কাউন্সিলরদের ভোট গণনা শেষ না হওয়ার দায় কার?-দিগ্ভ্রান্ত ছাত্ররাজনীতি

ছাত্রসংগঠনগুলো যে গঠনতন্ত্র তথা নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করে না; চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের নেতৃত্ব নির্বাচনে কাউন্সিলরদের ভোট দুই বছরেও গণনা শেষ না করা তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ বটে। কাউন্সিলরদের ভোট হয়েছিল ২০১০ সালের ১১ আগস্ট, ১১৮ কাউন্সিলরের মধ্যে ১০৮ জন তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন যোগ্য নেতৃত্ব


নির্বাচনের আশায়। কিন্তু সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সেখানে ভোট গণনা না করে ভোটের বাক্স ঢাকায় নিয়ে আসেন। এরপর প্রায় দুই বছর পার হলেও রহস্যজনক কারণে তাঁরা ফল প্রকাশ করেননি।
এর আগে ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের সম্মেলনে ৮১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির নেতারা এত দিনে ছাত্রত্ব ত্যাগ করে কর্মজীবনে প্রবেশ করেছেন, অনেকে সন্তানের বাবা হয়েছেন। তার পরও তাঁরা নগর ছাত্রদলের নেতা! নতুন কমিটি না হওয়ায় কারও হাতে দায়িত্বও অর্পণ করতে পারছেন না।
ছাত্রদলসহ বিএনপির সব সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্র থেকে জেলা পর্যায়ের কমিটি গঠিত হয় বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বের নির্দেশনায়। কিন্তু এখানে সেই নির্দেশনাও কাজে লাগছে না। বিএনপির চেয়ারপারসন রোজার মধ্যে চট্টগ্রাম নগর কমিটি গঠন করার আশ্বাস দিলেও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সাংগঠনিক সম্পাদক বলেছেন, কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের আগে জেলা পর্যায়ের কমিটি আপাতত
হচ্ছে না।
এখন ওই সাংগঠনিক সম্পাদক কেন্দ্রীয় কমিটির দোহাই দিচ্ছেন। কিন্তু এত দিন কাউন্সিলরদের ভোট নেওয়ার পরও কেন চট্টগ্রাম নগর কমিটি গঠিত হলো না, কেন ভোটাভুটির ফল প্রকাশ করা হলো না—সেই প্রশ্নের জবাব দেবে কে?
এ ধরনের সাংগঠনিক অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা কেবল চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি নিয়েই যে হচ্ছে, তা নয়। ছাত্রদলসহ অধিকাংশ ছাত্রসংগঠন চলছে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীবিশেষের খেয়ালখুশিমতো। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অছাত্ররাই ছাত্ররাজনীতির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সবকিছু ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থার অবসান হওয়া প্রয়োজন।
আমরা চাই সব ছাত্রসংগঠনই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চলুক এবং কারও লেজুড়বৃত্তি নয়, ছাত্রদের সমস্যা নিয়ে তারা কথা বলুক। ছাত্ররাজনীতিই পথ দেখাক জাতীয় রাজনীতিকে।

No comments

Powered by Blogger.