গণতন্ত্র-তিউনিসিয়া: মানুষ কখন বিদ্রোহ করে by ফারুক ওয়াসিফ

পালানোর পথ দীর্ঘই হয়। বেন আলী যখন বুঝলেন যে তাঁর দিন শেষ, তখন একটা প্রশ্নই তাঁর মনে জেগেছিল: পালাব কোথায়? মনের পর্দায় সিনেমার মতো ভেসেছিল কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধানের মুখ। দেশ বলতে স্বৈরশাসকেরা মানুষ বোঝেন না, বোঝেন শাসনক্ষমতার শিখরে বসে থাকা কোনো ব্যক্তিকে।


জনগণ তাঁদের কাছে ‘চালানোর’ আর ‘মানানোর’ বিষয়। ভাঁওতা আর ভয় তাঁদের অস্ত্র। কিন্তু এমন দিন আসে, যখন মানুষ উঠে দাঁড়ায় এবং ভয়কেই ভয় দেখাতে শেখে। তিউনিসিয়ায় এখন তেমন দিন এসেছে। তাই বেন আলীকে উদ্ধারকর্তা খুঁজতে হচ্ছে। ভাবতে হচ্ছে সাবেক ঔপনিবেশিক প্রভুরাষ্ট্র ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট সারকোজির কথা, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কথা। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের কথাও নিশ্চয় তিনি ভেবেছিলেন। এঁরা কেউ কি এত দিনের অনুগতকে আশ্রয় দেবেন না? এঁদের কি কৃতজ্ঞতা নেই? তিনি কি দেশের অর্থনীতিকে বিদেশিদের জন্য খুলে দেননি? ইউরোপীয় অর্থনীতির জন্য সস্তা করে দেননি যুব প্রজন্মের শ্রমকে? আইএমএফ ও ওয়ালস্ট্রিটের কর্তাদের মর্জিমাফিক অর্থনীতির কাছা খুলে দেওয়াসহ রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যক্তিমালিকানায় ছেড়ে দেননি? মার্কিন ওয়ার অন টেররের সেবক হিসেবে দেশ থেকে ‘সন্ত্রাসীদের’ বিতাড়ন করেননি?
প্যারিসের আকাশে বিমান নিয়ে চক্কর খেতে খেতে এসব কথা তিনি নির্ঘাত ভাবছিলেন। আবর্জনা কেউ ঘরে তোলে না। জনগণকে যে দাবিয়ে রাখতে পারে না, নিলামে তুললেও তেমন স্বৈরশাসককে কেউ কানাকড়ি দিয়েও কিনবে না। এঁদের স্থান আস্তাকুঁড়। তা হলেও এমন রাষ্ট্র আছে, যা ইউরো-মার্কিনের আবর্জনা সাফের দায়িত্ব নেয়। তাদের হয়ে অগণতান্ত্রিক শক্তির পরিচর্যা করে। তাবৎ গণবিরোধী মুসলিম শাসকদের মুরব্বি, রক্ষণশীলতার দুর্গ সৌদি আরব সেই কাজের আঞ্চলিক ঠিকাদার। বাংলাদেশের এরশাদ, পাকিস্তানের পারভেজ মোশাররফদের মতো ব্যক্তিদের বিপদে সৌদি রাজপরিবারই ভরসা। বেন আলীর বিমান তাই প্যারিসের আকাশে বাড়ি খেয়ে সৌদির দিকেই নাক ঘুরাল। আশ্রয়ও জুটল, যেমন জুটেছিল উগান্ডার ইদি আমিনের।
পালানোর পথ দীর্ঘই হয়। এই দীর্ঘ পথে তাঁকে তাড়া করেছে মুহাম্মদ বুয়াজিজি নামের এক যুবকের প্রতিবাদের তাপ আর তাঁর পোড়া মাংসের গন্ধ। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস, তার পরও পুঁজিহীন, চাকরিহীন এই যুবকের জীবিকার উৎস এক ঠেলাগাড়িতে ভর্তি শাকসবজি। পুলিশ সেটাও কেড়ে নিল। বুয়াজিজি আর কী করতে পারেন? হেঁটে হেঁটে পৌঁছালেন এক সরকারি দপ্তরের সামনে। গায়ে আগুন দিলেন, আর সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ল সবখানে। এক যুবকের প্রতিবাদের প্রতিধ্বনি জাগল সব যুবকের মনে। যে আগুনে বুয়াজিজি পুড়েছেন, সেই একই আগুনে তো তাঁরাও দগ্ধ হচ্ছেন। এই আগুনের নাম স্বৈরশাসন ও দুর্নীতি। বুয়াজিজি এভাবে না জেনেই বহু প্রতীক্ষিত গণ-অভ্যুত্থানের সলতেটা জ্বালিয়ে দিলেন। পুলিশের গুলিতে আরও ৯৯ জনের জীবন গেল। বাকি ইতিহাস সবাই জানে। মিসরের বাদশাহ ফারুক আর ইরানের রেজা শাহ পাহলভির পলায়নের অনেক দিন পর আবার কোনো আরব শাসক বিতাড়িত হলেন।
