পরিবর্তনের ছোঁয়ায় by শাহ্রিয়া হ্যাপী

প্রায় দেড়শ' বছর ধরে হাজারো তরুণীর উচ্চশিক্ষার প্রত্যাশা পূরণ করে দেশের নারী জাগরণে অনন্য ভূমিকা পালন করেছে সরকারি ইডেন মহিলা কলেজ। তরুণীদের সম্মান ও মাস্টার্স কোর্স সম্পন্নের মাধ্যমে শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী হওয়ার পথ সুগম করে দিয়েছে এ কলেজটি। বর্তমানে ৩৮ হাজার ছাত্রী শিক্ষা গ্রহণ করছে এ কলেজে।


ছাত্রীদের সব সুযোগ-সুবিধা ও শিক্ষার মানোন্নয়ন করার সার্বিক গুরুদায়িত্ব পালন করতে হয় একজন দায়িত্বশীল অধ্যক্ষের। আর সেই গুরুদায়িত্ব গত দু'বছর ধরে পালন করছেন এ কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী। শত বছরের পুরনো এ কলেজের রূপ তিনি অনেকাংশেই পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন। তার সততা, কর্মদক্ষতা এবং নিপুণ পরিচালনায় কলেজের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। মেয়েদের চিকিৎসার প্রয়োজন মনে করে তিনি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত পিপিতে ইনসেপ্টা কোম্পানির সহযোগিতায় চালু করেছেন সার্বক্ষণিক মেডিকেল সেন্টার, যা আগে ছিল না। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে ছাত্রীদের সহজেই সনি্নবেশ ঘটানোর জন্য ওয়াইফাই ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবস্থা করেছেন। আবাসিক ছাত্রীদের সুস্থ, নিরাপদ আবাসনের কথা চিন্তা করে সরকারের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়েছে ১১ তলা আবাসিক হল, যা এ বছরের শেষদিকে প্রায় দুই হাজার ছাত্রীর আবাসন সমস্যা দূর করবে। ছাত্রীদের আর্থিক লেনদেনের সুবিধার্থে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে মাত্র ১০০ টাকায় অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় গত বছর থেকে। এ ছাড়া পড়াশোনার সুবিধার্থে সান্ধ্যকালীন লাইব্রেরি চালু করা হয়েছে। দূরের ছাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য দুটি বাস সার্ভিস চালু করার ফলে যাতায়াত ভোগান্তি অনেকখানি দূর হয়েছে। আবাসিক ছাত্রীদের জন্য পিডবি্লউডি, ওয়াসা, ঢাকা সিটি করপোরেশনের সমন্বয়ে পাইলট প্রোগ্রামের মাধ্যমে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা এবং পানি সংকটকালীন ১০ হাজার লিটার পানির রিজার্ভ ট্যাংকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাস্টার্স পর্বের ছাত্রীদের জন্য আইসিটি প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে, যা চাকরির ক্ষেত্রে সহায়তা করবে বলে তিনি আশা করেন। অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী বলেন, কলেজের সৌন্দর্যবর্ধন, বড় আকৃতির অডিটোরিয়াম, স্বতন্ত্র পরীক্ষার হল, ব্যাপকসংখ্যক পুস্তক সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, কলেজের দেয়ালে মুক্তিযুদ্ধের চিত্র তুলে ধরা_ এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে তিনি চেষ্টা করবেন। ছাত্রীদের প্রাপ্য সুযোগ দিয়ে লেখাপড়ায় আরও মনোযোগী করে তোলা এবং নারী শিক্ষার বিস্তার করাই তার কর্মজীবনের মূল লক্ষ্য বলে জানান তিনি। ইডেনের ছাত্রী ইশরাত জাহান সুমি জানান, ব্যাপক উন্নয়ন নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এ কলেজ। এভাবে সামনের দিকে এগোতে থাকলে ছাত্রীদের ফল আরও ভালো হবে।
প্রসঙ্গক্রমে অধ্যাপক মাহফুজা চৌধুরী নারীনীতি নিয়ে বলেন, কিছুসংখ্যক কুচক্রী লোক নারীনীতি প্রতিষ্ঠায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, যা আমাদের ছাত্রীদের ভবিষ্যতের জন্য হতাশাব্যঞ্জক। প্রতিটি নারীকে সজাগ থাকতে হবে তার অধিকার রক্ষায়।
 

No comments

Powered by Blogger.