গাংনীতে বিএনপির হামলায় আ. লীগের দুজন নিহত

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় বোমা মেরে ও কুপিয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতাসহ দুজনকে হত্যা করেছে বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা। খাসজমির দখল নিয়ে বিরোধের জের ধরে গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের গোয়াল গ্রামের রিফিউজিপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে।


ঘটনার পর বিএনপির সাত কর্মী-সমর্থকের বসতবাড়ি ও গোয়ালঘরে অগি্নসংযোগের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন গোয়াল গ্রামের আতাহার হোসেন ও হাবিল হোসেন। এর মধ্যে আতাহার হোসেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য। এ ছাড়া তিনি স্থানীয় দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন।
হামলার ঘটনায় গোয়াল গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর জের ধরে যাতে কোনো সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশ ও র‌্যাব অবস্থান করছে।
গ্রামবাসী ও পুলিশ জানায়, গ্রামের মাঠের একটি খাস জমি নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে গত বছরের আগস্ট মাসে সংঘর্ষে আতাহারের ভাই ইলিয়াস হোসেন নিহত হন।
স্থানীয় লোকজন জানায়, যে সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, তখন ওই জমির দখল সেই সরকার সমর্থকদের হাতে চলে যায়।
পুলিশ জানায়, জমির দখল নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা আতিয়ার রহমানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ নেতা আতাহার হোসেনের বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষে ইলিয়াস নিহত হওয়ার ঘটনায় আতিয়ারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ১৫ দিন আগে তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিনে ছাড়া পান।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে আতাহার, হাবিল ও লালন নামের আরেকজন একই মোটরসাইকেলে করে গ্রামের রিফিউজিপাড়া হয়ে যাওয়ার সময় আতিয়ারের নেতৃত্বে তাঁর লোকজন আতাহারদের ওপর বোমা নিক্ষেপ করে। এতে মোটরসাইকেল থেকে তাঁরা পড়ে যান। এরপর হামলাকারীরা তাঁদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই হাবিলের মৃত্যু হয়।
গ্রামের লোকজন আতাহার হোসেনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। লালনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাঁকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
মটমুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালের কণ্ঠকে জানান, প্রায় ২০ বিঘা খাস জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে এ বিরোধ চলে আসছে।
যোগাযোগ করা হলে গাংনী থানার ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, এ ঘটনায় লালন বাদী হয়ে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেছেন। এই ঘটনায় শরিফুল ইসলাম নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই আতিয়ার রহমান পলাতক রয়েছেন।
ওসি জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.