জাতিসংঘ মহাসচিবের সতর্কবাণী-সিরিয়া বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের ব্যর্থতা হবে ‘গণহত্যার অনুমতি’

জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন জানিয়েছেন, সিরিয়া সংকট সমাধানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, সিরিয়ার বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদ ব্যর্থ হলে তা হবে ‘আরও গণহত্যার অনুমতিপত্র’।


সিরিয়ার ত্রেইমশা গ্রামে সাম্প্রতিক গণহত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বান কি মুন সিরিয়াবিষয়ক জাতিসংঘ ও আরব লিগের বিশেষ দূত কফি আনানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানান।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উদ্দেশে এক বিবৃতিতে মুন বলেন, ‘সিরিয়ায় যেসব শোকাবহ ঘটনা ঘটছে, তা থামাতে এখনই সামষ্টিক ও চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে আমি সব সদস্যরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
গত বৃহস্পতিবার ত্রেইমশা গ্রামে অন্তত ১৫০ ব্যক্তি গণহত্যার শিকার হওয়ার পর সিরিয়ার বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব পাসে নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনার জন্য চাপ বেড়েছে। অবশ্য, আনানের শান্তি প্রচেষ্টায় সবাইকে ফিরিয়ে আনতে অসামরিক অবরোধ আরোপে পশ্চিমাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছে রাশিয়া।
ত্রেইমশা গ্রামের ‘রোমহর্ষক’ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মুন বলেন, ওই ঘটনা আন্তর্জাতিক শান্তি পরিকল্পনার বিষয়ে আসাদের প্রতিশ্রুতির ওপরে মারাত্মক সন্দেহ তৈরি হয়েছে। তিনি জনবহুল এলাকায় নির্বিচারে ভারী অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার এবং হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
আর নিরাপত্তা পরিষদে পাঠানো এক চিঠিতে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব আনান বলেছেন, জনবহুল এলাকায় ভারী অস্ত্র ব্যবহার বন্ধে সিরিয়ার সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কামান, ট্যাংক ও হেলিকপ্টার ব্যবহার তার স্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে বলতে হচ্ছে, নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব যে অব্যাহতভাবে অবজ্ঞা করা হচ্ছে, এসব ঘটনা তারই নজির।’
নিরাপত্তা পরিষদ গত এপ্রিল মাসে দুটি প্রস্তাব পাস করে। ওই প্রস্তাবের আওতায় সিরিয়ায় জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক মিশন স্থাপন করা হয় এবং প্রেসিডেন্ট আসাদ আনানের যে ছয় দফা শান্তি পরিকল্পনায় সই করেছিলেন, তা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। আনান নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি পুনরায় আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তাঁর শান্তি পরিকল্পনাকে অবজ্ঞা করলে পরিণাম ভোগ করতে হবে বলে পরিষদের পক্ষ থেকে সবাইকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া দরকার।
সিরিয়ায় জাতিসংঘ মিশন নবায়ন করতে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাসে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তা ভাঙতে গত শুক্রবার আবারও বৈঠকে বসেন জাতিসংঘের কূটনীতিকেরা। ২০ জুলাই সেখানে ৯০ দিনের মিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এর মধ্যেই এ বিষয়ে নতুন ভোট অনুষ্ঠিত হতে হবে।
যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও পর্তুগাল যে প্রস্তাব আনতে যাচ্ছে, তাতে কফি আনানের শান্তি পরিকল্পনার সঙ্গে সংগতি রেখে ভারী অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার বন্ধে আসাদকে আরও ১০ দিন সময় দেওয়া হতে পারে। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.