অপ-সংস্কৃতির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সচেতন নাগরিক সমাজের দাবি পেশ

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশের সংস্কৃতি, চলচ্চিত্র ও টিভি চ্যানেলে ভারতীয় সহ সব প্রকার বিদেশী অপ-সংস্কৃতির আগ্রাসনের প্রতিবাদে গতকাল বেলা ২টা থেকে শহীদ মিনারে সম্মিলিত নাগরিক জোটের আয়োজনে দেশের সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে দিনব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন অভিনেত্রী ও সমাজকর্মী রোকেয়া প্রাচী। এই সমাবেশের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে চলচ্চিত্র পরিচালক মহম্মদ হান্‌নানের নেতৃত্বে যোগ দেয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি। এর বাইরে সমাবেশে যোগ দেয় বাংলাদেশে মিউজিক ওনার্স এসোসিয়েশন (এমআইবি) সহ আরও বেশকিছু সংগঠন। অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন বরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম, মোরশেদুল ইসলাম, মহম্মদ হান্‌নান, কণ্ঠশিল্পী মনির খানসহ বিভিন্ন গণ্যমান্য সাংস্কৃতিক ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব। বক্তারা সমাবেশ থেকে বিদেশী অপ-সংস্কৃতির আগ্রাসনের হাত থেকে দেশের সংস্কৃতি রক্ষার্থে সকলকে এক হয়ে আন্দোলন করার আহ্বান জানান। সম্মিলিত নাগরিক জোটের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি দাবিও পেশ করা হয় সমাবেশস্থল থেকে। এই দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- এফডিসিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ফিল্ম ইনস্টিটিউটে রূপ দেয়া। দলীয় নিয়োগ বন্ধ করা। সম্ভব হলে এফডিসিকে বিকেন্দ্রীকরণ করা। চলচ্চিত্রের প্রমোদ কর কমপক্ষে ৫০ শতাংশ কমানো। সিনেমা শিল্পের যন্ত্রাংশ এবং কাঁচামাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে কর ও প্রশাসনিক জটিলতা কমানো। পুরাতন সিনেমা হল সংস্কারের জন্য সরকারি অনুদান ও সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা। নতুন ও আধুনিক মানসম্পন্ন সিনেপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া। প্রত্যেকটি মাল্টিস্টোরেড মার্কেট নির্মাণ পরিকল্পনায় কমপক্ষে ২টি সিনেপ্লেক্স নির্মাণ বাধ্যতামূলক করা। অনুদানের ছবির সংখ্যা বাড়ানো। অনুদানের টাকার পরিমাণ আন্তর্জাতিক সিনেমা নির্মাণ ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা এবং এই প্রক্রিয়াকে প্রশাসনিক ও দলীয় জটিলতা মুক্ত রাখা। সিনেমার জন্য আধুনিক ও সময় উপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন করা।  সেন্সর বোর্ড গঠনে ভিন্ন ভিন্ন পেশার অভিজ্ঞদের সম্মিলন থাকা। আগামী ১০ বছরের চলচ্চিত্র উন্নয়নের পরিকল্পনা করে চলচ্চিত্রকে নতুন এবং বিশ্ববাজারের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ করে সাজানো। সকল প্রকার পাইরেসি বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রশাসনিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ। বিদেশী চ্যানেলের অবাধ প্রদর্শন নিয়ন্ত্রণ করা। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের এবং গ্রাহকদের নিজস্ব রুচি, সংস্কৃতির পছন্দ অনুযায়ী চ্যানেল বাছাই করে গ্রাহক হওয়ার ব্যবস্থা চালু করা। বিদেশী বিজ্ঞাপন প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করা এবং বিজ্ঞাপন নির্মাণে দেশ ও জাতির সামাজিক, পারিবারিক, সাংস্কৃতিক চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতিমালা প্রণয়ন করা। সমাবেশ অনুষ্ঠানে বক্তাদের বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে দেশের গান পরিবেশন করেন মনির খান ও পলাশ।

No comments

Powered by Blogger.