ফতুল্লায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার লাশ নিয়ে মিছিল, গ্রেফতার ৩- আ'লীগ দুই গ্রুপে উত্তেজনা

 ফতুল্লায় সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও পিটিয়ে ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সোহেল হত্যার ঘটনায় পুলিশ ৩ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে।
শুক্রবার রাতে পুলিশ ফতুল্লার দাপা পিলকুনি এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে কামরুল ইসলাম ওরফে হিটলার, সালাউদ্দিন ও মমিনুল ইসলাম মমিন। এদিকে শনিবার সকালে নিহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সোহেলের লাশ নিয়ে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগ শহরের মৌন মিছিল বের করে। এদিকে হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ফতুল্লা আওয়ামী লীগের দু'গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ফতুল্লা মডেল থানায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুলস্নাহ বাদল, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি চন্দনশীল, জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদির প্রমুখ।
ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, একদল চিহ্নিত সন্ত্রাসীর হামলায় নির্মমভাবে নিহত হয়েছে ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ সোহেল। অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় ফতুলস্নার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা লাঠিপেটা ও কুপিয়ে সোহেলকে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য খুনীরা লাশের পাশে আগ্নেয়াস্ত্র রেখে গেছে। ফতুলস্না থানা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, খুনীরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।
বিএনপি-জামায়াত চারদলীয় জোট সরকারের দুঃশাসনের সময় এই সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগের নেতাকমর্ীদের নানাভাবে অত্যাচার,- লাঞ্ছিত করেছে। বর্তমান মহাজোট সরকার মতায় আসার পর এই সন্ত্রাসীরা ভোল পাল্টে একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। অবিলম্বে এই ঘটনায় জড়িত খুনীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টানত্মমূলক শাসত্মির দাবি জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্বার করেন, ফতুলস্না থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল্লাহ বাদল, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফরিদ আহম্মেদ লিটন, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, ফতুলস্না থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল, সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উল্লাহ, থানা ছাত্রলীগ সভাপতি শরীফুল হক, সাধারণ সম্পাদক মান্নান, থানা কৃষক লীগের সভাপতি আবু হানিফ, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান প্রমুখ।
এদিকে বিকেলে ফতুল্লা দাপা ইদ্রাকপুর জামে মসজিদে নিহতের নামাজের জানাজার পর লাশ স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ সময় জানাজায় ও দাফনে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ শামীম ওসমানসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জীবন কান্তি সরকার জানান, এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। লাশের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
হত্যা মামলা দায়েরের পর হিটলার বাহিনীর হামলা এদিকে সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত ফতুলস্না থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সোহেল হত্যাকাণ্ডে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় নিহত সোহেলের বড় ভাই আব্দুর রহমান বাদী হয়ে সন্ত্রাসী হিটলার, জনি, মোমেন, সুমন, ফুয়াদ, রনি ও সেন্টুসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, সোমবার বিকেলে ফতুলস্নার দাপা এলাকায় সন্ত্রাসী হিটলার, জনি, মোমেন, সুমন, ফুয়াদ, রনি ও সেন্টুসহ প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও পিটিয়ে নির্মমভাবে সোহেলকে হত্যা করে।
মামলা দায়েরের পর নিহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সোহেলের সহযোগী মানিকের বাড়িতে হামলা চালায় সন্ত্রাসী হিটলারের বাহিনী। সন্ত্রাসীরা বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুর করে। মানিকের স্ত্রী আকলিমা ও ৫ বছরের শিশুকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। হামলায় আহত হয়েছে ৫ জন। গুরম্নতর আহতাবস্থায় মানিকের স্ত্রী আকলিমা ও ৫ বছরের শিশুপুত্রকে শহরের খানপুরে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ ২শ' শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় রক্তৰয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.