কালান্তরের কড়চা-ইউনূস সাহেবকে সার্চ কমিটির প্রধানের পদে বসাতে হবে কেন? by আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্লজ্জ ও অবৈধ হস্তক্ষেপ কতটা বাড়াবাড়িতে পরিণত হয়েছে, তার প্রমাণ গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নিয়োগের অনুসন্ধান কমিটিতে ড. ইউনূসকে চেয়ারম্যান করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ওপর মার্কিন রাষ্ট্রদূত মজিনা সাহেবের এক ধরনের চাপ প্রদান।


সরকার ড. ইউনূসের সঙ্গে কোনো অন্যায় আচরণ করেছে কি না এটা অবশ্যই দেশের মানুষের বিবেচনায় উঠে আসত, যদি ড. ইউনূসের পেছনে একটি সুপারপাওয়ার এসে না দাঁড়াত এবং একজন মাত্র ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে একটি স্বাধীন দেশের সরকারের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি ও হুমকি প্রদর্শনের চেষ্টা না চালাত।
এটা এখন ড. ইউনূস বনাম বাংলাদেশ সরকারের ব্যাপার নয়। এটা এখন একটি ছোট উন্নয়নশীল দেশের ওপর বিশ্বের একমাত্র সুপারপাওয়ারের প্রভুত্বমূলক ইচ্ছা চাপিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। এখন বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক মানুষের পক্ষে বিচারের কোনো অবকাশ নেই। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর এই বিপজ্জনক হুমকির বিরুদ্ধে তাদের ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে এবং সরকার যাতে এই বিদেশি শক্তির অবাঞ্ছিত ও অন্যায় হস্তক্ষেপের কাছে নতি স্বীকারে বাধ্য না হয়, সে জন্য এই সরকারের পেছনে শক্তভাবে দাঁড়িয়ে তাকে সাহস জোগাতে হবে। নইলে বাংলাদেশের মতো ছোট ও দুর্বল দেশের পক্ষে আমেরিকার মতো সুপারপাওয়ারের মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না।
জাতীয় আপৎকালেই একটি দেশের সব দলমতের মানুষ সরকারের পেছনে একাট্টা হয়ে দাঁড়ায়। জাতীয় মর্যাদা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়। সরকারের ভুলত্রুটিকে তখন বিবেচনায় নেয় না। গত শতকের তিরিশের দশকে হিটলারের ইউরোপ দখলের অভিযান রোখার জন্য যখন ব্রিটিশ সরকার জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল, তখন এই যুদ্ধ ঘোষণা দ্বারা সরকার কোনো অন্যায় করেছে, তা ব্রিটেনের বিভিন্ন দলমতের একটি মানুষও বিবেচনা করেনি। তারা জাতীয় মর্যাদা ও অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ডান-বাম সবাই মিলে চার্চিল সরকারের পেছনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। হিটলারের ভয়াবহ ভি-রকেট হামলাও এই ঐক্য ভাঙতে পারেনি।
বর্তমানে ড. ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংককে কেন্দ্র করে যেভাবে শক্তিশালী বৈদেশিক হস্তক্ষেপ প্রকট আকার ধারণ করেছে, তাতে এটি আর ড. ইউনূস ও বর্তমান সরকারের মধ্যে বিরোধের কোনো ব্যাপার নয়। এটা যে বৈদেশিক হস্তক্ষেপ বনাম জাতীয় মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে, তা আগেই বলেছি। বৈদেশিক শক্তি ড. ইউনূসের পেছনে না দাঁড়ালে বাংলাদেশের মানুষ অবশ্যই বিবেচনা করতে পারত, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সরকার বিদ্বেষমূলক মনোভাব ও অন্যায় আচরণ দেখাচ্ছে কি না। কেউ এটাকে অন্যায় আচরণ ভাবলে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালে তখন তা অসঙ্গত হতো না।
