পবিত্র কোরআনের আলো-সহকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের উপদেশ

১৫৭. ওয়া লায়িন ক্বুতিলতুম ফী ছাবীলিল্লা-হি আও মুত্তুম লামাগফিরাতুম্ মিনাল্লা-হি ওয়া রাহ্মাতুন খাইরুম্ মিম্মা- ইয়াজমায়ূ'ন। ১৫৮. ওয়ালায়িম্ মুত্তুম আও ক্বুতিলতুম লা-ইলাল্লা-হি তুহ্শারূন। ১৫৯. ফাবিমা-রাহ্মাতিম্ মিনাল্লা-হি লিনতা লাহুম; ওয়ালাও কুনতা ফায্য্বান গালীয্বাল ক্বালবি লানফাদ্দ্বূ মিন হাওলিকা;


ফা'ফু আ'নহুম ওয়াছতাগফির লাহুম ওয়াশায়িরহুম ফিল আমরি; ফাইযা-আ'যাম্তা ফাতাওয়াক্কাল আ'লাল্লাহি; ইন্নাল্লা-হা ইউহিব্বুল মুতাওয়াক্কিলীন। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৫৭-১৫৯]
অনুবাদ : ১৫৭. তোমরা যদি আল্লাহর পথে নিহত হও অথবা মৃত্যুবরণ করো তবে আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত ও ক্ষমা লাভ করবে। এরা যা ধন-সম্পদ জমিয়ে রাখে এটা তার চেয়ে অনেক উত্তম।
১৫৮. যদি তোমরা মারা যাও, অথবা নিহত হও (তাহলে তোমাদের কী করার থাকবে), তোমাদের তো একদিন আল্লাহর সমীপে একত্র করাই হবে।
১৫৯. এটা আল্লাহর এক দয়া যে আপনি এদের জন্য ছিলেন কোমলমতি মানুষ। আপনি যদি নিষ্ঠুর ও পাষাণ হৃদয়ের মানুষ হতেন তাহলে এসব লোক আপনার কাছ থেকে সরে যেত। অতএব, আপনি এদের মাফ করে দিন, এদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন এবং কাজকর্মের ব্যাপারে এদের সঙ্গে পরামর্শ করুন। অতঃপর সংকল্প একবার যখন আপনি করেই নেবেন, তখন সফলতার জন্য আল্লাহর ওপর ভরসা করুন। অবশ্যই আল্লাহতায়ালা তাঁর নিজের ওপর নির্ভরশীল মানুষকে ভালোবাসেন।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলোও আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায় ওহুদের যুদ্ধের পটভূমিতেই এসেছে। ১৫৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহর পথে শাহাদাতবরণ করা বা জীবন কাটানোর মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহর পথে যারা শাহাদাতবরণ করে বা জীবন কাটিয়ে মৃত্যুবরণ করে তাদের মর্যাদা অনেক উঁচু। আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর অবাধ্য লোকরা যেসব ধনসম্পদ সঞ্চয় করে আত্মতৃপ্তি লাভ করছে ওদের চেয়ে তাদের অর্জন অনেক উত্তম। ১৫৮ নম্বর আয়াতেও শাহাদাতবরণকারীদের জন্য সান্ব্তনার বাণী উচ্চারণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সব মানুষকেই একদিন মৃত্যুবরণ তথা আল্লাহর দরবারে হাজির হতে হবে। সুতরাং সত্য ও ন্যায়ের পথে সংগ্রাম করে জীবন দান করা অনেক গৌরবের। আর পরকালে তাদের স্থানও নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে অনেক ওপরে।
১৫৯ নম্বর আয়াতে রাসুল (সা.)-এর চরিত্র মাধুর্য বর্ণনা করে ওহুদের যুদ্ধে যারা ভুল করেছে তাদের ক্ষমা করে দেওয়ার কথা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার কথা বলেছেন। আর সেই সঙ্গে কাজকর্মের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় সহকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপদেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর রাসুল ওহির মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে যেসব সিদ্ধান্ত পান সেগুলোর ব্যাপারে সহকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শের কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু জাগতিক কাজকর্মের বেশির ভাগ বিষয়েই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যেসব সিদ্ধান্ত ইচ্ছা করলে রাসুল (সা.- একাও নিতে পারেন। তবে আল্লাহতায়ালা রাসুল (সা.)-কে পরামর্শ দিচ্ছেন সহকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে। পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের উপকারিতা অনেক।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী

No comments

Powered by Blogger.