শাসক বদলের পদ্ধতি দুই রকম। যুদ্ধ অথবা গণ-অভ্যুত্থান। আফগানিস্তান ও ইরাকের সরকার বদলাতে চালাতে হয়েছিল আগ্রাসন। ফলাফল, তেলের কড়াইয়ের বদলে জ্বলন্ত উনুনের জীবন। আর তিউনিসিয়া দেখিয়েছে, পরাশক্তি-সমর্থিত সরকার বদলের একমাত্র উপায় গণবিপ্লব। ফ্রান্স সেনা পাঠাতে চেয়েছিল, পর্দার আড়ালে আমেরিকা চেলেছিল নানা ঘুঁটি। তবু সব ওলট-পালট হয়ে গেল। ওপরের মানুষ পতিত হলো নর্দমায় আর নিচের মানুষ উঠে এল ওপরে। পাশ্চাত্য-সমর্থিত ‘রঙিন বিপ্লবের’ সঙ্গে তিউনিসিয়ার রক্তাক্ত পরিবর্তনের পার্থক্য এটাই। ওই সব ‘বিপ্লব’ ছিল পশ্চিমা শক্তি ও বিশ্ব মিডিয়ার সমর্থনে ওপরের তলার লোকের। আর তিউনিসিয়ায় যা ঘটছে, তার কর্তা-কর্ত্রী সেদেশের জনগণ।
বিপ্লব ও গণ-অভ্যুত্থানের সৌন্দর্য ও শক্তি এই যে, শাসিত-নির্যাতিত-উপেক্ষিত মানুষ এর স্পর্শেই অনুভব করে তার শক্তি ও মর্যাদা। তারা যেমন বাঁচতে শেখে, তেমনি মানুষের স্বার্থে হাসিমুখে মরতেও শেখে। তিউনিসিয়ার রাজপথে এখন মানুষের সেই জোটবদ্ধ ক্ষমতার উৎসব। এবং তারা প্রধানত তরুণ। কেবল তিউনিসিয়াই নয়, বুয়াজিজির জ্বালানো আগুনের আঁচ সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যই টের পাচ্ছে। বৃদ্ধ সৌদি বাদশাহ ও তরুণ জর্ডানি রাজার তখতে তাউস এবং মিসরের ‘চিরস্থায়ী’ প্রেসিডেন্ট ও আলজেরীয় সেনাশাসকদের প্রাসাদও স্পর্শ করছে তাঁর উত্তাপ। মিসর সরকার ইতিমধ্যে খাদ্যপণ্যের দাম কমিয়ে দিয়েছে, সুদান সরকার ভীত হয়ে বিরোধী নেতা হাসান আল তুরাবিকে গ্রেপ্তার করেছে। হ্যাঁ, এখন সবাই তেল-চাল-আটার দাম কমাবে। তা কমাক, কিন্তু সেগুলোর দাম কারা বাড়াচ্ছিল এত দিন?
তিউনিসিয়া যখন জ্বলছিল, তখন কী করছিলেন হিলারি ক্লিনটন? তিনি তখন উপসাগরীয় রাজতন্ত্রের দুর্নীতিবাজ রাজপুত্রদের সবক দিচ্ছিলেন। বলছিলেন, তাঁদের উচিত ইরান আক্রমণে শামিল হওয়া। মিসরে যখন ভোট জালিয়াতি চলছিল, যখন লেবানন ও ফিলিস্তিনে গণতন্ত্র হাঁসফাঁস করছিল, ওবামা তখন নীরব ছিলেন। ইয়েমেন, জর্ডান, মরক্কোর স্বৈরশাহীর বিষয়ে যেমন নীরব আছে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি।
আজ তাঁরা আরবসহ গোটা বিশ্বে গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতা চান? অথচ, এর জন্য তো আগে অস্থিতিশীলতাই দরকার। অনির্বাচিত ও জবরদখলকারী শাসকদের টিকিয়ে রেখে তো শান্তি ও গণতন্ত্র আসবে না। আলজেরিয়ায় নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় বসতে পারেনি, নির্বাচিত ফিলিস্তিন সরকার শাসনের অধিকার পায়নি, পাকিস্তানকে তারা উপহার দিয়েছে এক লুটেরা প্রেসিডেন্ট আর সর্বনাশা সেনাবাহিনী। দেশ ছাড়তে হয়েছে হাইতির জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট অ্যারিস্টিডকে। সম্প্রতি আফ্রিকার আইভরি কোস্টে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে হটাতে ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের মদদে গৃহযুদ্ধ বাধানো হচ্ছে। এ রকম উদাহরণ অজস্র। তিউনিসিয়া ধরনের অস্থিতিশীল জনতার অভ্যুত্থান ছাড়া এসব দেশে জনগণের গণতন্ত্র সম্ভব নয়।
