দুর্নীতি নিয়ে 'নেতিবাচক আবহ' দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে : মনমোহন

ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেছেন, দুর্নীতি নিয়ে নির্বোধের মতো নেতিবাচক ও হতাশাজনক আবহ তৈরি করা হচ্ছে, যা দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এর ফলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নৈতিকতারও ক্ষতি হচ্ছে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। গতকাল বুধবার রাজধানী নয়াদিল্লিতে আয়োজিত সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।


মনমোহন বলেন, সরকার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সব ব্যবস্থাই নেবে। যেসব কম্পানি ঘুষ লেনদেন বন্ধে ব্যর্থ হবে, তাদের শাস্তি পেতে হবে বলেও সতর্ক করে দেন তিনি।
ভারতে সম্প্রতি দুর্নীতি ব্যাপক আলোচিত একটি বিষয়। মনমোহন ২০০৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা (ইউপিএ) সরকারের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যে মোবাইল ফোনের লাইসেন্স প্রদানে অনিয়ম, কয়লাক্ষেত্র বরাদ্দে অনিয়ম ও কমনওয়েলথ গেমস কেলেঙ্কারি অন্যতম। এ নিয়ে সরকার বেশ সমালোচনার মুখে পড়ে।
নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (সিবিআই) ১৯তম সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় মনমোহন বলেন, 'দুর্নীতি ইস্যু নিয়ে নির্বোধের মতো আমরা যে নেতিবাচক ও হতাশাজনক আবহ সৃষ্টি করছি, তা আমাদের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এ অবস্থা আমাদের জাতীয় ভাবমূর্তি ও সরকারি কর্মকর্তাদের নৈতিকতার ক্ষতি করবে।' ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকারের অনেক কার্যালয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ওইসব কার্যালয়ের কর্মকর্তারা এখন কাজ করতে ভয় পাচ্ছেন। গুরুত্বপূর্ণ ফাইলে সই করতে তাঁদের মধ্যে একরকম অনীহা দেখা যাচ্ছে। এ চিত্র ক্রমেই বাড়ছে। কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠতে পারে এবং তাঁরা তদন্তের মুখে পড়তে পারেন। মনমোহন বলেন, 'আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, আমরা যখন দুর্নীতি কঠোরভাবে দমন করব, তখন যাতে নিরপরাধ লোকজন হয়রানির শিকার না হন।'
ভারতে অনেকেরই অভিযোগ, প্রশাসনের সর্বস্তরে দুর্নীতি বেশ শক্ত আসন গেড়ে বসেছে। সামান্য একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে শুরু করে জমি কেনাবেচার মতো বিষয়ে ঘুষের লেনদেন সাধারণ ঘটনা। এ কারণে বিদেশি বিনিয়োগও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করা হয়। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.