নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন, জেলা পরিষদ প্রশাসকদের প্রধানমন্ত্রী

সিলেট অফিস: জাসদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু বলেছেন, টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের কথার মধ্যে কোন মিল নেই। এভাবে সরকার চলতে পারে না। টিপাইমুখ বাঁধ ইস্যুতে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। সরকারের    পৃষ্ঠা ২০ কলাম ৫
অভ্যন্তরীণ সমন্বয় সাধন করে টিপাইমুখ ইস্যুতে একই ধরনের বক্তব্য দিতে হবে। গতকাল বিকালে সিলেটে টিপাইমুখ বাঁধ প্রতিরোধ আন্দোলনের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। নগরের কোর্ট পয়েন্টে বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলা সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন প্রতিরোধ আন্দোলনের আহ্বায়ক এডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্য। সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সিপিবি’র কেন্দ্রীয় সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ আবু জাফর আহমদ, জাতীয় শ্রমিক জোটের কেন্দ্রীয় সভাপতি নারী নেত্রী শিরিন আখতার। বক্তৃতায় হাসানুল হক ইনু টিপাইমুখ বাঁধ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভীর সমালোচনা করে বলেন, ভারত সরকারের পক্ষে কথা বলার জন্য বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা গওহর রিজভীকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। এ ধরনের উপদেষ্টাকে সরকারে রাখা উচিত নয়। আমরা যুদ্ধ করে যে মাটিকে স্বাধীন করেছি, সেই মাটির পরিবেশ-প্রকৃতি ও মানুষকে রক্ষা করার জন্য জান বাজি রেখে টিপাইমুখ বাঁধ ঠেকানোর সংগ্রামে একাত্ম থাকবো। সিপিবি নেতা সৈয়দ আবু জাফর বলেন, টিপাইমুখ বাঁধ ইস্যুতে সরকারের মৌনতা নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বহিঃপ্রকাশ। তবে টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে বিরোধিতা নিছক কোন ভারত বিরোধিতা নয়। দুই দেশের মানুষের মিলিত প্রতিবাদ। এ বাঁধ যাতে না হয়- এ জন্য জনগণের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। নারী নেত্রী শিরিন আখতার বলেন, আমাদের নদী ও দেশ বাঁচাতে টিপাইমুখ বাঁধ প্রতিহত করতে হবে। আমরা সবাই সংগ্রামে একাত্ম। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এ বাঁধ নির্মাণ প্রতিরোধ করতে হবে। নদীর উপর কোন শাসন নয়, বরং আন্তর্জাতিক নদী আইনের রীতি-নীতিতে পরিবেশবান্ধব নদী আন্দোলন করতে হবে। স্থানীয়দের মধ্যে গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ব্যারিস্টার মো. আরশ আলী, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এমাদউল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন, সিলেট জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক লোকমান আহমদ, সিলেট প্রেস ক্লাবের সভাপতি আহমেদ নূর, ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সিকান্দর আলী, সাম্যবাদী দলের কেন্দ্রীয় নেতা আফরোজ আলী, সচেতন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, সম্মিলিত নাট্যপরিষদের সভাপতি সৈয়দ মনির হেলাল, খেলাঘর সিলেট জেলা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা পুরঞ্জয় চক্রবর্তী বাবলা, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম, ন্যাপ সিলেট জেলা আহ্বায়ক ইসহাক আলী, প্রতিরোধ আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট এনাম আহমদ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অসিত ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের হৃদেশ নন্দী, যুব ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রমেন্দ্র কুমার চন্দ, ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান, শাবিপ্রবি সংসদের সভাপতি জুনায়েদ আহমদ, ছাত্রমৈত্রীর সিলেট জেলা আহ্বায়ক কাজল দাস, ছাত্রফ্রন্ট সিলেট মহানগর সভাপতি মিজানুর রহমান রাসেল প্রমুখ বক্তব্য দেন। সমাবেশ পরিচালনা করেন বাসদ সিলেট জেলার সমন্বয়ক উজ্জ্বল রায়। প্রতিরোধ আন্দোলনের আহ্বায়ক বেদানন্দ ভট্টাচার্য বিভাগীয় সমাবেশ শেষে পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামী ২০শে জানুয়ারি সুরমা-কুশিয়ারা-মেঘনা অববাহিক জেলাগুলোর অংশগ্রহণের আঞ্চলিক প্রতিনিধি সভা এবং আগামী ১৩ই ফেব্রুয়ারি সুরমা-কুশিয়ারা-মেঘনা অববাহিক জেলা ও উপজেলার প্রশাসনিক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ।

No comments

Powered by Blogger.