প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে খুন: ২২ আসামির কললিস্ট পরীক্ষা করছে গোয়েন্দারা

স্টাফ রিপোর্টার: প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে মামুন হোসাইন খুনের পরিকল্পনাকারী ও ঘাতকদের শনাক্তকরণে ২২ আসামির কললিস্ট পরীক্ষা করছে গোয়েন্দারা। খুনের আগে মামুন ঘটনাস্থলে কার ফোনে, কি কারণে গিয়েছিলেন, কার কার ফোন রিসিভ করেছিলেন তা যাচাই-বাছাই করা শুরু করেছেন। এদিকে বাড্ডা থানা পুলিশ মামুন খুনের এজাহারভুক্ত ১২ নম্বর আসামিকে দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এক দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে দ্বিতীয় দফায় ১০ দিনের পুলিশি রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। পরে আদালত  দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। বাড্ডা থানার ওসি মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আসামি শহিদুল ইসলাম প্রথম দফা রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। জমির ব্যবসা ও বালু ভরাটকে কেন্দ্র করেই যে মামুন খুন হয়েছেন, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত শহিদুল  ইসলাম  মামলার প্রধান দুই আসামি জাহাঙ্গীর ও আলমগীরের ক্যাডারবাহিনীর সদস্য। এ আসামি মামুন হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত  যেসব তথ্য দিয়েছে, তা যাছাই-বাছাই করার জন্যই দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে আনা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের ছায়া তদন্ত করছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম। ওই টিমের গোয়েন্দারা ইতিমধ্যেই মামলার এজাহারভুক্ত ২২ আসামির মোবাইল ফোনে কথোপকথনের আগের তথ্য উদ্ধার করেছেন। এদের সবার সঙ্গে মামুনের সম্পর্কের ধরন জানার চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে খুনের আগে ও পরে ২২ আসামির সঙ্গে বাইরে থাকা লোকজনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে বেড়াচ্ছেন। গোয়েন্দারা জানান, মামুনের মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে মূল পরিকল্পনাকারী ও কিলিং মিশনের সদস্যদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। শিগগিরই প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে। সূত্র জানায়, মামুন খুনের পেছনে একজন হাই প্রোফাইলের নেতার ইন্ধন রয়েছে। খুনের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে- এমন সন্দেহে এজাহারভুক্ত পলাতক ২২ আসামির বাইরে আরও বেশ কয়েকজনের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের আগে মামুন বাড়ি থেকে ডিআইটি প্রজেক্টে নিজের রিকশার গ্যারেজের দিকে যাচ্ছিল। তাৎক্ষণিকভাবে এ খবর কিলার গ্রুপের কাছে কেউ জানিয়ে দিয়েছিল।  মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বাড্ডা থানার এসআই শেখ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মামুন হত্যাকাণ্ডে এজাহারভুক্ত ২২ আসামি ছাড়াও তৃতীয় একটি গ্রুপ জড়িত থাকতে পারে। ওই গ্রুপের নেতার গতিবিধি নজরদারিতে রেখেছি। তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারকৃত শহিদুল খুনের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। সে জাহাঙ্গীর-আলমগীর গ্রুপের ক্যাডার। মাঝেমধ্যে ভবন পাইলিংয়ের কাজ করতো। তার বাড়ি আনন্দনগর এলাকায়। সেই সুবাদে মামুনকে আগে থেকেই চিনতো। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন জেলায় পুলিশ ও গোয়েন্দাদের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। কিন্তু পলাতক ২১ আসামির সব মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের সঠিক অবস্থান জানতে পারছে না পুলিশ ও গোয়েন্দারা। উল্লেখ্য, গত ২৯শে ডিসেম্বর রাজধানীর বাড্ডা থানাধীন উত্তর মেরুল বাড্ডার আনন্দনগর এলাকায় পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমানের ফুপাতো বোনের ছেলে ও ৯৭ নম্বর ওয়ার্ড  স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মামুন হোসাইনকে  বোমা মেরে ও গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা নূরুল ইসলাম মাস্টার বাদী হয়ে ২২ জন আসামির নাম উল্লেখ করে বাড্ডা থানায় মামলা করেন।

No comments

Powered by Blogger.