একাত্তরের এই দিনে

মুক্তিবাহিনী কুমিল্লার জগন্নাথদীঘিতে পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থানের ওপর অকস্মাৎ আক্রমণ চালায়। অভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর ১৯ সৈন্য হতাহত হয়। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন লে. ইমামুজ্জামান। * মুক্তিবাহিনীর টহলদার দল ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা সড়কের ওপর উজানিশার সেতুর কাছে পাহারারত পাকিস্তানি সৈন্যদের ক্যাম্পে আক্রমণ চালায়।


এ অকস্মাৎ আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনীর ১৩ সৈন্য নিহত ও তিনজন আহত হয় এবং বিস্ফোরক লাগিয়ে একটি স্প্যান ধ্বংস করা হয়।
* পাকিস্তানি সৈন্যরা ভারী কামানের সাহায্যে মুক্তিবাহিনীর পাটেশ্বরী প্রতিরোধ ঘাঁটিতে তীব্র আক্রমণ চালায়। পাকিস্তানি সৈন্যরা ধরলা নদীর দক্ষিণ তীর থেকে গোলাবর্ষণ শুরু করে। এ আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা ভুরুঙ্গামারীর দিকে ফিরে আসে এবং পাটেশ্বরী প্রতিরোধ ঘাঁটি ভেঙে যায়।
* কুড়িগ্রাম এলাকায় মুক্তিবাহিনীর একটি টহলদার দলের সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি বর্বরদের বেশ ক্ষতিসাধন করে নিরাপদে ঘাঁটিতে ফিরে আসে।
* কুড়িগ্রামের কুলারঘাট নামক স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের 'রেকি' দলের সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর সম্মুখ সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে পাকিস্তানি বাহিনীর দুই সৈন্য নিহত হয়।
* ছাতকে ১৮ জন যুবক মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে যাওয়ার পথে বেতুরার ফকির চেয়ারম্যান ও তার দলের হাতে ধরা পড়েন। তাঁদের তারা পাকিস্তানি হায়েনাদের হাতে তুলে দেয়। হায়েনার দল এই ১৮ জন যুবকের ১৭ জনকে ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ রাস্তায় মাধবপুরের নিকট সারি বেঁধে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে। এতে সবাই নিহত হন। বাকি অন্যজন পালিয়ে জীবন বাঁচান।
* সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানি বর্বররা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। বরুঙ্গাবাজারে বর্বরদের পৈশাচিক নির্যাতনে ৮১ জন নিরীহ মানুষ নিহত হয়।
* মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের চার্লস ডাবি্লউ ব্রে ওয়াশিংটনে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মনে করে পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি পাকিস্তানের একটি ঘরোয়া রাজনৈতিক ব্যাপার। যুক্তরাষ্ট্র কামনা করে না এ থেকে উপমহাদেশে কোনো দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক। সে জন্য মার্কিন সরকার পূর্ব পাকিস্তান পরিস্থিতি সম্পর্কে সংযত মনোভাব গ্রহণ করার জন্য ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
* নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী কিথ হেলিয়র্ক সিঙ্গাপুর সফরকালে উপমহাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের বলেন, নিউজিল্যান্ড পূর্ব পাকিস্তানের ট্র্যাজেডিতে নীরব ও নিষ্ক্রিয় থাকতে পারে না। নিউজিল্যান্ড সরকার ও জনগণ মানবিক কারণে বাঙালি উদ্বাস্তুদের প্রতি সহানুভূতিশীল।
* করাচর চীনা কনসুলেট জেনারেল নিয়েহ কুন চি বলেন, স্বাধীনতা রক্ষার ন্যায্য সংগ্রামে চীন সব সময় পাকিস্তানকে সমর্থন জানাবে। বৈদেশিক আক্রমণ ও হস্তক্ষেপ মোকাবিলায় চীন পাকিস্তানিদের পাশে দাঁড়াতে কুণ্ঠাবোধ করবে না।

সৌজন্যে : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

No comments

Powered by Blogger.