আবেদনের সময়সীমা বাড়ানো উচিত by রানা দাসগুপ্ত

অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পন আইন অনুযায়ি ক তফসিলের গেজেটে প্রকাশের ১২০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে হবে। ইতিমধ্যে দেখা যাচ্ছে, ক তফসিলের গেজেট বেরিয়ে গেছে বলা হলেও এখনো ক তফসিলের গেজেট বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে না।


যেখানে পাওয়া গেছে, সেখানে দেখা গেছে যে ট্রাইব্যুনালে আবেদনের সময়সীমা পেরিয়ে গেছে অথচ ট্রাইব্যুনাল হয়নি। কোথাও দেখা যাচ্ছে, ক তফসিলের গেজেট পেয়েছে ট্রাইব্যুনাল, হাতে সময় আছে মাত্র ১৫-৩০ বা ৪০ দিন। ফলে মানুষ সময়মতো আবেদন করতে পারছে না। আইনে লেখা আছে, আবেদন করার সময় কী কী কাগজ দিতে হবে। মানুষের কাছে তো সব সময় কাগজ থাকে না, মানুষ যখন কাগজ জোগাড় করতে যাচ্ছে, যেমন উত্তরাধিকার সনদপত্র, খতিয়ান ইত্যাদি। দেখা যাচ্ছে, খতিয়ান পাওয়ার জন্য লম্বা সারি ধরতে হচ্ছে, কিন্তু যারা খতিয়ান দিচ্ছে, সেখানে তো কর্মীসংখ্যা কম, তাই সরবরাহ করতে পারছে না—এটা হচ্ছে ভূমি অফিসের চিত্র। অনেক জায়গায় দাগ নম্বর ঠিক, খতিয়ান নাম ভুল।
যেখানে ট্রাইব্যুনাল হয়েছে, সেখানে আবেদন করার জন্য তো কোর্ট ফি লাগে, সেখানে যার কাছ থেকে যেমন পারছে, কোর্ট ফি নেওয়া হচ্ছে। যে কারণে আবার আবেদন করতে গিয়ে মানুষ বিভ্রান্তিতে পড়ছে। আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা করার এ দায়িত্ব সরকারের হলেও সরকার আজ পর্যন্ত প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। মানুষ এ বিষয়ে আইন সম্পর্কে জানে না। অথচ আইনে বলা আছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি মানুষ আবেদন না করে, সেই সম্পত্তিগুলো খাসজমি হিসেবে গণ্য করা হবে। যাদের উপকারের জন্য এ আইন করা হয়েছে, তারা নতুন সংকটে পড়বে এবং উচ্ছেদ হয়ে যাবে।
বগুড়ার ১১টি উপজেলার মধ্যে সাতটি উপজেলায় ট্রাইব্যুনালের আবেদন দায়েরের সময়সীমা অতিক্রম হয়ে গেছে। দিনাজপুরে ১৩টি উপজেলার মধ্যে ছয়টি উপজেলার আবেদনের সময়সীমা অতিক্রম করেছে এবং বাদবাকি উপজেলায় ৫৮টি আবেদন পড়েছে। সিরাজগঞ্জে নয়টি উপজেলার মধ্যে দুটি উপজেলার আবেদনের সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে, গাইবান্ধা জেলার চারটি উপজেলার একটিতে আবেদনের সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে, লালমনিরহাটে চারটির মধ্যে দুটি উপজেলার আবেদন শেষ হয়ে গেছে. কক্সবাজারের দুটি উপজেলার আবেদনের সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে। সারা বাংলাদেশে এ জায়গাগুলোয় ট্রাইব্যুনাল বসেছে মাত্র দুই-তিন দিন, অথচ এরই মধ্যে আবেদনের সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে। প্রতি জেলায় একাধিক ট্রাইব্যুনাল করতে হবে। কোর্ট ফি কত হবে, তা নির্ধারণ করে ইতিমধ্যে জানিয়ে দেওয়া হয়, যাতে মানুষ ভোগান্তি থেকে রেহাই পায়। আবেদনের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর ২০১২ কিংবা ৩৬০ দিন পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। গেজেট সংশোধন করে পুনরায় প্রকাশ করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.