কিন্তু বিষয়টি তো এখন একটি দেশে সরকার ও একজন নাগরিকের বিরোধ নয়। বিষয়টি একটি স্বাধীন দেশের সরকারের ওপর একটি বহির্শক্তির প্রভুত্বমূলক চাপ সৃষ্টির। এই পাপের কাছে নতি স্বীকার করলে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় মর্যাদার কোনো অস্তিত্ব থাকে না। দুর্ভাগ্যক্রমে বাংলাদেশের বিএনপি, জামায়াতের মতো দলগুলো এটাকে জাতীয় মর্যাদার প্রশ্ন হিসেবে না দেখে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা বিচার করে কেবল আওয়ামী লীগ সরকারের সমস্যা হিসেবে দেখছে এবং তাদের প্রচার-প্রপাগান্ডা দেখে মনে হয়, তারা চায় বৈদেশিক চাপের কাছে নতি স্বীকারে বাধ্য হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার নাকডলা খাক। এটা যে গোটা জাতির নাকডলা খাওয়া হবে, জাতীয় মর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে- এটা বোঝার মতো দূরদর্শিতা অথবা দেশপ্রেম কোনোটাই তাদের আছে কি না সন্দেহ।
গ্রামীণ ব্যাংকের নতুন ম্যানেজিং ডিরেক্টর নিয়োগের সার্চ বা অনুসন্ধান কমিটির প্রধান হিসেবে সরকার কেন ড. ইউনূসকে চায় না তার কারণ বোধগম্য। তাঁর পরিচালনায় গ্রামীণ ব্যাংকে নানা অনিয়ম ঘটার অভিযোগ উঠেছিল এবং তাঁর প্রধান পরিচালক পদে থাকার মেয়াদও শেষ হয়ে গিয়েছিল। সরকার তাঁকে সম্মানজনকভাবে অবসর গ্রহণের এবং অবসর গ্রহণের পর ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাাকর প্রস্তাবও দিয়েছিল। প্রস্তাবটি স্বয়ং দিয়েছিলেন তাঁর বন্ধু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ড. ইউনূস প্রস্তাবটি সরাসরি নাকচ করেন এবং সরকারের সঙ্গে অধিকতর কোনো আলোচনার পরিবর্তে নিজেই উচ্চ আদালতে মামলা করেন। সরকার মামলায় যায়নি।
কতটাই সত্য জানি না, তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জেনেছি, ড. ইউনূসকে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য উস্কে দিয়েছিলেন ড. কামাল হোসেনসহ হাসিনাবিদ্বেষী আইনজীবী মহলের কয়েকজন। তাঁদের সঙ্গে একটি বাংলা এবং একটি ইংরেজি দৈনিক যোগ দিয়েছিল। তাদেরও হাসিনাবিদ্বেষ সবার জানা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, ড. ইউনূসের বিষয়টিকে একটি রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করা এবং আওয়ামী সরকার বনাম ড. ইউনূস একটা সংঘাত বাঁধিয়ে সরকার এবং হাসিনাকে এক হাত নেওয়া। ড. ইউনূস আমেরিকায় বরপুত্র এবং তাঁর পেছনে মার্কিন সরকার, বিশেষ করে ক্লিনটন দম্পতির (হিলারি ক্লিনটন এখন আবার আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী) আশীর্বাদ ও অনুগ্রহ থাকায় হাসিনা সরকার এক ধমকেই ঠাণ্ডা হয়ে যাবে এবং দেশের মানুষের কাছে মর্যাদা হারাবে এবং ড. ইউনূস প্রবল প্রতাপে রাষ্ট্রশক্তির মাথা নুইয়ে দিয়ে আবার গ্রামীণ ব্যাংকের মসনদে বসবেন- এটাই ছিল তাদের প্রত্যাশা।
হাসিনা সরকার যদি সত্যি তখন মাথা নত করত, তা হলে ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত সম্মান বাড়ত না। দেশ ও জাতির সম্মান ধুলায় লুটাত। ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত সম্মান যতটাই উচ্চ হোক, তা কি দেশ ও জাতির সম্মানের চেয়ে বড়? কিন্তু ইউনূস-প্রেমিকদের কাছে দেশের মর্যাদার চেয়ে ব্যক্তির মর্যাদা বড় হয়ে উঠেছে। এখানেই এই 'নোবেল হিরো' এবং তাঁর সমর্থক ও অনুসারীদের দেশপ্রেমের আসল পরিচয় পাওয়া যায়।
আগেই লিখেছি, গ্রামীণ ব্যাংকের একজন নতুন এমডি নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটির প্রধান পদে ড. ইউনূসকে বসানোর ব্যাপারে বর্তমান সরকারের আপত্তির কারণ আমরা বুঝি। যে ড. ইউনূসকে সরকার নানা অনিয়মের কারণে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধানের পদ থেকে সরিয়েছে, তাঁকে সার্চ কমিটির প্রধানের পদে বসিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে আবার গ্রামীণ ব্যাংকের কর্তৃত্বে ফিরে আসতে দিতে সরকার পারে না। সরকার যে এ ব্যাপারে না বলেছে, তার উদ্দেশ্যটা স্পষ্ট।
