নিরাপত্তা ও সেবার মান নিচেই নামতে থাকবে?-যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে রেলওয়ে

শুক্রবার গাজীপুরে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে এক যাত্রীর দুঃখজনক মৃত্যু ঘটেছে। এ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। বিষয়টিকে নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে ধরে নিলেও এটা বলতেই হবে যে কোথাও না কোথাও দায়িত্বে অবহেলার কারণেই এটা ঘটেছে। একই দিন প্রথম আলো পত্রিকায় রেলওয়ের ওপর আরও একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।


সেখানে চারটি রেলস্টেশনের অরক্ষিত দশার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যোগাযোগের সবচেয়ে নিরাপদ, উপযোগী ও সুলভ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত রেলওয়ে যে বাংলাদেশে কতটা অবহেলার শিকার, এটাই তার প্রমাণ বহন করে।
শুক্রবারের রেল দুর্ঘটনার পর রেল ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় বলেছেন, ‘রেল একটি নিরাপদ সার্ভিস। এটি যাতে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে না পারে সে জন্য ষড়যন্ত্র চলছে।’ মন্ত্রীর মুখে এ ধরনের কথা শুনে উদ্বিগ্ন না হয়ে উপায় নেই। কারা এই ষড়যন্ত্র করছে? সরকারের কাছে যদি এ ধরনের কোনো তথ্য থেকে থাকে, তবে সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন? দেশের সরকার ও নীতিনির্ধারকদের কাছে রেলওয়ে খাতটি কখনোই গুরুত্ব পায়নি।
নিরাপদ ও সুলভ—এই বিবেচনায় যাত্রীরা ভ্রমণের ক্ষেত্রে রেলওয়েকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। ফলে যেসব রুটে নিয়মিত ট্রেন চলাচল করে, সেসব রুটে ট্রেনের টিকিট পাওয়া কঠিন। এর পরও দেখা যায়, রেলওয়ে বছরের পর বছর লোকসান দিয়ে চলছে। ব্যবস্থাপনার সমস্যার কারণেই ট্রেনের সময়সূচি ঠিক রাখা যায় না, নির্ধারিত সময়ে ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছায় না, যাত্রীরা যথাযথ সেবা পায় না এবং নানা ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটে। বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে গাজীপুর পর্যন্ত চারটি রেলস্টেশন আছে, কিন্তু সেখানে রেলওয়ে পুলিশ না থাকায় যাত্রীরা নিয়মিতই ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে। এটিও প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের তথ্য। নানা সমস্যায় জর্জরিত দেশের স্টেশনগুলো। রেলওয়েকে প্রকৃত অর্থেই একটি নিরাপদ বাহন হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সব ক্ষেত্রেই এর নিরাপত্তার দিকটি যেমন নিশ্চিত করতে হবে, তেমনি যাত্রীসেবার মানও বাড়াতে হবে।
শুধু কথায় নয়, রেলের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে কার্যত।

No comments

Powered by Blogger.