বা ণি জ্য মে লা-ক্রেতা আকর্ষণে এগিয়ে ভোগ্যপণ্য প্রতিষ্ঠান

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার শুরুতেই ক্রেতা আকর্ষণে এগিয়ে রয়েছে ভোগ্যপণ্য বাজারজাতকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। মেলায় অংশ নেওয়া ভোগ্যপণ্যের কোম্পানিগুলো নানা ছাড়ের মাধ্যমে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছে। কেউ দিচ্ছে নগদ ছাড়, কেউ পণ্যের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান নগদ ও পণ্য উভয় ধরনের ছাড়ই দিচ্ছে। সোমবার মেলামাঠ ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর বিক্রয়কর্মীরা জানান, বাণিজ্যমেলায় কোম্পানিগুলো


সরাসরি বিক্রি করছে। ফলে সাধারণ বিপণন ব্যবস্থায় মধ্যস্বত্বভোগীদের যে সুবিধা দেওয়া হয়, সে সুবিধা গ্রাহককে দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে কোম্পানির মুনাফায় কোনো ঘাটতি হচ্ছে না, আবার ক্রেতারা কম দামে পণ্য কিনতে পারছেন। এ ছাড়া পণ্যের পরিচিতির লক্ষ্যেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে। ক্রেতারাও মেলায় ছাড় আশা করেন বলে মনে করেন বিক্রয়কর্মীরা।
গতকাল ছিল মেলার দ্বিতীয় দিন। ১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেলা উদ্বোধন করেন। প্রকৃত অর্থে মেলা এখনও জমেনি বলে মনে করছেন অংশগ্রহণকারীরা। ক্রেতা-দর্শক আসছেন কম। গতকালের মেঘলা আকাশ ও হিমেল বাতাসে কিছু তরুণ-তরুণী দর্শনার্থী ছাড়া মেলায় বেশি লোক সমাগম হয়নি। অন্যদিকে এখনও অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের স্টল বা প্যাভিলিয়ন গুছিয়ে নিতে পারেনি। যদিও নিয়ম অনুযায়ী ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে স্টলের কাজ শেষ করার কথা ছিল। খোদ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নামে বরাদ্দকৃত বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল নামের প্যাভিলিয়নের নির্মাণ কাজ গতকালও চলছিল। আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে তাদের স্টল সাজানোর কাজ করতে দেখা যায়। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আয়োজক সংস্থা ইপিবি এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানা গেছে।
মেলায় অংশ নেওয়া ভোগ্যপণ্যের কোম্পানির স্টলগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন ধরনের বিস্কুট, চানাচুর, চিপস, সস, আইসক্রিম, জুস, মধু, কনডেন্সড মিল্ক, গুঁড়া দুধ, আটা, ময়দা, সুজি, চিনি, ভোজ্যতেল, বিভিন্ন প্রকার মশলাসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করছে কোম্পানিগুলো। মেরিডিয়ান চিপস, হক ব্রাদার্স, প্রাণ, ফ্রেশ, আবদুল মোমেন লিমিটেড, পোলার আইসক্রিম, ইগলু আইসক্রিম, নেসলে বাংলাদেশ, ড্যানিশ, নাবিস্কো, ফেইম মধু, নূর ফুডস, আহমেদ ফুডস, এলসন ফুড, মিল্ক ভিটা, বঙ্গজ, আপন এন্টারপ্রাইজসহ কমপক্ষে ২৫টি প্রতিষ্ঠান মেলায় ভোগ্যপণ্য বিক্রি করছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে রয়েছে কোনো না কোনো ধরনের ছাড়। এ ছাড়া ছয়টি রেস্টুরেন্ট মেলায় অংশ নিচ্ছে। যদিও ভোক্তারা অভিযোগ করেছেন, মেলার রেস্টুরেন্টে দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, মেলায় যেসব খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে তার মান অনেক ভালো। এ ছাড়া মেলায় রেস্টুরেন্টে খরচও বেশি। সবমিলিয়ে ন্যায্য দাম রাখা হচ্ছে।
মেরিডিয়ান চিপসের বিক্রয় প্রতিনিধি জানান, ছয়টি এগ নুডলস কিনলে তারা একটি ফ্রি ও ১২ টাকা ছাড় দিচ্ছেন। একইভাবে থাই নুডলসেও রয়েছে একটি ফ্রি ও ১৬ টাকা ছাড়। এ ছাড়া তিনটি এগ ও তিনটি থাই নুডলস কিনলে যে কোনো এক প্যাকেট নুডলস ফ্রি। এ ছাড়া ছয়টি ফ্লেভারের ১০ প্যাকেট চিপসের দাম নেওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা। এর সঙ্গে বাচ্চাদের খেলনা একটি 'ফ্রিসবি' ফ্রি। এ ছাড়া কোম্পানির আগের ২৮০ টাকার প্যাকেজ মেলায় বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। একইভাবে হক ব্রাদার্স তাদের বিভিন্ন প্রকারের বিস্কুটের সমন্বয়ে করা প্যাকেটের মূল্যে ছাড় দিচ্ছে। বাজারে যে প্যাকেট ২৩০ টাকায় বিক্রি হয় তা মেলায় বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায় আর ১৭০ টাকার প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। তবে আইসক্রিম কোম্পানিগুলো ছাড়ে পণ্য বিক্রি করছে না। পোলার আইসক্রিমের স্টল এবার একটু ভিন্নভাবে সাজানো হয়েছে। বরফের মতো ঠাণ্ডা ঘরে বিক্রি হচ্ছে পোলার আইসক্রিম। বিক্রয়কর্মী সাদিকুর রহমান সবুজ জানান, পোলার স্টলের তাপমাত্রা ১৫ থেকে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে ক্রেতারা ঠাণ্ডার আমেজে পোলার আইসক্রিম উপভোগ করতে পারেন। বিভিন্ন স্বাদের আইসক্রিম, কনটেইনার ও আইসক্রিম কেক পাওয়া যাচ্ছে পোলারের স্টলে। নেসলেতেও রয়েছে নগদ ও পণ্যে ছাড়। ফ্রেশ তাদের উচ্ছ্বাস প্যাকেজে ১৬ টাকা, উল্লাস প্যাকেজে ৩৯ ও উৎসব প্যাকেজে ৬০ টাকা ছাড় দিচ্ছে। এ ছাড়া ময়দা, চিনি কিনলে হলুদ গুঁড়া ফ্রি দেওয়া হচ্ছে। একই ধরনের সুবিধা রয়েছে প্রাণের স্টলে। ২০০ থেকে ৩৫০ টাকার পণ্য কিনলে ৮ শতাংশ, ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকার পণ্য কিনলে ১০ শতাংশ এবং ৬০০-র বেশি টাকার পণ্য কিনলে ১৩ শতাংশ নগদ ছাড় দিচ্ছে প্রাণ। এ ছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও নানা ছাড়ের অফার রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.