কিন্তু মার্কিন সরকার এই গ্রামীণ ব্যাংকের কর্তৃত্বে তাঁকে ফিরিয়ে আনার জন্য এতটা অস্থির এবং বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কেন? একটা ছোট দেশের একটি ছোট ব্যাংকের কর্তৃত্বে কে থাকবে, তাও নির্ধারণ করে দেওয়ার অধিকার কি আমেরিকার হাতে চলে গেছে? আর সরকারের একার ইচ্ছায় তো ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অপসারিত হননি। তিনি সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে নিজেই দেশের সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। দেশের শ্রেষ্ঠ আইনজীবীদের নিজের পক্ষে নিয়োগ করেছেন। সেই মামলায় তিনি হেরে গেছেন। সেই রায়ও তিনি মানতে চান না। অর্থাৎ তিনি নিজেকে দেশ, জাতি, সরকার এমনকি দেশের সর্বোচ্চ আদালতেরও ঊধর্ে্ব মনে করেন। এমন একজন ব্যক্তির পেছনে আমেরিকার মতো একটি বিদেশি অপশক্তির অন্ধ সমর্থন জোগানোর রহস্যটা কী? তাঁর চামচা দুটি মিডিয়াই বা কি কারণে জাতীয় মর্যাদা, এমনকি দেশের উচ্চ আদালতের রায়কে পর্যন্ত উপেক্ষা করে ব্যক্তির পাদবন্দনাকে গুরুত্ব দেয়? কী করে তাঁকে 'নোবেল হিরো' আখ্যা দিয়ে এখনো প্রচার-প্রগাগান্ডা চালায়?
বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, দেশের উচ্চ আদালতে মামলা করে হেরে যাওয়ার পর আন্তর্জাতিক খ্যাতির অধিকারী এই ব্যক্তির যেখানে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান দেখিয়ে নিজের সম্মান রক্ষা করা উচিত ছিল, তিনি সেখানে তা না করে তাঁর বিদেশি বন্ধু ও অভিভাবকদের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে গ্রামীণ ব্যাংকের কর্তৃত্বে ফিরে আসার চেষ্টা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র একটি মহাপ্রতাপশালী দেশ। একটি ছোট ও দুর্বল দেশের ওপর তারা চাপ সৃষ্টি করতেই পারে। কিন্তু তাদের অনুগ্রহভাজন একজন মাত্র ব্যক্তির স্বার্থে আমেরিকার মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশ, কথায় কথায় যারা আইনের শাসনের কথা বলে, তারা কী করে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়কেও পাশ কাটিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে তাদের নির্দেশ মান্য করার জন্য চোখ রাঙায়, তা আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধির অগম্য। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো দ্বিতীয় পরাশক্তির পতনের পর সারা বিশ্ব কি মগের মুল্লুক হয়ে গেল?
প্রধানমন্ত্রী হাসিনা এবং অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দুজনকেই অভিনন্দন জানাই, তাঁরা এখন পর্যন্ত অন্যায় মার্কিন চাপের কাছে মাথানত করেননি। ১ এপ্রিল রবিবারের ঢাকার কাগজের খবরে দেখা যায়, মার্কিন রাষ্ট্রদূত মজিনা সাহেবের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নিয়োগের জন্য অনুসন্ধান কমিটির প্রধান পদে ড. ইউনূসকে বসানোর প্রস্তাব সরকার নাকচ করে দিয়েছে। তিনি বলেছেন, আমেরিকা দীর্ঘদিন ধরে গ্রামীণ ব্যাংক এবং বিশেষ করে ব্যাংকের এমডি নিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়ে আসছে।
অর্থমন্ত্রীর এই উক্তির পর বুঝতে কষ্ট হয় না, অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে এই শেষের বৈঠকেও মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিশ্চয়ই ড. ইউনূসের বিষয়টিই সামনে এনেছেন এবং এ ব্যাপার সরকারের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। এই চেষ্টা বাংলাদেশ কেন, ছোট-বড় কোনো স্বাধীন দেশের প্রতিই মর্যাদাজনক আচরণ নয়। বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত পদে নিযুক্ত হয়ে ঢাকার মাটিতে পা দেওয়ার প্রথম দিনেই মজিনা সাহেব গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশের এখন বড় বড় সমস্যা। বিদ্যুৎ ঘাটতি, তিস্তার পানি, টিপাইমুখ, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইত্যাদি সমস্যার অন্ত নেই। সেসব রেখে গ্রামীণ ব্যাংকের মতো বাংলাদেশের বহু ব্যাংকের মধ্যে একটি ব্যাংক কী জন্য মার্কিন সরকারের এত শিরঃপীড়ার কারণ হয়ে উঠল, তার রহস্য বোঝা খুব কঠিন নয়। 'বুঝহ লোক যে জানহ সন্ধান!'
