সূচক সামান্য কমেছে

লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দরবৃদ্ধির পর গতকাল সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূল্যসূচক সামান্য কমেছে। ব্যাংকিং খাতের শেয়ারের দর কমায় সূচকের এ নিম্নমুখী অবস্থার কারণ। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ছিল মিশ্রাবস্থা।ডিএসইতে বড় খাতগুলোর মধ্যে একমাত্র ব্যাংকিং খাতের প্রায় সব শেয়ারের দর কমেছে। ক্লোজিং প্রাইসের হিসেবে রোববারের তুলনায় গতকাল এ খাতের সার্বিক শেয়ার দর কমার হার ছিল ১


দশমিক ৬৫ শতাংশ। মোট লেনদেনের পরিমাণও কিছুটা কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৬৪টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৪৪টির দর বৃদ্ধি পেয়েছে, কমেছে ১১০টির এবং ১০টির দর ছিল অপরিবর্তিত। সাধারণ সূচক রোববারের তুলনায় ১৮ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট কমে ৫৩৩৩ দশমিক ৪২ পয়েন্টে নেমে এসেছে। লেনদেন হয়েছে মোট ৫৯৪ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৯৭টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৮৬টির দর কমেছে, বেড়েছে ৯৭টির এবং ১৪টির দর অপরিবর্তিত ছিল। নির্বাচিত খাত সূচক ৩৬ পয়েন্ট কমে নেমেছে ৯৭০৫ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে ৫০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার।
গতকাল ডিএসইর লেনদেন পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, দিনের শুরুতে বেশিরভাগ শেয়ারের দর ও সূচকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দিয়ে লেনদেন শুরু হলেও লেনদেন শুরুর পর কিছুটা অস্থিরতা দেখা যায়। লেনদেনের শুরু থেকেই বেশিরভাগ ব্যাংকিং কোম্পানির শেয়ারদর কমার প্রবণতার মধ্যে ছিল। দিনের লেনদেনের শেষে দেখা যায়, এ খাতের ৩০টির মধ্যে ২৬টির দর কমেছে, বেড়েছে দুটির এবং অপরিবর্তিত ছিল দুটি ব্যাংকের শেয়ারদর। ব্যাংকিং কোম্পানির শেয়ারদর কমার প্রবণতা বাজার সূচকে নিম্নমুখী প্রবণতাকে উস্কে দেওয়ায় অন্যান্য কোম্পানির শেয়ার দরেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। লেনদেনের এক পর্যায়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া আড়াইশ' শেয়ারের মধ্যে প্রায় ২০০টির দর বৃদ্ধি পেতে দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত তা ১৪৪টিতে নেমে আসে। লেনদেনে একাধিক সময়ে দর কমা শেয়ারের সংখ্যা ছিল বেশি। ব্যাংক খাতের প্রায় সব শেয়ারদর কমলেও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতের বেশিরভাগ শেয়ারদরই বেড়েছে। ফলে এ খাতের সার্বিক দরবৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ১৯ শতাংশ। একইভাবে জ্বালানি ও শক্তি, সিরামিক্স, তথ্য ও প্রযুক্তি, সেবা ও নির্মাণ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে।
ডিএসইর লেনদেন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রোববারের তুলনায় গতকাল বীমা খাতে সর্বাধিক পৌনে ১১ কোটি টাকার লেনদেন বেড়েছে। এ ছাড়া খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে সোয়া তিন কোটি এবং গ্রামীণফোনে ২ কোটি টাকারও বেশি লেনদেন বেড়েছে। খাতভিত্তিক লেনদেনের দিক থেকে ব্যাংকিং খাতে সর্বাধিক ১৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ২৪ শতাংশ। এর পরের অবস্থানে বীমা খাতে ৬২ কোটি, বস্ত্র খাতে ৫৬ কোটি ৬৮ লাখ, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ৫১ কোটি, প্রকৌশল খাতে ৪৭ কোটি ৫২ লাখ, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতে ৪৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
ডিএসইতে লেনদেনে শীর্ষ ২০ কোম্পানির তালিকায় ব্যাংকিং খাতের প্রাধান্য ছিল। তবে রোববারের মতো গতকালও গ্রামীণফোনের শেয়ার ছিল লেনদেনের শীর্ষে। গতকাল এ কোম্পানির মোট ২৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। লেনদেনে এর পরের অবস্থানে ছিল কেয়া কসমেটিক্স, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, আর এন স্পিনিং, মার্কেন্টাইল ব্যাংক। দরবৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় রোববারের মতো স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর প্রাধান্য ছিল। গতকাল সর্বাধিক ১০ শতাংশ দর বেড়েছে কে অ্যান্ড কিউ কোম্পানির শেয়ারের। এর পরের অবস্থানে ছিল সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, শ্যামপুর সুগার, ন্যাশনাল হাউজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, কহিনূর কেমিক্যাল। বিপরীতে দর হ্রাসের শীর্ষে ছিল ইবিএল এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, তৃতীয় আইসিবি মিউচুয়াল ফান্ড, রহিমা টেক্সটাইল, ওসমানিয়া গ্গ্নাস ও জনতা ইন্স্যুরেন্স।

No comments

Powered by Blogger.