বেন আলীকে সবাই বলছে পতিত স্বৈরশাসক। কিন্তু তিনি কি সত্যিই স্বাধীন শাসক ছিলেন, নাকি ছিলেন অপশক্তির হুকুমবরদার? কার্যত তিউনিসিয়ার যুববিদ্রোহ পাশ্চাত্য প্রবর্তিত আর্থিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থারই বিরুদ্ধে। আশির দশকে এমএফ চালায় কাঠামোগত সংস্কার। বিশ্বব্যাংক ঠিক করে দেয় নীতি। তাদের ঋণের শর্ত মেটাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ করা হয়। ছাঁটাই হন অজস্র সরকারি শ্রমিক-কর্মচারী। আয়-ব্যয়ের ফারাক বাড়তেই থাকে। অর্থনীতি ধুঁকতে থাকে অসাধু ঋণের ভারে। সুদ গুনতেই চলে যায় প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো ডলার। পর্যটকদের ‘হলিডে ডেস্টিনেশন’ হিসেবে তিউনিসিয়াকে গড়ে তোলা হয়, কিন্তু খোদ তিউনিসিয়াবাসীর জীবন থেকেই হারাতে থাকে হলিডের সুখ। আর বেন আলীর পরিবার বানাতে থাকে সম্পদের পাহাড়। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে আসে দমন-পীড়ন।
বাংলাদেশসহ তৃতীয় দুনিয়ার সর্বত্র গল্প এটাই। সমাজ দেখল, হঠাৎ করে রাষ্ট্র তাদের ব্যবসা ও মুনাফার সামনে উদোম করে ছেড়ে দিয়েছে এবং তারা গরিব হয়ে যাচ্ছে। বাধা দেওয়ার মতো কেউ নেই। কারণ, দেশ চালাচ্ছে উর্দি পরা ডাকুরা। সেনাবাহিনীকে দিয়ে প্রগতিশীল শক্তি ও সরকারগুলো বর্বরভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো। বাংলাদেশে শেখ মুজিবের বুক ঝাঁঝরা হলো। চিলির বামপন্থী প্রেসিডেন্ট সালভাদর আয়েন্দেকে হত্যা করল তারই সেনাবাহিনী। কঙ্গোর জাতীয় নেতা প্যাট্রিস লুমুম্বাকে টুকরা টুকরা করে হত্যা করা হলো। আর ফ্রান্সের খপ্পর থেকে তিউনিসিয়ার স্বাধীনতা অর্জনের নেতা হাবিব বারঘুইবি সামরিক অভ্যুত্থানে উৎখাত হলেন। জেনারেল বেন আলী হলেন তিউনিসিয়ার ভাগ্যবিধাতা—২৪ বছরের জন্য। ক্ষমতা দখলের পর দৌড়ে বেতারকেন্দ্রে যাওয়া স্বৈরশাসকদের রীতি। বেন আলীও গেলেন, গলা চড়ালেন এবং তিউনিসিয়ায় নেমে এল অন্ধকার।
মত প্রকাশের অধিকার বলে কিছু ছিল না। এক সাংবাদিক বলছেন, ‘জীবনে এই প্রথম সত্যিকার সাংবাদিকতা করছি।’ হ্যাঁ, তিউনিসিয়ার যুবকেরাও অনুভব করছেন যৌবনের সত্যিকার তেজোদীপ্তি। সাধারণ মানুষ এই প্রথম স্বাদ পাচ্ছে নাগরিক শক্তি ও সংহতির। বুয়াজিজির মহান আত্মাহুতির বিনিময়ে তিউনিসিয়া যেন জীবন ফিরে পেল।
কিন্তু যারা ইতিহাস গড়ছে, তারা কারা? আরব দেশগুলোর মধ্যে তিউনিসিয়ার শিক্ষিত মধ্যশ্রেণীটি সবচেয়ে বড়। জনসংখ্যার বড় অংশই যুবাবয়সী। উদার ও ধর্মনিরপেক্ষ ধারা সমাজে প্রতিষ্ঠিত। বামপন্থী শক্তি নিতান্তই দুর্বল নয়। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দানকারী জেনারেল ইউনিয়ন ফর ওয়ার্কার্স নামক শ্রমিক সংগঠনের প্রভাব তারই প্রমাণ। তবু শাসনক্ষমতার শূন্যতা পূরণে সক্ষম একক কোনো রাজনৈতিক দল নেই। এরই সুযোগ নিয়ে বেন আলীর প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ ঘানুচি নতুন সরকারের প্রধান সেজে বসেছেন, সঙ্গে আগের সরকারের ছয় মন্ত্রী। কিন্তু জনতার চাপে ওই ছয়জন বিদায় হলেও ঘানুচি বহাল আছেন। ওদিকে বামপন্থী তিন মন্ত্রীও পদত্যাগ করেছেন। জটিলতা তাই থাকছেই। এই জটিলতার গোড়া স্বতঃস্ফূর্ত অভ্যুত্থানটির মধ্যেই। একক কোনো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়নি এই সংগ্রাম। এই অভ্যুত্থানের আসল তাৎপর্য হলো, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সামাজিক শক্তির প্রতিরোধ। জনতাই এখানে নেতা। