনের মুখে ঢেলে দিয়েছে, পুলিশের উচিত ছিল তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করা। তা না করে সাংবাদিকদের ওপর হামলা! সত্যিই বিচিত্র এ দেশ, এ দেশের শাসনব্যবস্থা। নেপথ্য নায়েকেরা কি চিরকাল আইনের ঊর্ধ্বে থেকে যাবে?
মো. রহমত উল্লাহ সাকের: আমাদের দেশে এগুলো কী হচ্ছে! পুলিশ সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে এখন তারা দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলোর মতো পত্রিকার সাংবাদিকদের পেটাল। এত বড় সাহস তারা কোথায় পাচ্ছে?

আওয়ামী লীগ সেই দায়িত্বটি নিতে রাজি কি না?
মুহম্মদ জাফর ইকবাল তাঁর সাদাসিধে কথা কলামের দ্বিতীয় পর্বে এই প্রশ্নটি তুলেছেন। এ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আরিফুর রহমান লিখেছেন: এর মর্ম নেতারা বুঝবেন না। সমস্যা নেই। আমরা যারা বুঝি, যারা এসব অনুধাবন করি, তারা সংসদে বসে থাকা মানুষের সংখ্যার তুলনায় লক্ষগুণ বেশি। আমরাই সিদ্ধান্ত নেব ভবিষ্যতে ভোটের মাধ্যমে।
নুসরাত জাহান: বাংলাদেশে কেউ যদি সত্যিকার অর্থে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার যোগ্যতা রাখে, তারা হলো আমার দেশের জনগণ! এত দুঃখ কষ্টের পরও যে তারা মনের শান্তিতে বসবাস করছে—এ জন্যে বিশ্বের সবচেয়ে ধৈর্যশীল জনগণ হিসেবে বাংলাদেশের মানুষকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া উচিত।
রুবেল রাজ: আপনিও তো আমাদের দেশের এমন এক ব্যক্তি, যিনি ইচ্ছা করলেই যেকোনো সময় যেকোনো ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে পারেন, যা ইউনুস সাহেব পারেন সারা বিশ্বে। তাহলে কি আপনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে এই লেখাটি আর খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে আগের দিনের লেখাটি তুলে দিয়ে নিজের চোখে ওনাদের চিঠি পড়ার দৃশ্য দেখে এসে আমাদের জানাতে পারবেন? দেশের জন্য এ কাজটুকু যে করতে হয় স্যার।
জামান চৌধুরী: অসংখ্য সাধারণ মানুষের মনের কথা অত্যন্ত সহজ করে বলে দেওয়ার জন্য আপনাকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। এ দেশে অনেকেই আছে, যারা আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কাউকেই পছন্দ করে না। কিন্তু দেশটাকে ভালোবাসে এবং দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। তারা দেশটার উন্নয়ন দেখতে চায়, সম্মানিত জাতির একজন হিসেবে নিজেকে দেখতে চায়। একসময় এরা এ দেশটাকে ভালোবেসে রক্ত দিয়ে স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে এনেছে বিনিময়ে কিছুই চায়নি, আজও চায় না। কিন্তু আমাদের দেশে কিছু নব্য রাজনীতিবিদ নামের ব্যবসায়ী দেশটার যা কিছু সম্পদ, সব ঘরে তুলতে ব্যস্ত—তাতে দেশ রসাতলে গেলেও। দেশটাকে যারা ভালোবাসে, তারা দেখছে ঘোর অন্ধকার। কোথাকার যাত্রী হতে চলেছি আমরা?

এভারেস্ট চূড়ায় ওয়াসফিয়া
দ্বিতীয় বাংলাদেশি নারী হিসেবে ওয়াসফিয়া নাজরীনের এভারেস্ট জয়ের কথা গত শনিবার সকালেই জেনে যান প্রথম আলো ডটকমের পাঠকেরা। ওয়াসফিয়ার এই সাফল্যে তাঁরা কতটা আপ্লুত, তা বোঝা যায় এটি সবচেয়ে পঠিত সংবাদগুলোর মধ্যে থাকায়। এ সম্পর্কে কাইসুল খান আন্দালিব: অভিনন্দন ওয়াসফিয়া নাজরীন। আপনি আমাদের গর্বিত করেছেন। দোয়া করি, নিরাপদে আমাদের মাঝে ফিরে আসুন। বাংলাদেশের ছেলেদের পক্ষে দ্বিতীয়বার এভারেস্ট জয় করতে এক বছর লেগেছিল, মেয়েদের লাগল এক সপ্তাহ। জয় নারীর জয়। তোমরা তো সব পারো।
মো. শফিকুল ইসলাম: অসহনীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য অনেক ভালো খবর। ধন্যবাদ আপনাকে ওয়াসফিয়া নাজরীন!
মো. আমজাদ হোসেন (মুকুল): আসলে বাঙালিদের যোগ্যতা পৃথিবীর অন্যান্য জাতি থেকে কোনো অংশে কম নয়। আসল বিপত্তি হলো পর্যাপ্ত অর্থ সংগ্রহ। এভারেস্ট জয়ে দুই বছরের অনুশীলনসহ মাথাপিছু এক কোটি টাকা খরচ (নেপাল সরকারের করসহ) হয়। এই টাকা জোগাড় করতে যে কষ্ট করতে হয়, যেটা আরও পাঁচটা এভারেস্ট জয়ের কষ্টের সমান। টাকা জোগাড় করতে গিয়ে শত অপমান সহ্য করে যারা এই কাজটি করতে পারে, তারা একটা নয়, একসঙ্গে যেন পাঁচটি এভারেস্ট জয় করল। অনেক প্রতিভা শুধু টাকার অভাবে সবার অগোচরে থেকে যায়। বাংলাদেশের পাটের তৈরি নৌকায় চড়ে ফ্রান্সের কারেতা দেশাতেল ঢাকা থেকে প্যারিস গেছেন। আমিও ঠিক অনুরূপ একটা অভিযান বাস্তবায়ন করার জন্য মাত্র ২০ লাখ টাকার জন্য বড় বড় অফিসে দিনের পর দিন প্রস্তাব নিয়ে ঘুরেছি। একটা স্পনসর জোগাড় করতে পারিনি। আমার এবং অনেকের যোগ্যতা আছে জেসিকা ওয়াটসন কিংবা লরা ডেক্কার মতো নৌকায় চড়ে বিশ্ব প্রদক্ষিণ করার। প্রয়োজন সবার প্রেরণা।

