আমি এখন উত্তেজনার মধ্যে আছিঃ মোনালিসা by অনন্যা আশরাফ

নাচের দুরন্ত উড়াল পঙ্খী মোজেজা আশরাফ মোনালিসা। নাচ শিখেছেন সেই ছোটবেলা থেকে। মডেলিং আর অভিনয় তাকে তারকা খ্যাতি এনে দিলেও পোষা ময়নার মতো নাচকে আগলে রেখেছেন আদরে আদরে।

মোনালিসাকে কখনো কখনো নাচতে দেখা যায় দেশ-বিদেশের বড় বড় স্টেজ শোতে। টিভিপর্দায় একাধিক বিজ্ঞাপনচিত্রে প্রতিদিন বহুবার এই গ্ল্যামার গার্লের মিষ্টি হাসি দর্শকরা দেখতে পেলেও  বছরে বড়জোর দু’একবার বিশেষ বিশেষ দিনে তাকে নৃত্যের ঝংকার তুলতে দেখা যায়। তাই বলে নাচকে অবহেলা করছেন, এটি বলা যাবে না মোটেও। বাসায় প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে দু’তিন দিন নৃত্যচর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
প্রতি বছরের মতো এবারও ২৯ এপিল রোববার বিশ্ব জুড়ে উদযাপন করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক নৃত্যদিবস। বাংলাদেশের ছোটবড় বিভিন্ন শহরে উৎসব-আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে দিনটি পালন করছেন নৃত্যশিল্পীরা।

বিশ্বের সব নৃত্যশিল্পীর উৎসবের এইদিনে আমাদের প্রিয়মুখ মোনালিসা কী করছেন?  এরকমই কিছু প্রশ্ন নিয়ে আন্তর্জাতিক নৃত্যদিবসে তার মুখোমুখি হয় বাংলানিউজ।

বাংলানিউজ : আন্তর্জাতিক নৃত্যদিবসটি কীভাবে পালন করছেন?

মোনালিসা : আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবসে ঘরে বসে হরতাল পালন করছি। এই দিনটি সামনে রেখে বেশ কিছু পরিকল্পনা ছিল আমার। আজকে অনেক জায়গায় নাচের অনুষ্ঠান হচ্ছে, নাচ নিয়ে সেমিনার-এক্সবিশন হচ্ছে। নাচের উৎসব চলছে শিল্পকলায়। খুব ইচ্ছে ছিল নৃত্যদিবসের সারাটা ঘুরে ঘুরে নানা অনুষ্ঠানে যাবো। নৃত্য-সংগঠনগুলোতে আমার অনেক বন্ধুরাই জড়িত। ভেবেছিলাম তাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হবে, তাদের পারফর্মেন্স দেখবো। এ জন্য এইদিন কোনো শুটিং রাখিনি। কিন্তু তা আর হলো না। হরতালে ঘরে বসেই নৃত্য দিবস উদযাপন করতে হচ্ছে।

বাংলানিউজ : শুধুই অনুষ্ঠান দেখার পরিকল্পনা!  আন্তর্জাতিক নৃত্যদিবসের কোন অনুষ্ঠানে  পারফর্ম করার পরিকল্পনা ছিল না?

মোনালিসা: আসলে চাইলেই তো স্টেজে উঠে নৃত্য পরিবেশন করা যায় না। নাচের জন্য দরকার প্রস্তুতি আর প্র্যাকটিস। কাজ নিয়ে একটানা কিছুদিন খুব ব্যস্ত ছিলাম। গতমাসে সপ্তাহ দুয়েক কাটিয়ে এলাম ভারতে। ২টি নতুন বিজ্ঞাপনের শুটিং শেষ করে দেশে ফিরি। কিছুদিন দেশের বাইরে থাকায় অনেক কাজ জমে গিয়েছিল। এসেই নাটকের কাজ শুরু করতে হয়েছে। বিশ্রাম নেওয়ারও সময় পাই নি। নাচের প্রস্তুতি নেব কীভাবে ! তবে আন্তর্জাতিক নৃত্যদিবসে অন্যদের নাচ উপভোগ করার ইচ্ছে ছিল, তা তো আর হলো না।

বাংলানিউজ : এখন ব্যস্ততা কী নিয়ে চলছে? ঈদের প্রস্তুতি কী এখনই শুর হয়ে গেছে?

