'এটা আমাদের সবার জয়'-কিন্তু খাদিজা বললেন

ধিনায়ক সালমার পাশে হেঁটে এসে যখন সংবাদ সম্মেলনের জন্য নির্ধারিত করে রাখা আসনে বসলেন তখনও খাদিজাতুল কুবরার মুখ থেকে বিস্ময়ের ঘোরটা কাটেনি। যেন নিজেও বুঝতে পারছেন না কী অসাধারণ একটা কীর্তি করে এসেছেন! একা, একেবারে একা ধসিয়ে দিয়েছেন আয়ারল্যান্ডের ইনিংস! যেটা তাঁর দলের জন্য ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ার স্বপ্ন টিকিয়ে রাখার ম্যাচ ছিল, যেখানে তারা ছিলেন পরিষ্কার আন্ডারডগ, সেই ম্যাচ বলতে গেলে


একা হাতে জিতিয়ে এনেছেন বাংলাদেশি এই অফসপিনার। টেস্ট ও ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়া একটা দলকে হারানোর নায়িকা হতে পেরে কেমন লাগছে?
কৃতিত্বটা অবশ্য সবাইকে ভাগাভাগি করেই দিলেন খাদিজা, 'এটা আমাদের সবার জয়। সালমা আপাসহ সবাই আমাকে অনেক উৎসাহ দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন। আমি শুধু চেষ্টা করেছি লাইন ও লেন্থ ঠিক রেখে বল করতে।' পাকিস্তানের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ৪ উইকেট পেয়েও হারতে দেখেছিলেন দলকে। কিন্তু এবার ক্যারিয়ারের তৃতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমেই দলকে জিতিয়েছেন, পেয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। ১৬ বছরের এই কিশোরীর উচ্ছ্বাসটা যেন বাঁধ মানছিল না, 'আমি খুব খুশি। ওয়ানডে স্ট্যাটাস পেতে হলে আমাদের এই ম্যাচে জিততেই হতো। খুব ভালো লাগছে যে আমরা সেটা পেরেছি।'
হারটা নিঃসন্দেহে একটা বড়সড় ধাক্কা আয়ারল্যান্ডের জন্য। বাংলাদেশের বড় শক্তি বোলাররা_এটা জানতেন, কিন্তু এ মাঠে স্পিন যে এতটা বিষাক্ত হয়ে উঠবে, এটা হয়তো ধারণা করেননি আইরিশ অধিনায়ক ইসোবেল জয়েস। হারের জন্য তিনি অবশ্য দায়ী করেছেন তাঁর ব্যাটসম্যানদের উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসাকে, 'আমরা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যাট করতে পারিনি। একের পর এক উইকেট দিয়ে এসেছি।'
যে ম্যাচে শেষ বেলায় এসে খাদিজার মাথায় মুকুট, সেখানে কিন্তু শুরুর আলোটা ছড়িয়েছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সালমা খাতুন। ব্যাট হাতে ৭৩ রানের একটি নিশ্ছিদ্র ইনিংস খেলেছেন, জয়ের প্রাথমিক ভিতটাও গড়ে উঠেছিল তাঁর সেই ইনিংসে। শুরুতে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলার পরও কিভাবে এই মনঃসংযোগ ধরে রাখলেন_এ প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশি অধিনায়ক জানালেন, এদিন তাঁরা পরিকল্পনা করেই নেমেছিলেন মিডল অর্ডারে ধস নামতে দেবেন না, 'আমরা চেয়েছি উইকেট ধরে রেখে শেষ দিকে রান বাড়ানোর প্রতি জোর দিতে।' তা-ই অবশ্য হতো। শেষ ১০ ওভারে কিছু দৃষ্টিকটু রান আউট না হলে আয়ারল্যান্ডের সামনে আরো বড় লক্ষ্যই দেওয়া যেত। বিশেষ করে যে মাঠে গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকটি তিন শ ছড়ানো ইনিংস হয়েছে, সেখানে ২০৯ করে কি আর কোনো অধিনায়ক নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারেন!
সালমা কি আর তখন জানতেন সেই ভাবনাটা খাদিজা নিজের কাঁধে নিয়ে রেখেছেন!

No comments

Powered by Blogger.