হাসিনার সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের মতবিনিময়-চট্টগ্রাম নগর আ.লীগে নেতাদের বিভেদ আছে

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগে নেতাদের মধ্যে বিভেদের কথা জানালেন তৃণমূলের নেতারা। তবে তাঁরা বলেছেন, কর্মীদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। নেতারা দলাদলি করছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে মতবিনিময় সভায় দলের চট্টগ্রাম মহানগরের তৃণমূলের নেতারা এসব কথা জানান।


গণভবনে এই সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার পরামর্শ দেন।
সভায় চট্টগ্রাম মহানগরের প্রতি থানার সভাপতি এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুরুল আলম দোভাষ ও গিয়াসউদ্দিন বক্তব্য দেন। সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইনামুল হক দানু। সভায় নগর আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সব নেতাই উপস্থিত ছিলেন। এক পক্ষে রয়েছেন চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও মহানগরের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। অন্য পক্ষে রয়েছেন সহসভাপতি সাংসদ নুরুল ইসলাম বিএসসি এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীন।
সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম চট্টগ্রামের নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরীকে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে ঘোষণা করেন এবং তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেন। আতাউর রহমান খান কায়সারের মৃত্যুতে সভাপতিমণ্ডলীর একটি পদ এত দিন খালি ছিল। সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন।
সভাসূত্র জানায়, সভায় বিভিন্ন থানার সভাপতিরা বলেন, নেতাদের মধ্যে বিভেদ ও মনোমালিন্য থাকলেও কর্মী পর্যায়ে দলাদলি নেই। তাঁরা দলীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে শেখ হাসিনার উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার নেতৃত্বে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। আপনি কমিটি করে দেন। কোনো বিভেদ থাকবে না।’ সভায় কেউ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ করেননি। এ আচরণে মুগ্ধ সৈয়দ আশরাফ সমাপনী বক্তৃতায় বলেন, চট্টগ্রামের নেতাদের রাজনৈতিক পরিপক্বতা ও সংস্কৃতি যে কত উচ্চপর্যায়ের, তা আজকের সভায় প্রমাণিত হয়েছে।
সভায় প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি সবার কাছ থেকে তালিকা নিচ্ছেন। আলোচনা, পর্যালোচনা করছেন। খুব কম সময়ের মধ্যেই কমিটি করে দেওয়া হবে। এর আগে সভার উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যাঁরা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করেন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেন এবং গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন, তাঁদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে। যারা যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে চায়, তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করি। আমরা ভোট চুরি করে ক্ষমতায় যাওয়ায় বিশ্বাস করি না। জনগণই আমাদের মূল শক্তি।’ তিনি বিএনপি সরকারের সময়ে ভোট চুরি ও ভোট ডাকাতির বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, আসলে এই দলটি গণতন্ত্রে ও জনগণের ভোটাধিকারে বিশ্বাস করে না। ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন করে দলটি ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। কিন্তু জনগণ মেনে নেয়নি। মাত্র দেড় মাসের মাথায় জনগণ খালেদা জিয়াকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়ন করেছে।

No comments

Powered by Blogger.