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলে, এ ধরনের বিজয় দ্রুতই বেহাত হয়। বেন আলীর পতনের সঙ্গে সঙ্গেই বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া একযোগে তাঁর নিন্দা করলেও, তলে তলে তারা চাইছে পছন্দের কাউকে ক্ষমতায় আনতে। যে স্থিতিশীলতা দেবে এবং দেবে পশ্চিমা স্বার্থের সুরক্ষা ও আগের শাসনের ধারাবাহিকতা। তৃতীয় বিশ্বে বিজাতীয়দের স্বার্থ দেখার হাতিয়ার অনেক সময় সেনাবাহিনীই হয়। তিউনিসিয়ার প্রতিবিপ্লবের হুমকিও তারাই। লেবাননীয় কবি খলিল জিবরান লিখেছিলেন, করুণা সেই জাতির প্রতি, যে তার নতুন শাসকের অভিষেকে ঢাক বাজায় এবং বিদায়ের সময় জানায় ধিক্কার। তিউনিসিয়া ও এর মিত্রদের সজাগ থাকতে হবে, যাতে এমন কাউকে তারা বরণ না করে, যাকে তাদের আবার ধিক্কার জানাতে হতে পারে।
তিউনিসিয়ার ঘটনা সব শাসকের জন্যই হুঁশিয়ারি দিচ্ছে: আপনার দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এক হাজার ডলার থেকে ছয় হাজার ডলারের মধ্যে হলে সাবধান! এ রকম মধ্যবিত্ত অবস্থার মানুষই বিদ্রোহ করে। আবার মাথাপিছু আয় এক হাজার ডলারের নিচে কিংবা ছয় হাজার ডলারের ওপরে হলে আপনি নিশ্চিন্ত। অতিদারিদ্র্য পরিবর্তনের শক্তি ও চাহিদা শুষে নেয় আবার অতি সচ্ছলতা বিপ্লব-বিদ্রোহকে করে দেয় অপ্রাসঙ্গিক। তত্ত্বটি মার্কিন সমাজতাত্ত্বিক সেইমুর মার্টিন লিপসেটের। যাঁরা বেন আলী হতে চান না, তাঁদের উচিত সবার জন্য কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা এবং যেকোনোভাবেই হোক মাথাপিছু আয় ছয় হাজার ডলারের ওপরে তোলা। নতুন অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বাস্তবতায় যাদের চাকরি বা আয় অতি নাজুক, সেই সব তরুণ প্রিক্যারিয়েতরা আগেকার প্রলেতারিয়েতদের মতোই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এদের খুশি না রাখলেও বিপদ।
বাংলাদেশের শাসকদের অবশ্য চিন্তার কিছু নেই। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সমীক্ষার তথ্য বলছে, বাংলাদেশের চলতি মাথাপিছু আয় (জিএনআই) ৭৫০ ডলার। এর অর্থ আমাদের জনগোষ্ঠী তথা তরুণদের বড় অংশ এতই দরিদ্র যে, নিজ থেকে দিনবদলের শক্তি তাদের নেই। লিপসেটের তত্ত্ব অনুযায়ী অতিদারিদ্র্য সাধারণত বিপ্লব প্রসব করে না। কিন্তু ৫২-৬৯-৭১-৯০-এর এই দেশে কখন কী ঘটে বলা মুশকিল।
সভ্যতার সংঘর্ষতত্ত্বের জনক উইলিয়াম হান্টিংটন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ঘোষণা করেছিলেন, ইতিহাসের জানাজা হয়ে গেছে। কিন্তু তিউনিসিয়ার যুবজনতা জানিয়ে দিল, ইতিহাস এখনো জাগ্রত। এখনো বেঁচে আছে পরিবর্তনের আশা ও সংকল্প।
ফারুক ওয়াসিফ: সাংবাদিক।
farukwasif@yahoo.com

No comments

Powered by Blogger.