হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে-পণ্ড শিক্ষামেলা

প্রায় প্রতিদিনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের দুর্বৃত্তপনার সংবাদ আসে। মহাজোট সরকারের শরিক জাতীয় পার্টির ছাত্রসংগঠন জাতীয় ছাত্রসমাজও কম যায় না। যেখানে তাদের জোর আছে সেখানে তারাও দুর্বৃত্তায়নে একদমই পিছিয়ে নেই।


শাসক দল-সংশ্লিষ্ট ছাত্রসংগঠনগুলো যে শিক্ষাবিরোধী হয়ে কতিপয় ক্ষমতাশীল ব্যক্তির স্বার্থসিদ্ধির লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত হয়েছে, তার নজির দেখা গেল বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরার শ্যামনগরে। স্থানীয় সাংসদকে প্রধান অতিথি না করায় জাতীয় ছাত্রসমাজের কর্মী-সমর্থকেরা হামলা-ভাঙচুর চালিয়ে শিক্ষামেলা পণ্ড করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সাংসদের মর্যাদা ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে গিয়ে এসব দুর্বৃত্তের হাতে শিক্ষকেরা অমর্যাদার শিকার হয়েছেন। কিন্তু সাংসদকে প্রধান অতিথি না করলেই বা কেন ভাঙচুর চালাতে হবে। এমন আচরণের পেছনে কাজ করে স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতা, যেখানে জনপ্রতিনিধিকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সেই এলাকার রাজা গণ্য করা হয়।
এ ঘটনায় কয়েকজন শিক্ষককে মারধর ও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। শিক্ষকদের যদি তথাকথিত শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়, তার চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে? ভাঙচুরের ফলে যে সম্পদ নষ্ট হয়েছে, তা হয়তো সহজেই পূরণ করা যাবে। কিন্তু শিক্ষকদের প্রতি এই আচরণ অমার্জনীয়।
এ ঘটনা দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি ও সমাজের চিত্র তুলে ধরে। বারবার শাসক দলের ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা এমন অপকর্ম করে চলেছেন। কিন্তু তাঁদের শাস্তি হওয়ার সংবাদ পাওয়া যায় না। এ অবস্থার বদল ঘটাতে না পারলে শিক্ষাক্ষেত্রে সাম্প্রতিক কালে যে কিছু অগ্রগতি ঘটেছে, তা ভণ্ডুল হয়ে যাবে। শিক্ষা খাত নিয়ে যে আশাবাদ তৈরি হয়েছে, তা এসব নৈরাজ্যের কারণে ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। শিক্ষকদের যথাযথ মর্যাদা আর শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে এই হামলা-ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.