যশোরে গণবিয়ে-স্বপ্নযাত্রায় সহমর্মিতার ছোঁয়া

তুন দিনের স্বপ্ন নিয়ে এসেছে ৬০ যুবক-যুবতীর বিয়ে। তারা সবাই হতদরিদ্র মানুষ। তাদের অনেকেরই নেই কোনো চালচুলো। সমাজ-সংসারে যারা তাদের আপনজন তাদের অনেকেরই নেই কোনো সহায়-সম্বল। নিতান্ত প্রাণধারণের দু'মুঠো অন্ন জোগাড়ে যাদের নিজেদের শ্রম বিক্রিও যথেষ্ট নয়, সেই হাভাতে মানুষদের জীবনে তাই পূজা-পার্বণ, ঈদ,বড়দিন ইত্যাদি ভালো খাবার আর ভালো পোশাক পাওয়ার একটা উপলক্ষ মাত্র। এসব উৎসবে তারাও মাতে,
তবে অপরের কাছ থেকে প্রাপ্ত ভিক্ষার দানে পাত্র পূর্ণ করার খুশিতে। অথচ তাদের প্রতি যদি সমাজ একটু সহানুভূতি, একটু সহমর্মিতা, একটু অর্থবহ সাহায্যের হাত প্রসারিত করে, তাহলে তাদের নিরানন্দ জীবনেও আনন্দের ফোয়ারা বইয়ে দেওয়া সম্ভব। যশোরে শারজা চ্যারিটেবল অর্গানাইজেশনের অর্থায়নে কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটি গত শনিবার দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের ৬০ ছেলেমেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করে আশাহীন জীবনে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। সাহায্য সংস্থাটি নবদম্পতিকে তাদের নতুন সংসার সাজানোর জন্য যেমন উপকরণ দিয়েছে, তেমনি কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এখানেই এই গণবিয়ে রূপকথার বিয়ের মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েছে নতুন বর-কনের জীবনে। হতদরিদ্রদের বিয়ের ব্যবস্থা করাই শুধু নয়, তাদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা গেলে দেশের প্রতিটি পরিবারেই একদিন খুশি জীবনের অনুষঙ্গ হয়ে উঠবে। এ কাজে দাতব্য প্রতিষ্ঠান বা সামাজিক সংগঠনগুলো সরকারের পাশাপাশি পালন করতে পারে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা। যশোরের এই গণবিয়ে হতদরিদ্রদের মনে নতুন দিনের স্বপ্ন নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। এখন এই স্বপ্নকে যত বেশি প্রসারিত করা যাবে, যত বেশিসংখ্যক মানুষের জীবনে বাস্তব করে তোলা যাবে, ততই নতুন সংসার মানেই নতুন জীবন_ নতুন স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নবউদ্যমে সংগ্রাম_ এই সত্য বাস্তব হয়ে উঠবে। শারজা চ্যারিটেবল অর্গানাইজেশনের অর্থায়নে জয়েন্ট কুয়েত রিলিফ কমিটি এ ধরনের আশাবাদী উদ্যোগ গ্রহণের জন্য তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। অন্যান্য দাতব্য ও সামাজিক সংগঠনকে আশাহতদের জীবনে নতুন আশার সঞ্চার করার এ ধরনের মহান কর্মযজ্ঞে শামিল হওয়ার আহ্বান জানাই।
 

No comments

Powered by Blogger.