সোমার স্বপ্নের গল্প by সিফাত হোসেন

‘লাক্সের এই কম্পিটিশিনে যোগ দেয়ার পর থেকেই আমার জীবনটা পাল্টাতে শুরু করে। মিডিয়াতে আসার আগে আমি কখনও ভাবিনি যে, এ মাধ্যমে এভাবে আমার একটা জায়গা তৈরি হয়ে যাবে। লাক্সের ক্যাম্পে আসার পর আমি নানা ধাপে অংশ নিই। আসলে লাক্সের এই আয়োজনে নিজেকে জড়ানোটা ছিল অনেকটা শখের বশে। কিন্তু এত গভীরভাবে এ মাধ্যমকে ভালোবেসে ফেলব, এটা আমার জানা ছিল না।

এখন আমি আগের আর দশটা মেয়ের মতো সোমা নই। রাস্তায় বেরুলে এখন লোকজন আমাকে চিনতে পারছে, এটা আমি খুবই উপভোগ করছি।’ এক নিঃশ্বাসেই কথাগুলো বললেন এবারের লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টার প্রতিযোগিতার সেরা পাঁচে থাকা সোমা। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার পর অভিনয়ের প্রতি সোমার একটা ভালোবাসা ও আগ্রহ তৈরি হয়েছে। তিনি এখন অভিনয়ে নিজের একটা ভালো জায়গার স্বপ্ন বুনছেন। সোমা বললেন, ‘পাশাপাশি আমি উপস্থাপনাও করতে চাই। আমার ধারণা, আমি এ মাধ্যমেও হয়তো ভালো করব। তবে আমি চলচ্চিত্রে কাজ করার প্রতি অনেক আগ্রহী।
এটাই আমার বড় টার্গেট। আর এর কারণ, নাটক বেশিদিন টিকে থাকে না। কিন্তু একটি চলচ্চিত্র অনেক অনেক বছর টিকে থাকে। এ মাধ্যমে কাজ করা নিয়ে আমার ভাবনা হলো—আমি এমন ছবিতে কাজ করতে চাই যা পরিচ্ছন্ন বিনোদন দেবে দর্শকদের। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর দর্শকরা যে ছবি পছন্দ করে, আমি সে ধারার ছবিতে কাজ করতে চাই। এক্ষেত্রে যে ছবি আমার সম্মান না বাড়িয়ে বরং আমাকে নেতিবাচক আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত করবে, সে ধারার কাজে নিজেকে জড়ানোর কোনো ইচ্ছে আমার নেই।’ আমরা চলচ্চিত্র নিয়ে অনেক বিভাজনের গল্প শুনি। আপনার যাত্রা কোন ধারায় হতে পারে? এমন প্রশ্নে সোমার চটজলদি উত্তর, ‘আমি আসলে কমার্শিয়াল মুভিই করতে চাই। আমি এমন ছবিতে কাজ করতে চাই না, যে ছবিটি শুধুই স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পাবে। যা সব শ্রেণীর দর্শক দেখবে, আমি সে ছবিতেই কাজ করতে আগ্রহী। আমি একটি ছবিতে অভিনয় করলাম, আর সেটা কিছু দর্শক দেখল, আমি তা চাই না। আমার ছবিটি আর্টফিল্ম বলে চালিয়ে দেয়া হবে—এমন ছবিতে কাজ করে কী লাভ? আমি নিজের অভিনয়কে সবার কাছে জানান দেয়ার স্বপ্ন দেখি।’ সোমা এখন ভালো অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। যিনি ভালো অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন, অভিনয় নিয়ে তার তো কেউ আদর্শ থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক। সোমা যার অভিনয়ে মুগ্ধ হন—সে প্রসঙ্গ উঠতেই তিনি বললেন, ‘অপি করিমের অভিনয় আমার অনেক ভালো লাগে। তার অভিনয় দেখলে আমার কখনও মনে হয় না যে তিনি অভিনয় করছেন। তার অভিনয় খুব ন্যাচারাল। আর ম্যাচিউরড লেভেলে আমার ভালো লাগে সুবর্ণা মুস্তাফার অভিনয়। আসলে তার অভিনয় তো ভালো লাগতেই হবে। পাশাপাশি আমি বিপাশা হায়াতের অভিনয়ও অনেক পছন্দ করি। লাক্সের পারফর্মেন্সের অংশ হিসেবে আমাকে যখন কোনো চরিত্রে অভিনয় করতে হয়েছিল, সে সময় আমি ভেবেছিলাম তাদের কথা যে, এখানে বিপাশা আপু থাকলে তিনি কীভাবে অভিনয় করতেন, কিংবা অপি আপু কীভাবে ন্যাচারালি ডায়ালগ থ্রো করতেন।’ নিজের অবস্থান নিয়ে আপনি কী সন্তুষ্ট? এমন প্রশ্ন সোমার আকাশে উড়িয়ে দিলে মুহূর্তেই তিনি প্রশ্নটাকে ছুঁয়ে দেখলেন না। কিছুটা সময় নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিলেন এভাবে—‘আমি ক্রাউনটা পরার স্বপ্ন নিয়েই লাক্সে অংশড়্রহণ করেছি। আমার কিন্তু কালচারালি কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। তাই এমনটি ভাবিনি যে, আমি অভিনয় বা মডেলিং করব, তাই আমার একটা প্লাটফর্ম দরকার। কিন্তু এখানে নানা পরীক্ষা দিতে দিতে কিন্তু আমার একটা স্বপ্ন ঠিকই জায়গা করে নিয়েছে চোখের পাতায়। এই প্রতিযোগিতায় এসে দেখলাম, এখানে ট্যালেন্টকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়। কোনো রাউন্ড পার করতে হলে কথা দিয়ে, পারফর্মেন্স দিয়েই এগিয়ে যেতে হয়েছে। সময় যত গড়িয়েছিল, ততই কিন্তু ক্রাউনটা পরার আমার স্বপ্ন গাঢ় হয়েছে। এর কারণ, আমার কথা বলা, স্মার্টনেস, অভিনয়, নাচ নিয়ে কেউ এমনটি বলতে পারেনি যে সোমা তা পারে না। আমার মনে হয়, শুধু আমি নই, সেরা পাঁচে আমরা যারা ছিলাম, সবাই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন। ফাইনালের দিন আমি চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আমার নাম শোনার জন্য যেমন প্রস্তুত ছিলাম, তেমনি এটা নাও হতে পারে, সেটাও ভেবেছি। তবে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারায় মন খারাপ যে হয়নি, তা নয়।’ ছবি : মীর আহম্মেদ মীরু

No comments

Powered by Blogger.