কারাগারে নেশা উপকরণ-এ চক্র থামাতেই হবে

দেশের কারাগারগুলোতে মাদক 'ইয়াবা' সহজলভ্য হওয়ার খবর হতাশাজনক। রাজধানীর মাদক স্পটগুলোর মতো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারেও সব ধরনের নেশার উপকরণ পাওয়া যাচ্ছে। রোববার সমকালে 'কারাগারে ইয়াবা যেন মুড়ি-মুড়কি' শিরোনামের খবর থেকে জানা যায়, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের বিভিন্ন কারাগারে নির্বিঘ্নে মাদক ব্যবসা চলছে।


কারাগারের কিছু অসৎ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। বর্তমানে দেশের ৬৭টি কারাগারে প্রায় ৭০ হাজার বন্দি রয়েছে। এসব কারাগারের বিরুদ্ধে যেমন বেশি বন্দি রাখার অভিযোগ রয়েছে, তেমনই অনিয়ম-দুর্নীতি ও মাদক সহজলভ্য থাকার অভিযোগ রয়েছে। একজন কারারক্ষীর বরাতে জানা যায়, কারাগারে সবচেয়ে বেশি চাহিদা ইয়াবার। সাধারণ মানুষের মধ্যে ধারণা রয়েছে, দেশের অন্যান্য কারাগারের তুলনায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক ভালো। কিন্তু কেন্দ্রীয় কারাগারের নিরাপত্তার অবস্থা যদি এই হয় তাহলে দেশের অন্য কারাগারগুলোর কী অবস্থা তা সহজেই অনুমেয়। অপরাধীদের শাস্তি প্রদানের অংশ হিসেবে কারাগারে রাখা হয়। কারাগার ব্যবস্থা সংশোধনীমূলক অপরাধ-বিচার ব্যবস্থার একটি অংশ। অপরাধ আইনের ধারণা অনুযায়ী, অপরাধীকে কারাগারের মধ্যে রেখে কৃতকর্মের জন্য শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি নিজেকে সংশোধন করে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু কারাগারগুলোই যদি মাদকের স্পট হয়ে যায় তাহলে সেই সংশোধন প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হতে বাধ্য। আমরা মনে করি, কারাগারের অনিয়ম-দুর্নীতি ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া অবস্থার উন্নতি সম্ভব নয়। আশার কথা, এরই মধ্যে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। এই তদন্ত কমিটি এরই মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন করেছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন যাতে আলোর মুখ দেখে এবং অপরাধীরা চিহ্নিত হয় তার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রকাশিত খবর থেকে জানা গেছে, একটি দুর্নীতিবাজ চক্র দীর্ঘদিন ধরে জেলগেটে দায়িত্ব পালন করায় কারাগারে মাদক প্রবেশ করছে। এই দুর্নীতিবাদ চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। কারাগার মাদক স্পট হয়ে উঠলে পুরো কারা ব্যবস্থাপনাই প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
 

No comments

Powered by Blogger.