মোনালিসা : নিয়মিত যা কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি তাই করছি। তিনটি নতুন ধারাবাহিক নাটকের কাজ শুরু করলাম। নাটক তিনটি হলো  ‘আজগর জাদুকর’, ‘উইল পাওয়ার’ ও ‘ফাঁদ’। বেশ কিছু একপর্বের নাটকেও কাজ করেছি। এ মুহূর্তে মনে পড়ছে ‘চোখ গেলে পাখি ফিরবে না’, ‘সমুদ্রে আজ ভিন্ন বাতাস’, ‘মায়া’, ‘টি-শাট’, ‘শঙ্খচিল ফিরবে না ঘরে’, ‘স্পর্শের বাইরে’ প্রভৃতি নাটকের নাম। ঈদের নাটকের কাজ এখনও শুরু করিনি। প্রস্তাব পেয়েছি বেশ কজন নির্মাতার কাছ থেকে। নাটকের গল্প আর চরিত্র পছন্দ হলে এবারের ঈদের বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করতে পারি। এর বাইরেও একাধিক চ্যানেল থেকে ঈদের ম্যাগাজিন আর টকশোতে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছি। এরকম একাধিক বিনোদনধর্মী অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার ইচ্ছে আছে।

বাংলানিউজ : নাচ নিয়ে একটা নতুন ধরণের একটি অনুষ্ঠান করবেন বলে আপনি জানিয়েছিলেন। ঐ কাজটার কী অবস্থা?

মোনালিসা : নাচের প্রতি আমার আবেগটা একটু বেশি। সেই থেকেই এবার একটি নাচের অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা চুড়ান্ত করেছি। এ অনুষ্ঠানটি পরিচালনার কাজটিও আমি করবো। একেবারেই নতুন আইডিয়া নিয়ে আমি কাজটি করবো। এখন আমি কাজটি করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এটা নিয়ে আমি এখন একধরনের উত্তেজনার মধ্যে আছি।

বাংলানিউজ : এতে কী ধরনের নাচ থাকছে একক নৃত্য নাকি অন্যকিছু? আপনি নিজেও কি এ অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করবেন?

মোনালিসা : আরে না। এটি কোনো একক নৃত্যের অনুষ্ঠান হচ্ছে না। একক নৃত্যানুষ্ঠান তো দর্শকরা আগেও অনেক দেখেছেন, আগামীতেও অনেকে দেখবেন। অন দ্য স্ক্রিন আমার না থাকার সম্ভাবনাই বেশি। ৮ জন সেলিব্রেটিকে নিয়ে নাচের অনুষ্ঠানটি সাজানো হবে। তাদের প্রত্যেকেই মেয়ে। ইয়াং জেনারেশনের সেলিব্রিটি নৃত্যশিল্পীদের নিয়ে এটি সাজাবো। আমি আশা করছি, দর্শকদের গতানুগতিক কাজের পরিবর্তে ভিন্নধারা নাচ উপহার দেবো ?

বাংলানিউজ : আপনার পরিচালনায় ভিন্নধর্মী এ নৃত্যানুষ্ঠানটি কবে নাগাদ দেখতে পাবো?

মোনালিসা : ভিন্নধর্মী অনুষ্ঠান সবসময় কোন বিশেষ দিনেই ভালো লাগে। আমার পরিচালনায় প্রথম এ অনুষ্ঠান আমি ঈদকে সামনে রেখেই তৈরি করবো। । ঈদের পর হয়তো আরো বড় ক্যানণাসে ধারাবাহিক নাচের অনুষ্ঠান নির্মাণের পরিকল্পনা করতে পারি।

No comments

Powered by Blogger.