গদি বাঁচাতে জনকল্যাণে অতিরিক্ত ব্যয়ের ঘোষণা সৌদি বাদশাহর-ফেইসবুকের মাধ্যমে ১১ মার্চ 'বিক্ষোভ দিবস' পালনের ডাক

সৌদি আরবের বাদশা আবদুল্লাহ জনগণের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে সাড়ে তিন হাজার ডলার অতিরিক্ত বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন। চিকিৎসার জন্য তিন মাস বিদেশে কাটিয়ে গতকাল বুধবার দেশে ফিরেই তিনি এ ঘোষণা দেন।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আরব বিশ্বের সরকারবিরোধী আন্দোলনের আঁচ থেকে রক্ষা পেতেই মূলত


সতর্কতামূলক এ উদ্যোগ নিয়েছেন আবদুল্লাহ। তবে ইতিমধ্যে সেই আঁচ লেগেছে সৌদি আরবে। রাজতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারব্যবস্থা চালুর দাবিতে কয়েক শ মানুষ 'বিক্ষোভ দিবস' পালনের ডাক দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেইসবুকে তারা 'বিপ্লবের জন্য ব্যাকুল প্রতীক্ষা' নামের একটি পেইজ তৈরি করেছে। সরকারব্যবস্থার পরিবর্তনের পাশাপাশি নারীদের ব্যাপক স্বাধীনতা বৃদ্ধি ও রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে আগামী ১১ মার্চ সাধারণ মানুষকে রাস্তায় নামার ডাক দিয়েছে তারা।
বাদশার ঘোষণা অনুযায়ী, অতিরিক্ত বরাদ্দের অর্থ মুদ্রাস্ফীতি কমানোসহ বেকারত্ব নিরসন, দারিদ্র্য বিমোচন, গৃহায়ণ ও দুর্নীতি রোধে ব্যবহৃত হবে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল রপ্তানিকারী দেশটিতে ২০০৯ সালের হিসাব অনুযায়ী সাড়ে ১০ ভাগ মানুষ বেকার।
নিউইয়র্কে গত ২২ নভেম্বর অস্ত্রোপচার হয় ৮৬ বছর বয়সী আবদুল্লাহর। এরপর স্বাস্থ্যোদ্ধারের জন্য ২২ জানুয়ারি মরক্কো যান তিনি। সেখান থেকে গতকাল দেশে ফেরেন। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিভিশন এ কথা জানিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আবদুল্লাহর তিন মাসের অনুপস্থিতিতে আরব বিশ্বে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে গেছে। জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট বেন আলী। দেশ থেকে পালিয়ে তিনি অবশ্য সৌদিতেই আশ্রয় নিয়েছেন। মিসরে ৩০ বছরের শাসক হোসনি মুবারকের পতন হয়েছে। আরো কয়েকটি দেশে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে। এ পরিস্থিতিতে গদি ঠিক রাখতে অর্থ বরাদ্দের পদক্ষেপ নিলেন সৌদি বাদশা।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাদশার ঘোষণায় জনগণ সন্তুষ্ট হবে কি না তা এখনি বলা যাচ্ছে না। কেননা, গত মাসে বন্যায় দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর জেদ্দা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন সেখানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়।
ফেইসবুকে প্রচারিত দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে_শুরা (পরামর্শক) কাউন্সিলের সদস্যদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার অধিকার দিতে হবে জনগণকে। বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন করতে হবে। রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। মত প্রকাশের ও সভা-সমাবেশ করার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র বাড়ানোসহ মাসে কমপক্ষে দুই হাজার ৭০০ ডলার মজুরি নির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছে। 'অবৈধ কর ও ভাতা' প্রত্যাহার করে দুর্নীতি কমাতে তদারকি সংস্থা গঠন করতে হবে। এ ছাড়া সামরিক বাহিনীর পুনর্গঠন, 'নারীদের ওপর অবৈধভাবে অর্পিত বাধা-নিষেধ দূর করা'সহ আরো কয়েকটি দাবি জানানো হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, গালফ নিউজ, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.