বেড়া দিয়ে মাছ শিকার-পদ্মায় বিপুল বাঁশ বেড়া ও জাল ধ্বংস

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করতে গতকাল বৃহস্পতিবার অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। তাঁরা মাছ চাষের বিপুল পরিমাণ বেড়া, বাঁশ ও নিষিদ্ধ জাল জব্দ করে সেগুলো ধ্বংস করেন।


মাছচাষি সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ী ও পাবনা অঞ্চলের প্রভাবশালী চক্র দীর্ঘদিন ধরে পদ্মার কয়েকটি পয়েন্টে অবৈধভাবে বাঁশ পুঁতে তাতে ঘন কণা, কারেন্ট, ঘের, ইলিশমারাসহ বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে নদীর বিশাল অংশে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করছিল। এ নিয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর প্রথম পৃষ্ঠায় ‘পদ্মায় বেড়া দিয়ে মাছ শিকার’ শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হলে সংশ্লিষ্ট মহলের টনক নড়ে।
গতকাল সকাল ছয়টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ অংশে জেলার একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সংবাদ পেয়ে আগেভাগেই উত্তর দৌলতদিয়া এলাকার জয়নাল মণ্ডল এবং এর কয়েক শ গজ উজানে কিয়ামদ্দিন মেম্বারেরপাড়া এলাকার সমির মণ্ডলসহ ডাকতাপাড়া এলাকার বড় তিনটি বেড়া তুলে ফেলে চক্রটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গতকাল সকালে অন্তারমোড় বাঘাবাড়ী এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ বেড়া তুলে নেওয়ার সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত হাতেনাতে উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের চর দেলন্দি গ্রামের চাঁদ আলী খান ও আক্কাছ খানকে আটক করেন। পরে তাঁদের প্রত্যেককে মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ৫০০ টাকা করে মোট এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে ওই বেড়ার প্রায় দুই লাখ টাকা দামের বাঁশ ও দুই লাখ টাকা দামের ঘের জাল আটক করা হয়। এ ছাড়া বালুর ভেতরে লুকিয়ে রাখা জেলেদের আরও প্রায় এক লাখ টাকা দামের বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ জাল জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে সেগুলো ওই বালুচরেই ধ্বংস করা হয়। এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পদ্মার বিভিন্ন এলাকা থেকে তিন লাখ টাকা দামের কারেন্ট জাল আটক করেন। কারেন্ট জালগুলো দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের কাছে এনে পোড়ানো হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার মো. গোলাম জাকারিয়া বলেন, ‘এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাঈদ আহমেদ বলেন, প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এ যাবৎকালের সেরা অভিযান চালানো হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.