অসাধ্য সাধনের কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ-এভারেস্টে দ্বিতীয় বাংলাদেশি নারী

মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয় বাংলাদেশি নারী ওয়াসফিয়া নাজরীন এভারেস্টের চূড়ায় উঠে প্রমাণ করলেন, কষ্টসাধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ অভিযানেও নারীরা পুরুষের সমকক্ষ। শনিবার ভোরে ওয়াসফিয়া এই অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেন।


এর আগে নিশাত মজুমদার পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গে আরোহণ করে বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশি নারীর প্রথম বিজয়বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের মোট চারজন এভারেস্ট জয় করলেন। তাঁদের দুজন নারী। বাংলাদেশে নারী-পুরুষের এই সমতা অর্জনের বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা ওয়াসফিয়াকে জানাই অভিনন্দন।
১৯৭৫ সালের ১৬ মে জাপানের একজন নারী প্রথম এভারেস্ট জয় করেন। এর ১১ দিন পর আরোহণ করেন তিব্বতের এক নারী। এরপর আরও অনেক দেশের নারী এভারেস্ট জয় করেছেন। কিন্তু মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুজন নারীর এভারেস্ট জয়ের রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ।
পাহাড়ে ওঠার মতো দুঃসাধ্য কাজে সাফল্য অর্জনের সাধনায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন ওয়াসফিয়া। তিনি বিশ্বের সাত মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গে আরোহণের পরিকল্পনা করেন। ‘সেভেন সামিট’ নামে অভিহিত তাঁর এই দুর্গম গিরি অভিযানের জন্য বিশেষভাবে তিনি বেছে নেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪০ বর্ষপূর্তির সময়টি। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর তিনি দক্ষিণ আমেরিকার সর্বোচ্চ পর্বত অ্যাকোনকাগুয়া জয় করেন। এর আগে জয় করেন আফ্রিকার সর্বোচ্চ পর্বত কিলিমানজারো। আরও চারটি মহাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গে ওঠার অভিযান তিনি অব্যাহত রাখবেন।
ওয়াসফিয়া নিছক পর্বতারোহণের জন্যই এভারেস্টে যাননি। তাঁর অভিযানের মধ্য দিয়ে নারীর সাফল্যগাথায় একটি নতুন মাত্রা সংযোজনের প্রেরণা ছিল। তিনি এভারেস্ট অভিযানের আগে বলেন, ‘যদি এভারেস্ট জয় করতে পারি, তাহলে এই জয় সকল নির্যাতিত নারীর উদ্দেশে উৎসর্গ করা হবে।’ তাঁর সাফল্য নিশ্চয়ই বিশ্বের সব নারীকে নতুন শক্তি জোগাবে।
আপাতঅসম্ভবকে প্রথম সম্ভব করেন মুসা ইব্রাহীম। এরপর একে একে এম এ মুহিত, নিশাত মজুমদার ও ওয়াসফিয়া নাজরীন সাফল্য অর্জন করলেন। এখন আমরা অন্তত একটি বিষয়ে নিশ্চিত, বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীদের কাছে অসাধ্য বলে কোনো কিছু থাকতে পারে না।
এভারেস্ট জয় বাংলাদেশের সামনে এক নতুন দিক উন্মোচন করল।

No comments

Powered by Blogger.