সড়ক ভবন-সরকার বদলায়, বদলায় না টেন্ডারবাজরা by পার্থ সারথি দাস ও এস এম আজাদ

যোগ্য ঠিকাদাররা দরপত্রে অংশ নিতে পারেন না। অনেক ক্ষেত্রে দরপত্র আহ্বান করাও হয়। 'গোপনে' কাজ ভাগ করা হয়। এ রকম দুর্নীতির কেন্দ্র রাজধানীর সড়ক ভবন। এ কারণে ঠিকাদারদের বিরাট অংশই ক্ষুব্ধ। সড়ক ভবনের এই 'গোপন দরপত্রের' তদন্ত করবে দুর্নীতি দমন কমিশন।


এদিকে সড়ক ভবনে গোলাগুলির ঘটনার তিন দিনেও কামাল উদ্দিন খন্দকারসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) প্রধান প্রকৌশলীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় ১৮ প্রকৌশলীর একটি চক্র এই 'দরপত্র দুর্নীতি'র সঙ্গে জড়িত। সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ শাহাব উদ্দিন, আরেক সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আবদুল কুদ্দুস সড়ক ভবনকে গোপন দরপত্রের কেন্দ্রে পরিণত করেন। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, ঠিকাদারদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় চলতি বছর গোপনে ভাগ করে নেওয়া ২৮৫ কোটি টাকার কার্যাদেশ বাতিল করে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। বর্তমানে দরপত্র নিয়ন্ত্রণ সিন্ডিকেটে সরকারদলীয় একাধিক সংগঠনের নামে তৎপরতা চলছে। জানা গেছে, সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে সড়ক ভবন শুধু নয়, এলেনবাড়ীর সওজের ঢাকা জোন অফিসেও আধিপত্য ধরে রাখতে সচেষ্ট অস্ত্রবাজরা।

সওজের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী আমিনুর রহমান লস্কর কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এলটিএমের (লিমিটেড টেন্ডারিং মেথড) মাধ্যমে ২৮৫ কোটি টাকার কাজ দেওয়া নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। আমরা এটি বাতিল করেছি। সড়ক ভবনে আমি প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আইন মেনে ও স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করছি। আগে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে। এখন সড়ক ভবনে আমার কাছে কোনো গ্রুপ নেই। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে।'
সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাইদুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ১৮টি বড় কাজের দরপত্র আহ্বান করতে হবে। এবার দরপত্র আহ্বান একসঙ্গে করা হবে না। আলাদা করে নিয়মমতো দরপত্র আহ্বান করা হবে।
সওজের প্রকৌশলী ও ঠিকাদারদের কাছ থেকে জানা গেছে, লিমিটেড টেন্ডারিং মেথড সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের জরুরি ভিত্তিতে দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া। জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার কিংবা নির্মাণের প্রয়োজনে এই প্রক্রিয়ায় দরপত্র আহ্বান করা হয়ে থাকে। কিন্তু এখন লুটপাটের উদ্দেশ্যে গোপনে এই ধরনের দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে। গত আগস্ট মাসে গাজীপুর-মাওনা সড়কের জরুরি সংস্কারকাজের জন্য ১৮ কোটি টাকার কাজ ভাগ করে দেওয়া হয় কোনো ধরনের দরপত্র আহ্বান ছাড়াই। ওই সময়ে একইভাবে ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-আরিচাসহ বিভিন্ন মহাসড়ক সংস্কারে ৩০০ কোটি টাকার কাজ দেওয়া হয়।
সড়ক ভবনের প্রকৌশলীদের কাছ থেকে জানা গেছে, এই পদ্ধতিতে এখন দুর্নীতি হচ্ছে অতি কৌশলে। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের প্রথম বছরের প্রায় চার মাসেই ১৪ কোটি টাকার দুর্নীতি ধরা পড়েছিল। এর আগে চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে ২০০৬ সালে এ ধরনের দরপত্রের মাধ্যমে ১১৮ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে বলে তথ্য মিলেছে। ২০০৭ সালে ৯৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা লুটপাটের তথ্য মিলেছে।