লতিফুর রহমান ব্যবসায় স্বীকৃতি
ব্যবসায় নোবেল বলে খ্যাত বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান। তাঁকে নিয়েই ছিল এ সংখ্যার ছুটির দিনের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মো. জাহিদ ফারুকি লিখেছেন: লতিফুর রহমানের জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও অনেক নতুন উদ্যোক্তার নবজন্ম হোক—এই প্রত্যাশা করছি। হূদয়ের অন্তস্তল থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এই কথাটার জন্য: ‘আমাদের পরিবারের সবার একটাই পাসপোর্ট, বাংলাদেশের। আমরা কখনো অন্য দেশের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করিনি। আমরা বাংলাদেশের মানুষ, এ দেশের প্রতি আমার আস্থা আছে। আমি মনে করি, অনেক সম্ভাবনা আছে এখানে।’ মনটা ভরে গেল এই লেখাটা পড়ে। অনেক ভালো থাকবেন, খুব ভালো।
আবদুল হক: ‘তরুণ প্রজন্ম বাংলাদেশকে অনেক দূর নিয়ে যাবে, এটি আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি’—আল্লাহর অশেষ কৃপা এমন একজন মানুষকে এ দেশে পাঠিয়েছেন। আপনার এ বিশ্বাস, তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। এ দেশকে অনেকেই খুব খাটো করে দেখে, যাদের জন্ম এ দেশেই। এদের কর্মকাণ্ড বা কথাবার্তা আমার মতো অনেকেই মনে মনে কষ্ট পান কিন্তু মুখে বলতে পারেন না। স্যার, এসব দুর্বল চিত্তের মানুষগুলো কবে মুক্তি পাবে, বলতে পারেন?

শহরবাসীকে কষ্টে রেখে কৃষককে বিদ্যুৎ দিয়েছে সরকার
গত বৃহস্পতিবার সিরাজগঞ্জে এ কথা বলেছেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। এ সম্পর্কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাঠক লিখেছেন: আমরা গ্রামে যাই। আত্মীয়স্বজনেরাও আসেন। মোবাইল ফোনে কথা হয়। আপনার কথার বিপরীত কথা বলছেন তাঁরা। জনগণের কষ্ট গ্রামে গিয়ে বুঝে আসুন।
মিজানুর রহমান: মাননীয় মন্ত্রী, বাংলাদেশ খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে—এটা খুবই ভালো সংবাদ। কিন্তু আপনার মতো একজন জনপ্রিয় নেত্রীর মুখ থেকে শুনলাম, গ্রামের লোক বিদ্যুৎ পাচ্ছে, যা মোটেও সত্য নয়। আমি গোপালগঞ্জের লোক। আমাদের ওখানে দৈনিক ১০-১২ বার বিদ্যুৎ যায়।
পাভেল: গত সপ্তাহে গ্রামে গিয়ে তিন দিন থেকে এলাম। মাত্র চার ঘণ্টার মতো বিদ্যুৎ ছিল। তাহলে আপনাদের পাঠানো বিদ্যুৎ গেল কই?

এজাহারের সঙ্গে ঘটনার অমিল
হরতালের সময় গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ১৮ দলীয় জোটের নেতাদের আসামি করা হয়েছে। এ সম্পর্কে গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলোয় এই বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মোহাম্মদ রহমান লিখেছেন: কারও কারও শক্তি থাকে মগজে। কারও কারও শক্তি থাকে বাহুতে। কারও কারও থাকে পকেটে। আবার কারও থাকে তর্জনীতে। সবচেয়ে শক্তিশালী তিনিই, যার শক্তি থাকে তর্জনীতে। তর্জনীর ইশারা ভয়ংকর!
মো. সায়দুল ইসলাম: খুব জোরে হাসতে ইচ্ছা করছে। পুলিশের যোগ্যতা নিয়ে আমার সব সময় সন্দেহ ছিল। এই অভিযোগ দেখার পর একটা বাচ্চাও বলতে পারবে, আসল ঘটনা কী। খুবই কাঁচা কাজ।
(পাঠকের মতামত বিস্তারিত পড়তে ও আপনার মতামত জানাতে ভিজিট করুন prothom-alo.com)

No comments

Powered by Blogger.