কলকাতার চিঠি by অমিত বসু

মঞ্চে নিঃসঙ্গ সম্রাট নাদির শাহ সংলাপে স্ফুলিঙ্গ। বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা, তোমার কল্পনার চেয়ে আমি বৃহৎ, তোমার আদর্শের থেকে আমি মহৎ, সঙ্কীর্ণ গ-ীতে আমায় বাঁধবে কে? সামনের আসনে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ।
নাট্যাচার্য শিশির ভাদুড়ি নাদিরের রোলে একাকার। যেন নিজের কথাই বলছেন। পর্বতপ্রমাণ ব্যক্তিত্ব পেশ করছেন আত্মগৌরবে। নাটক শেষে সে কথাই শিশিরকে বললেন রবীন্দ্রনাথ। কাছে ডেকে আনত্মরিক কমেন্ট, তোমায় আর নাদিরকে আলাদা করতে পারলাম না। সেই সঙ্গে অনুরোধ, আমার 'চিরকুমার সভা' তুমি মঞ্চস্থ করলে ভাল লাগবে। হলো না। সেই নাটকের নায়ক অৰয়কে যে গাইতে হবে। বদলে 'তপতী' করলেন শিশির। সেটাও চূড়ানত্ম সফল। ব্রেখটের নাটকেও অনিন্দ্য। শম্ভু মিত্র, উৎপল দত্তের অকৃত্রিম স্বীকারোক্তি, শিশির না এলে আমরা আসতাম না। শিশির ভাদুড়ির মৃতু্যর পঞ্চাম বছরে তাঁকে শ্রদ্ধায় স্মরণ উত্তরসূরিদের। বারবার আৰেপ, তাঁর নাটক সেলুলয়েডে গেঁথে রাখলে ৰতি কী ছিল। না শিশির ভাদুড়ি সেটা চাননি। বলেছিলেন, আমার নাটক ঘাসের আগায় শিশিরের মতো। ধরে রাখার নয়, চাইলে মনে রাখতে পার।

সময়টা বদলাবে
ভালবাসায় হাতি অবশ। গায়ের জোরে বশ করতে গেলে প্রতিবাদ। বৃংহলে অরণ্য কম্পমান। শুঁড়ে তুলে আছাড়। বিশাল প্রাণীটির বৃদ্ধির ঐশ্বর্য অপরিসীম। তাই বলে হৃদয়হীন নয়। বিবাদ নয় বন্ধুত্বে বিশ্বাস। ১৯৫৪'য় 'অঙ্কুশ'এ তপন সিমহার হাতির গল্প। সিনেমায় মনুষ্যতের প্রাণীর কাহিনী সেই প্রথম। এক বছর পর ১৯৫৫'য় সত্যজিৎ রায়ের 'পথের পাঁচালী।' ১৯৪৮'এ ডি'সিকার 'বাইসাইকেল থিভস' ঘোরাল সিনেমার মোড়। কৃত্রিম পোশাক ছেড়ে প্রকৃতির মতো মুক্ত-স্বচ্ছ স্বাভাবিক হয়ে উঠল চলচ্চিত্র। তপন সিনহার প্রথম মৃতু্যবার্ষিকীতে উঠে এল এসব কথা। ২০০৬ পর্যনত্ম ৪২টি ছবির জনক তিনি। শেষ সম্মান 'দাদাসাহেব ফালকে' পুরস্কার। নাট্যব্যক্তিত্ব মনোজ মিত্রের স্মৃতিচারণে স্পষ্ট উচ্চারণ, মানুষের ৰুদ্রতা, সঙ্কীর্ণতা দেখে বিরক্ত হতেন তপন। বিশ্বাস করতেন, সময়টা বদলাবে। ভালবাসায় ফিরবে সবাই।'

হুবহু এক
হাল্কা সবুজ, বিস্কিট বা বাফ সিফন শাড়ি। পিঠ ছাপান কালো চুল। চওড়া ভ্রূর নিচে গভীর অাঁখি। সেম লুক, হাসিটাও এক। ক্যাটরিনা কাইফ, জারিন খান দু'জনে যেন যমজ বোন। 'ভীর'-এ সালমান খানের পাশে জারিনকের ক্যাটরিনা মনে হওয়ার কারণ এটাই। আসল থাকতে ডুপিস্নকেট কেন? ঐশ্বরিয়া রাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের পর ২০০৫-এ 'লাকি_নো টাইম ফর লাভ'-এ সালমানের নায়িকা স্নেহা উলাল। স্কুলের মেয়ে। সালমানের বোনের বন্ধু। দেখতে হুবহু ঐশ্বরিয়া। শূন্যস্থান পূরণ। হারানোর দুঃখ দূর। তখন আর এখন তো এক নয়। ক্যাটরিনার সঙ্গে কাটাকাটি তো হয়নি। তবু আসল ছেড়ে নকল কেন? সালমানের আকাশে কী ফের কালো মেঘ। এটা ঠিক, একটু বেশি বাড়াবাড়ি করছে ক্যাটরিনা। পুরনো ফ্যাট ছেড়ে রণবীর কাপুরের কাছের আবাসনে উঠেছে সালমানকে না বলেই। কোন প্রেমিক এটা মানতে পারে।

চাকরির লোভে
পুরম্নলিয়া থেকে বিশ কিলোমিটার। পোড়ো জমিদার বাড়ি। ইটের পাঁজরে বৈভব হারানোর ব্যথা। সুখের খোঁজ সেখানে। নিরলস স্বপ্ন বোনা। কালা অতীতের তোয়াক্কা না করে ভবিষ্যতে আস্থা। লংশটে রাহুল-প্রিয়াঙ্কার ইতসত্মত পদচারণা। একবারেই ওকে। ডিরেক্টারের গলায় স্বসত্মির স্বর, কাট্! রবীন্দ্রনাথ মৈত্রের কালজয়ী গার্লস স্কুল এর চিত্রায়ন। এই নিয়ে তিনবার। ১৯৩৫-এ কানন দেবী, জহর গাঙ্গুলী। ১৯৫৮'য় উত্তমকুমার, অরম্নন্ধতী দেবী। এবার এরা দু'জন। শুধু বাংলায় নয়, তামিল, তেলেগু, মারাঠি, হিন্দীতেও হয়েছে। তেলেগুতে নায়ক জেমিনি গণেশন।

No comments

Powered by Blogger.