জানা গেছে, উন্মুক্ত দরপত্র এড়াতে সওজের ঢাকা জোন ব্যয় ৫০ লাখ টাকার নিচে রেখে গোপনে এ কার্যাদেশগুলো দিচ্ছে। প্রতিবছর সওজে জরুরি ভিত্তিতে গোপন দরপত্র হিসেবে পরিচিত এলটিএমের মাধ্যমে রাস্তা সংস্কারের নামে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয়। এই অর্থের বড় অংশই লুটপাট হয়ে থাকে। সড়ক ভবনের বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতির মধ্যে এলটিএম পদ্ধতির মাধ্যমে কাজ নেওয়ার ক্ষেত্রে কী পরিমাণ অর্থ লুট করা হয়েছে, তা তদন্ত করছে দুদক। দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা বেলাল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাদের অনুসন্ধান চলছে।'
২৮৫ কোটি টাকার দরপত্র জালিয়াতি : চলতি বছরের শুরুর দিকে সওজের ঢাকা জোনে এলটিএম পদ্ধতিতে ২৮৫ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয় জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে। কার্যাদেশও দেওয়া হয়েছিল। সওজের সদ্য সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আবদুল কুদ্দুস অবসর নেওয়ার আগে তাড়াহুড়ো করে গোপনে এই দরপত্র আহ্বান করেন। অবসর নেওয়ার পরও তিনি কার্যাদেশপত্রে স্বাক্ষর করেন। নিয়ম অনুযায়ী প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরের রেজিস্টারে ওই সব কার্যাদেশ লিপিবদ্ধ করার কথা। কিন্তু তা করা হয়নি। ওই সব কার্যাদেশপত্রে স্মারক নম্বরও দেওয়া হয়নি। ঢাকা জোনের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনা, শেরপুর, নরসিংদী ও মুন্সীগঞ্জ- এই আট জেলার সড়ক সংস্কারের জন্য ২৮৫ কোটি টাকার এই কাজ গোপনে ভাগ-বাটোয়ারা করা হয়। তিনটি গ্রুপে গোপনে দরপত্র আহ্বান করা হয়। জানা গেছে, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন (পিপিআর) ২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-০৮ অনুযায়ী, সরকারি কাজে স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দরপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তত তিনটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ) ওয়েবসাইটে নোটিশ প্রকাশ এবং পাঁচ কোটি টাকার বেশি কাজের দরপত্র কেনা ও জমা দেওয়ার জন্য অন্তত ২৮ দিন সময়সীমা দেওয়ার বিধান আছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয়নি। দরপত্র বিক্রির শেষ দিন ছিল গত ৮ জানুয়ারি। দরপত্র জমা ও খোলার দিন ছিল গত ৯ জানুয়ারি। দরপত্র জমা দেওয়ার সময় পার হওয়ার পর তড়িঘড়ি করে এসব কাজের নোটিশ সিপিটিইউয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। পিপিআরের শর্ত অনুযায়ী একই কাজকে একাধিক ভাগে ভাগ করার কোনো নিয়ম নেই। অথচ প্রতিবছর সওজে জরুরি ভিত্তিতে গোপন দরপত্র হিসেবে পরিচিত লিমিটেড টেন্ডারিং মেথডের মাধ্যমে রাস্তা সংস্কারের নামে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয়।
সরকার পাল্টায়, পাল্টায় না নিয়ন্ত্রক : অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে সড়ক ভবনে দরপত্র বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রকদের হাত পাল্টে যায়। তবে কমিশন একই থাকে। সরকারদলীয় খণ্ডকালীন ঠিকাদার, নেতা-কর্মী, ক্যাডার, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের শ্রমিক নেতাদের কয়েকটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে এ বাণিজ্য। জানা গেছে, বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ কর্মচারী ইউনিয়ন, বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন এবং বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ মেকানিক্যাল ওয়ার্কশপ এমপ্লয়ার্স ইউনিয়ন- এ চারটি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের মধ্যে বিএনপি ও আওয়ামী লীগপন্থী ধারা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন খন্দকার বর্তমান সরকারের দরপত্র বাণিজ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী। প্রচার রয়েছে, শ্রমিক লীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া দুলাল ও কামাল উদ্দিন খন্দকারের অজান্তে সড়ক ভবনে একটি কাজেরও দরপত্র দাখিল হয় না। অথচ তাঁরা দুজনই দরপত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো কাজ করেন না।
বিএনপির আমলে নিয়ন্ত্রণ ছিল বিএনপিপন্থী সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ শ্রমিক ইউনিয়নের। এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান ঝুমু বর্তমানেও সক্রিয় আছেন। এসব সংগঠনের নেতারা প্রতিটি কাজে আলাদাভাবে কমিশন আদায় করে থাকেন। তবে সামনে থাকেন সরকারদলীয়রাই।
ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করেন সরকারদলীয় খণ্ডকালীন ঠিকাদাররা। তাঁরা বেশির ভাগই রাজনৈতিক দলের নেতা-ক্যাডার পরিচয়ে পরিচিত। তাঁদের একটি গ্রুপ ঠিকাদারি কাজ করে, অন্য গ্রুপ তদবির করে গোপনে কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়। সূত্র জানায়, ঠিকাদার সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ সেন্টু ওরফে সাদা সেন্টু এবং সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রচার সম্পাদক শামীম শাহরিয়ারের দাপট এখন বেশি। মিলেমিশে কাজ করছেন যুবলীগ নেতা শাহীন, টুটুল, ছাত্রলীগ নেতা মামুনসহ কয়েকজন।
গত বছর এসব চক্র মিলে ২৮৫ কোটি টাকার ১৬টি ঠিকাদারি কাজ অনিয়মের মাধ্যমে ভাটোয়ারা করে। একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অনুসন্ধানে অনিয়ম ধরা পড়লে কাজগুলো বাতিল করা হয়। সূত্র জানায়, গোয়েন্দা প্রতিবেদনে সংগঠনের নেতা এবং সরকারদলীয় সিন্ডিকেটের তৎপরতা প্রকাশ পেলে এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। কামাল গ্রুপ সন্দেহ করে সেন্টু-শামীম গ্রুপ গোয়েন্দাদের তথ্য দিয়েছে। আবার সেন্টু-শামীম গ্রুপ সন্দেহ করে গোয়েন্দা প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন কামাল। বাতিল হওয়া প্রকল্পগুলোর জন্য গ্রহণ করা কমিশনের টাকা নিয়েও তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। অফিস স্থানান্তরের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং সম্ভাব্য টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকে ঘিরে বিরোধে নতুন মাত্রা পায়। গত মঙ্গলবার এই বিরোধের প্রকাশ্য রূপ দেখা যায়।
সড়ক ভবনে ভেতরে কার পার্কিংয়ের পাশে টিনশেডের ঘরে শ্রমিক-কর্মচারীদের ইউনিয়নের কার্যালয়। অভিযোগ আছে, সেখানে বসে সাংগঠনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি দরপত্রের বাটোয়ারা ও কমিশন-বাণিজ্য চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের কিছু নেতার নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে এসব অফিস। সরকারি দল সমর্থিত সংগঠন এবং সড়ক বিভাগের শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার কারণে সেখানে বেশি প্রভাব ছিল কামাল উদ্দিন খন্দকারের। তবে সম্প্রতি সড়ক বিভাগের ঢাকা জোনাল অফিস এলেনবাড়ীতে স্থানান্তরের কারণে তিনি সেখানে নিয়মিত যাচ্ছিলেন না। তাই ইউনিয়নের অফিস সরাতে চাইছেন তিনি। নিজের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে টেন্ডার জোনাল অফিস থেকে দেওয়ার পক্ষে অবস্থান নেন কামাল। তবে ইউনিয়ন অফিস দখল করে সেখানে রাখার পক্ষে সরকারদলীয় ঠিকাদার সিন্ডিকেট। সেন্টু-শামীমের নেতৃত্বের ওই সিন্ডিকেটের সঙ্গে যোগ হয়েছে বিএনপিপন্থী ইউনিয়নও। অফিসে যাওয়ার জন্য ওই গ্রুপকে চ্যালেঞ্জ করে কথা বলায় কথাকাটাকাটির জের ধরে মঙ্গলবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবারের পর থেকে সড়ক ভবনের ওই এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে সেন্টু-শামীম গ্রুপ।
কামাল এখনো ধরা পড়েননি
সড়ক ভবনে গোলাগুলির ঘটনায় কামাল উদ্দিন খন্দকারসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। মহানগর পুলিশের রমনা জোনের উপকমিশনার সৈয়দ নূরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাদের ওপর কোনো চাপ নেই। আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।'
এদিকে অভিযুক্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সরকারদলীয় ঠিকাদার পক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার সরকারদলীয় ঠিকাদারদের পক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহসভাপতি শেখ গোলাম আজম প্রধান প্রকৌশলী বরাবর একটি আবেদন করেন। আবেদনে তিনি অভিযুক্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
গত বুধবার ভোরে আবুল কালাম আজাদ নামে এক আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। আজাদকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.