ড. ইউনূসের কাছে আমার একটি বিনীত জিজ্ঞাসা, তিনি কি নিজের স্বার্থ ও সম্মানকে দেশের স্বার্থ ও জাতীয় মর্যাদার চেয়ে বড় মনে করেন? যদি মনে না করেন, তাহলে তিনি দেশের সরকার ও আদালতের সিদ্ধান্তকে ব্যর্থ করার জন্য বিদেশি শক্তির সাহায্য গ্রহণ করেন কেন? এটা কি দেশপ্রেম? গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে তাঁর ওপর কোনো অবিচার হয়ে থাকলে তিনি নিজে এবং দেশের ডান-বামের বিরোধী রাজনৈতিক দলের দ্বারা একটি শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলেন না? তাঁর জনবল ও অর্থবলের কমতি আছে? দু-দুটি চামচা মিডিয়া তো তাঁর সেবাদাসের ভূমিকায় নিত্য নিরত। তিনি বিদেশি শক্তি ও দাতা সংস্থাগুলোর কাছে ছুটোছুটি করেন কেন? শেখ হাসিনাকে জব্দ করতে চেয়ে গোটা দেশের ক্ষতির কারণ হচ্ছেন কেন? বাজারে গুজব, শেখ হাসিনার ওপর প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য আপনিই নিজের প্রভাব খাটিয়ে পদ্মা ব্রিজের জন্য বিশ্ব ব্যাংক ও অন্যান্য সহযোগী সংস্থার অর্থায়ন বন্ধ রেখেছেন। অভিযোগটি কি সঠিক? যদি সঠিক না হয়, তা হলে আপনি নিজে একটু বলুন, অথবা আপনার চামচা দুই পত্রিকার দুই সম্পাদককে দিয়ে তা বলান। আপনার পক্ষে প্রচারণায় তারা তো মানিক জোড়।
অস্বীকার করতে পারবেন না, বাংলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতায় পাকিস্তানের জারদারি এবং আফগানিস্তানের কারজাইয়ের মতো একজন শিখণ্ডি খাড়া করার জন্য গ্লোবাল ক্যাপিটালিজম ও ইম্পেরিয়ালিজম আপনাকেই পছন্দের লোক হিসেবে বেছে নিয়েছিল এবং আপনার মাথায় নোবেল পুরস্কারের শিরোপা পরিয়ে আপনার ইমেজ ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বাংলাদেশের এক-এগারোর সময় আপনাকে রাজনৈতিক মঞ্চে নামানো হয়েছিল। আপনি নিজের দোষে, সৎসাহসের অভাবে পারলেন না প্রভুদের ইচ্ছা পূরণ করতে। তবু আপনাকে নিয়ে তাদের এঙ্পেরিমেন্ট হয়তো এখনো শেষ হয়নি। তাই গ্রামীণ ব্যাংকের মঞ্চে আবার আপনাকে ফিরিয়ে এনে পেছনের দরজা দিয়ে রাজনৈতিক মঞ্চে বসানোর চেষ্টা হচ্ছে কি না কে বলবে? আপনার চামচা ও চাটুকাররা এখনো জয়ঢাক বাজিয়ে চলেছে। পারবেন এবার প্রভুদের
ইচ্ছা পূরণ করতে?

লন্ডন, ২ এপ্রিল ২০১২, সোমবার

No comments

Powered by Blogger.