বন্দরে নতুন প্রযুক্তি-প্রশংসনীয় উদ্যোগে আসুক সাফল্য

চট্টগ্রাম বন্দরের সংরক্ষিত এলাকায় নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ স্লোগানের সঙ্গে মিল রেখে কম্পিউটারের মাধ্যমে যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। বাণিজ্যিক কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব আমাদের কাছে অনেক। বছরে প্রায় ১৩ লাখ টিইউএস কনটেইনার আসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে।


এসব কনটেইনারের নিরাপত্তা দেওয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের জরুরি কাজ। এ জন্য এতদিন কাজ করত ৬৭২ জন নিরাপত্তারক্ষী, ১৩০ জন সেনাসদস্য, ১৭০ জন পুলিশ এবং ৫২২ জন আনসার। সঙ্গে ছিল ১২৬টি সিসিটিভি ক্যামেরা। এত কিছুর পরও চট্টগ্রাম বন্দরের সংরক্ষিত এলাকা থেকে মালপত্রভর্তি কনটেইনার গায়েব হয়ে যেত। এ ছাড়া পণ্যভর্তি কনটেইনার অনেক সময় হয়ে যেত বালিভর্তি কনটেইনার। এসব বিষয় একদিকে যেমন চট্টগ্রাম বন্দরের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নম্ন করছিল, অন্যদিকে বন্দর থেকে সরকারের রাজস্ব আয় এতে কমে যাচ্ছিল। এসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতেই ৯৬টি কম্পিউটারের মাধ্যমে তৈরি করা নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা শুরু করার ফলে বেশ কিছু সুবিধা হবে বন্দর ব্যবহারকারীদের। কনটেইনার টার্মিনাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিটিএমএস) ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কনটেইনার নামানো যাবে জাহাজ থেকে। এর ফলে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া প্রায় ২৪টি ধাপ কমে যাবে। পরিবহন খরচও কমবে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই একটি অভিযোগ রয়েছে_ এখানে পণ্য খালাস করতে অনেক সময় নেওয়া হয়। নতুন 'সিটিএমএস' পদ্ধতি চালু হলে এ অভিযোগ থেকেও বন্দর কর্তৃপক্ষ মুক্তি পাবেন। চুরি ঠেকাতে বন্দরের কর্মকর্তা, নিয়মিত ড্রাইভার, হেলপার, শিপিং এজেন্ট, সিঅ্যান্ডএফসহ বন্দর ব্যবহারকারীদের ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে। এসব উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আরও একটি ইতিবাচক দিক হলো, এই উদ্যোগে নতুন করে লোকবল নিয়োগ করতে হয়নি। বিদ্যমান জনবলকে প্রশিক্ষিত করে চালু হয়েছে এ নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী আগস্টে চূড়ান্তভাবে এ 'সিটিএমএস' পদ্ধতি চালু হবে। আমরা আশা করি, নতুন এ পদ্ধতি চট্টগ্রাম বন্দরের কাজে নতুন মাত্রা এনে দেবে।
 

No comments

Powered by Blogger.