আদালত মোকাবিলার পথ খুঁজছে পিপিপি

পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান পিপলস পার্টিকে (পিপিপি) চলতি সপ্তাহে আদালতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মোকাবিলা করতে হবে। একটি হলো আদালত অবমাননা বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে অব্যাহতি দিয়ে পার্লামেন্টে সম্প্রতি যে আইন পাস করা হয়েছে, তা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা আবেদন কাল সোমবার গ্রহণ করবেন সুপ্রিম কোর্ট।


অন্যটি পিপিপির নেতা ও প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা চালু করতে প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফকে আদালতের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হচ্ছে আগামী বুধবার।
পিপিপির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, চলতি সপ্তাহে এ দুটি বিষয়ে দলীয় অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে পিপিপির নেতাদের মধ্যে বিতর্ক চলছে। দলটি আদালতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে, নাকি আদালতকে পিপিপিবিরোধী রায় দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে—তা নিয়ে নিজেদের মত তুলে ধরছেন নেতারা। সম্প্রতি এ বিষয়টি নিয়ে পিপিপি কয়েকটি বৈঠক করে। গত মঙ্গলবারের বৈঠকে প্রেসিডেন্ট জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী আশরাফসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবারের বৈঠকে পিপিপির নেতারা ভবিষ্যতে পিপিপির বিরুদ্ধে আদালতের যেকোনো রায়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার পক্ষে মত দেন। তবে সিনেটর ও দলের জ্যেষ্ঠ নেতা রাজা রাব্বানি আদালতের বিরুদ্ধে সাংঘর্ষিক কোনো অবস্থানে যাওয়ার বিপক্ষে মত দেন। জারদারি অবশ্য এ ব্যাপারে এখনো নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেননি। পিপিপির একটি সূত্র জানায়, বেশির ভাগ নেতাই কঠোর অবস্থান নেওয়ার পক্ষপাতী। এমনকি আদালতের আদেশে বরখাস্ত হওয়া প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির ব্যাপারে আদালতের বিরুদ্ধে দলের শক্ত অবস্থান না নেওয়ার বিষয়টি সঠিক হয়নি বলেও মনে করেন অনেক নেতা।
পিপিপির একজন নেতা বলেন, বৈঠকে অংশ নেওয়া নেতারা এটা মনে করেন যে পিপিপি বা তার কোনো নেতার ব্যাপারে আদালত নিরপেক্ষ কোনো রায় দিচ্ছেন না। তাই আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে রাজপথে নামলে কোনো ভুল হবে না। বৈঠকে আদালত অবমাননা থেকে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে অব্যাহতি দেওয়াসংক্রান্ত আইনটি কিছু জায়গায় আদালত পরিবর্তন আনতে পারেন বলে আলোচনা হয়।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালমান আকরাম রাজা বলেন, আদালত চাইলে আদালত অবমাননাসংক্রান্ত আইনটির যেকোনো অংশ বা পুরো আইন বাতিল করে সরকারকে তা মেনে নিতে হবে। অথবা আদালত নতুন আইনের ব্যাপারে শুধু বিস্তারিত ব্যাখ্যা করতে পারেন। পিপিপি তা পার্লামেন্টে নিয়ে সংশোধন করে আবার পাস করতে পারে।
অন্যদিকে, জারদারির বিরুদ্ধে মামলা চালু করতে সুইস কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখতে আদালতের নির্দেশ না মানায় প্রধানমন্ত্রিত্ব ও সংসদ সদস্যপদ হারাতে হয় ইউসুফ রাজা গিলানিকে। এরপর আশরাফ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে তাঁকে ওই চিঠি লেখার নির্দেশ দিয়ে সময় বেঁধে দেন আদালত। আগামী বুধবার সেই সময় শেষ হচ্ছে। এ ব্যাপারে পিপিপিকে বুধবারের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ডন অনলাইন।

No comments

Powered by Blogger.